২০০০ কোটি টাকা বকেয়া, তবু ৯৩৭ কোটির রেকর্ড মুনাফা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের!

দেশের রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রতিষ্ঠার ৫৫ বছরের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৯৩৭ কোটি টাকা মুনাফা অর্জনের দাবি করেছে। তবে একই সময়ে দেশের একমাত্র জেট ফুয়েল সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান পদ্মা অয়েলের কাছে বিমানের বকেয়া পাওনা রয়েছে দুই হাজার কোটি টাকারও বেশি।
পদ্মা অয়েল বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) সহযোগী প্রতিষ্ঠান। এর সর্বশেষ জুন মাসের হিসাব অনুযায়ী, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কাছে জেট ফুয়েল বিক্রি বাবদ প্রায় ২১০০ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে তাদের। জুলাইয়ে বিমানের পক্ষ থেকে কিছু পরিশোধ করা হলেও এখনো দুই হাজার কোটি টাকার বেশি বকেয়া রয়েছে। দেনা শোধ না করেই বিমান রেকর্ড মুনাফার ঘোষণা দিয়েছে।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) এ বি এম রওশন কবীরের সই করা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সোমবার (১৮ আগস্ট) এ মুনাফার ঘোষণা দেওয়া হয়।
এ রেকর্ড মুনাফার খবরে পদ্মা অয়েল ও বিপিসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিস্ময় প্রকাশ করেছেন। যদিও তারা এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাননি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিপিসির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, “বকেয়ার বিশাল অঙ্ক পরিশোধ না করেই বিমান মুনাফার ঘোষণা দিয়েছে।”
বিমানের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ৯৩৭ কোটি টাকার অনিরীক্ষিত মুনাফা অর্জন হয়েছে, যা প্রতিষ্ঠার পর থেকে সর্বোচ্চ। এর আগে ২০২১-২২ অর্থবছরে সর্বোচ্চ ৪৪০ কোটি টাকা মুনাফা করেছিল বিমান।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বিমানের কার্যক্রমে যাত্রী পরিবহন হয়েছে ৩ দশমিক ৪ মিলিয়ন, কার্গো পরিবহন ৪৩ হাজার ৯১৮ টন এবং কেবিন ফ্যাক্টর বেড়ে হয়েছে ৮২ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এই প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য।
এছাড়া ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে বিমানের ইতিহাসে সর্বোচ্চ টিকিট বিক্রির রেকর্ড হয়েছে। বাজারে বিমানের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি, যাত্রীদের আস্থা, দ্রুত লাগেজ সরবরাহ, উন্নত ইন-ফ্লাইট সেবা এবং বিমানবন্দর প্রক্রিয়ার আধুনিকায়নকে এর পেছনের কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছে কর্তৃপক্ষ।
পাশাপাশি আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা মান কঠোরভাবে অনুসরণ করে ধারাবাহিক সেফটি রেকর্ড বজায় রাখায় বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সকে প্রশংসা করা হয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০২১-২২ অর্থবছরের সর্বোচ্চ মুনাফা ছিল ৪৪০ কোটি টাকা। এখন ২০২৪-২৫ অর্থবছরে তা দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, যাত্রীসেবা ও অপারেশনাল কার্যক্রম উন্নত থাকলেও, সরবরাহকৃত জেট ফুয়েল ও অন্যান্য দেনা সময়মতো পরিশোধ না হলে আর্থিক স্থিতিশীলতায় নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
(ঢাকাটাইমস/১৯ আগস্ট/আরজেড)

মন্তব্য করুন