শিক্ষাবিদ যতীন সরকার মারা গেছেন

বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনের অন্যতম পুরোধা ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক যতীন সরকার আর নেই। বুধবার (১৩ আগস্ট) বেলা ২টা ৪০ মিনিটে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানা রোগ ও পলি আর্থ্রাইটিসে ভুগছিলেন যতীন সরকার। গত জুন মাসে শারীরিক জটিলতার কারণে তাঁর অস্ত্রোপচার হয়। পরবর্তীতে ময়মনসিংহে মেয়ের বাসায় থাকাকালীন আবার অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে ঢাকার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সম্প্রতি তাঁকে ফের ময়মনসিংহে নেওয়া হয়, সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) ময়মনসিংহ জেলা সাধারণ সম্পাদক শেখ বাহার মজুমদার জানান, মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ হাসপাতাল থেকে বিকেল ৪টায় জেলার উদীচী কার্যালয়ে নেওয়া হবে, যেখানে সর্বসাধারণ শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন। পরে মরদেহ নিজ জেলা নেত্রকোনায় নিয়ে গিয়ে দাফন সম্পন্ন হবে।
১৯৩৬ সালের ১৮ আগস্ট নেত্রকোণার কেন্দুয়ার চন্দপাড়া গ্রামে জন্ম নেওয়া যতীন সরকার ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজের বাংলা বিভাগের দীর্ঘদিনের শিক্ষক ছিলেন। পাশাপাশি তিনি মননশীল সাহিত্যচর্চা, বামপন্থি রাজনীতি ও প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি দুই মেয়াদে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর কেন্দ্রীয় সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন।
অসামান্য সাহিত্যকীর্তির স্বীকৃতি হিসেবে যতীন সরকার ২০১০ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার, ২০০৭ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার, ২০০৫ সালে ‘পাকিস্তানের জন্ম-মৃত্যু দর্শন’ গ্রন্থের জন্য প্রথম আলো বর্ষসেরা গ্রন্থপুরস্কারসহ ড. এনামুল হক স্বর্ণপদক, খালেকদাদ চৌধুরী সাহিত্য পুরস্কার ও মনিরুদ্দীন ইউসুফ সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।
৪২ বছরের শিক্ষকতা জীবনের ইতি টেনে ২০০২ সালে অবসর গ্রহণের পর তিনি স্ত্রী কানন সরকারকে নিয়ে নিজ জেলা নেত্রকোনার সাতপাই এলাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
(ঢাকাটাইমস/১৩ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন