প্রধানমন্ত্রীর সই জাল করা হাছিনাকে রিমান্ডে চায় পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭, ১১:০৪
অ- অ+

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সই জাল করে ধরা পড়া নারী হাছিনা বেগমের বিরুদ্ধে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা হয়েছে। এই মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে রিমান্ডে নিতে চায় পুলিশ। ওই নারী প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্যাডে প্রধানমন্ত্রীর সই জাল করে এক মেয়েকে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির জন্য চাপ দিচ্ছিলেন। তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন গণভবনের বাবুর্চির মিথ্যা পরিচয়ও দিয়েছিলেন। তিনি একটি জাল পরিচয়পত্রও বানিয়েছিলেন।

রবিবার শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ওই মেয়েকে ভর্তির চাপ দিতে গেলে হাছিনাকে আটক করে পুলিশে দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। আর রাত সাড়ে আটটার দিকে শেরেবাংলা নগর থানায় মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার শেখ রেজাউল করিম।

শেরে বাংলা নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জি জি গনেশ গোপাল বিশ্বাস ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আটক নারীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হবে।’

এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, যে ছাত্রীকে ভর্তির জন্য সুপারিশ করা হয়েছে তার সঙ্গে হাছিনা বেগমের কোনো সম্পর্ক নাই। তার বাড়ি শেরপুরের কামারচর সদরে।’

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসক জানায়, ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ফাহিম জাহান দৃষ্টি (রোল ৩৯০৪৭) নামের এক ছাত্রীকে বিশেষ কোটায় ভর্তির জন্য চাপ দিচ্ছিলেন হাছিনা। গত ৭ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রটোকল অফিসার মনজিলা ফারুকের সই জাল করে চিঠি দেয়া হয়। এতে ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া, সংসদ সদস্য শেখ সেলিম ছাড়াও পরিকল্পনা বিভাগের সচিব ভূইয়া শফিকুল ইসলামের সইও নকল করা হয়।

১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মহাপরিচালকে পক্ষে প্রটোকল অফিসার মনজিলা ফারুকের সই নকল করে আরেকটি চিঠি আসে বিশ্ববিদ্যালয়ে। এতেও ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া এবং শেখ ফজলুল করিম সেলিমের সই নকল করা ছিল।

গত ৯ ডিসেম্বর শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার পর ১২ ডিসেম্বর ফল ঘোষণা করা হয়। দৃষ্টি ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিলেও নির্বাচিত হয়নি। ভর্তি পরীক্ষার পরদিন থেকেই দৃষ্টিকে ভর্তির জন্য ওই নারী উপাচার্যের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। উপাচার্যের সঙ্গে বেশ কয়েকদিন দেখা করার পাশাপাশি ফোনেও যোগাযোগ করেন।

এরপর গত ২৩ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্যাডের হুবহু নকল করে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরেকটি চিঠি পাঠানো হয় এবং এই চিঠির নিচে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নকল সই ছিল।

ওই চিঠিতে উপাচার্যের নামের বানান ছাড়াও একাধিক বানান ভুল ছিল। তা ছাড়া চিঠির ভাষাও ছিল দুর্বল। এতে সন্দেহ হলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যোগাযোগ করে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সঙ্গে। এরপর রবিবার ওই নারী ফের উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করতে ক্যাম্পাসে এলে তাকে আটক করে পুলিশে তুলে দেওয়া হয়।

গত ডিসেম্বরেও চট্টগ্রামে প্রধানমন্ত্রীর সই নকল করার ঘটনায় সাইফুল আলম চৌধুরী টিটো নামে একজন আটক হয়েছিলেন।

টিটো নিজেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক দাবি করে একটি পরিচয়পত্র তৈরি করেছিলে। এতে দলীয় সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপের সইও আছে। পরে জানা যায় সইগুলো নকল। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কোনো নেতার এই ধরনের পরিচয়পত্রই নেই।

গত ১৮ ডিসেম্বর ‘প্রধানমন্ত্রীর সই নকল করে প্রতারণার নতুন জাল’ শিরোনামে ঢাকাটাইমসে সংবাদ প্রকাশের কিছুক্ষণের মধ্যে টিটোকে আটক করে চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ।

(ঢাকাটাইমস/১৩ফেব্রুয়ারি/জেডএ/ডব্লিউবি)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বৈষম্যবিরোধী ও এনসিপির আন্দোলনের মুখে পটিয়া থানার ওসি প্রত্যাহার
বাংলামোটরে এনসিপির জুলাই চিত্র প্রদর্শনীর গাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ
তাড়াশে সম্পত্তি লিখে নিয়ে বাবা-মাকে বাড়িছাড়ার অভিযোগ
সাবেক এমপি নাঈমুর রহমান দুর্জয় গ্রেপ্তার
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা