মির্জাপুরে নদীতে বাঁধ দিয়ে রাত-দিন চলছে মাটি লুট

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার কোট বহুরিয়া এলাকায় নদীতে বাঁধ দিয়ে গতিপথ বন্ধ করে রাত-দিন চলছে মাটি ব্যবসা। এতে ওই এলাকা দিয়ে মাছের বিচরণ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বন্ধ রয়েছে নৌকা চলাচল। তাছাড়া লৌহজং নদীর চান্দুলিয়া সেতু ও ধলেশ্বরী নদীর সিন্দুক কুমের পাড়ের নদীর পার ও নদী থেকে ভেকু দিয়ে ব্যবসায়ীরা মাটি কাটছেন।
এলাকাবাসী জানান, গত দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে বহুরিয়া ও মীর দেওহাটাসহ আশপাশের এলাকার ভাটা মালিক ব্যক্তি ও সরকারি জমি থেকে নদীতে বাঁধ দিয়ে পশ্চিম পাড় থেকে পূর্ব পাড়ে ট্রাকে মাটি কেটে আনছেন। দিনে ও রাতে নদী পাড়ের মাটি কেটে তারা ইটভাটায় ব্যবহার করছেন।
জানা গেছে, বাঁধের নীচ দিয়ে পানি প্রবাহের জন্য পাইপ স্থাপন করা হয়েছে। নদীর উত্তরের চেয়ে দক্ষিণ দিকের পানির উচ্চতা বেশি। বাঁধটি দিয়ে বুধিরপাড়া ও মুন্দিরাপাড়া এলাকায় ছয়টি ভেকু দিয়ে মাটি কেটে ট্রাকে তোলা হচ্ছে। প্রতিটি স্থান ও আশপাশে ৩৫-৪০ ফুট গভীর করে মাটি কাটা হচ্ছে।
ভেকুচালক জাহাঙ্গীর জানান, প্রায় ১৫ দিন ধরে তিনি এখানে কাজ করছেন। দিনে আট ঘণ্টা হিসেবে প্রতি ঘণ্টায় ৫-৬ ট্রাক মাটিবোঝাই করে দেন।
ট্রাকচালক জসিম জানান, তিনি মেসার্স সহিদ ব্রিকসে মাটি নিচ্ছেন। ভাটার মালিকের নিজস্ব ট্রাক দিয়ে তারই কেনা মাটি কেটে নিচ্ছেন।মুঠোফোনে সহিদ ব্রিকসের মালিক মো. সহিদুর রহমান বলেন, তিনি ২০ দিন ধরে একটি এক্সকেভেটর দিয়ে মাটি কাটছেন। মীর দেওহাটা গ্রামের জব্বর, মনির, আকবর, জুয়েল, বাবু ও ইস্রাফিল মিলে অন্য এক্সকেভেটরগুলো চালান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সবাই আমার কথা বলে বাঁচতে চায়।
এদিকে চান্দুলিয়া এলাকায় দেখা যায়, ধলেশ্বরী নদীর শাখা নদীর সিন্দুক কুমের পাড় থেকে নদী ও নদীর পার থেকে অবাধে মাটি কাটা হচ্ছে। দেখে বোঝার উপায় নেই যে সেখানে নদী ছিল।
এক্সকেভেটর চালক খোকন মিয়া জানান, তিনি মীর দেওহাটা গ্রামের শাকিল ও সরোয়ার, ফরিদ বহুরিয়া গ্রামের হকে ও জলিল মাটি কেটে ট্রাকে তুলে দিচ্ছেন। পাঁচদিন ধরে তিনি মাটি কাটছেন।
মুঠোফোনে সরোয়ার হোসেন বলেন, সবার সাথে লিয়াজো করেই মাটি কাটা হচ্ছে।
স্থানীয় কয়েকজন জানান, শাকিল ও সরোয়ার ছাড়াও বহুরিয়া গ্রামের আব্দুল হক, আব্দুল জলিল ও দুলাল মিয়াও একই স্থান থেকে মাটি কেটে অন্যত্র বিক্রি করছেন। তাছাড়া চান্দুলিয়া সেতুর পূর্বপাশে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সদস্য লিপু সিকদারও লৌহজং নদের পার থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এ.বি.এম আরিফুল ইসলাম বলেন, এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে সহকারি কমিশনার (ভূমি) কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।(ঢাকা টাইমস/০২মে/এসএ)

মন্তব্য করুন