বইঃ আমার কথা

বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থাঃ একটি পর্যালোচনা

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ১২ জানুয়ারি ২০১৭, ১৮:১১
অ- অ+

সৈয়দ আবুল হোসেন বেশ কয়েকটি বই লিখেছেন। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে আমার কথা। এই বইয়ে তিনি নিজের চিন্তা, কর্মকাণ্ড, মূল্যবোধ, নানা অভিজ্ঞতা ও পরিকল্পনা সম্পর্কে লিখেছেন। এটি পড়লে তাকে যারা পুরোপুরি চিনেন না তাদের সুবিধা হবে। বইটি ঢাকাটাইমস২৪ডটকম ধারাবাহিকভাবে ছাপছে। বইটির আজকের পর্বে থাকছে - '​বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা : একটি পর্যালোচনা’

আমি সব সময় বলি, শিক্ষা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। মানুষ কেবল শিক্ষার জন্যই সর্বশ্রেষ্ঠ জীব। এর কোনো বিকল্প নেই। একটি জাতির আর কিছু লাগে না, যদি যথোপযুক্ত শিক্ষা থাকে। তবে আমাদের শিক্ষার ইতিহাস এখন বিশ্বমানের ও বিস্তৃত হলেও এর সূচনা ছিল অত্যন্ত করুণ। বস্তুত দেশ স্বাধীনতা অর্জনের পর সরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের ঐকান্তিক চেষ্টায় প্রসারিত হয় বাংলাদেশের আধুনিক শিক্ষার পরিধি। প্রাচীনকাল, এমনকি মধ্যযুগেও ভারতীয় উপমহাদেশে শিক্ষাব্যবস্থা প্রধানত আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক মতবাদে প্রভাবিত ছিল। এ শিক্ষাব্যবস্থা ছিল সাধারণ জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন। উইলিয়াম অ্যাডাম্স্ নামের জনৈক ব্রিটিশ বর্তমানে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা হিসাবে পরিচিত শিক্ষাব্যবস্থার গোড়াপত্তন ও বাস্তবায়ন করেন এ অঙ্গনে। তিনি তাঁর শিক্ষা প্রতিবেদনে যে-বিষয়গুলোর ওপর বিশেষ জোর দিয়েছিলেন সেগুলো হচ্ছে :

১. জেলাভিত্তিক শিক্ষা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ ;

২. নিজ মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তকের প্রচলন ;

৩. শিক্ষা পরিকল্পনা বাস্তবায়নে প্রতি জেলায় ইন্সপেক্টর নিয়োগ ;

৪. শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের জন্য সাধারণ বিদ্যালয় স্থাপন ;

৫. জমিদাতাকে শিক্ষকতা পেশায় নিয়োগদান করে উৎসাহিত করা ;

৬. প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে বৃত্তি পরীক্ষার প্রচলন।

১৮৫৪ খ্রিস্টাব্দের উডের ড্যাসপ্যাচ তত্ত্ব ছিল ব্রিটিশ শাসকের বাংলার শিক্ষাব্যবস্থার আধুনিকীকরণ করার প্রক্রিয়ার একটি চমৎকার প্রয়াস। এই তত্ত্বের সুপারিশ অনুযায়ী ১৮৫৫-৫৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে ‘পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’ বিভাগ নাম দিয়ে একটি নতুন বিভাগ চালু করা হয়। প্রস্তাব অনুযায়ী, বিভাগে ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়। লর্ড কার্জন প্রাথমিক শিক্ষা প্রসারে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ১৯১০ খ্রিস্টাব্দে গোপাল কৃষ্ণ গোখলে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য আইন পরিষদে একটি বিল উত্থাপন করেন। ১৯২৯ খ্রিস্টাব্দে বিলটি খারিজ হয়ে যায়, তৎপরিবর্তে পৌর এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার বিল পাস হয়। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে ইন্ডিয়ান-পুস্তক আইনে সীমিত আকারে স্বায়ত্তশাসনের বিধান রাখা হয়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল (পল্লি এলাকা) প্রাথমিক শিক্ষা আইন প্রণীত হয়। এই আইনের অধীনে শিক্ষা সম্প্রসারণ পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনা এবং নিয়ন্ত্রণের জন্য, সর্বোপরি, বিনামূল্যে এবং সর্বজনীন বাধ্যতামূলক শিক্ষার লক্ষ্য-পূরণে জেলা স্কুল বোর্ড গঠন করা হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ১৯৪৪ খ্রিস্টাব্দে শিক্ষা উন্নয়নের জন্য সার্জেন্ট কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এটাই প্রথম রিপোর্ট যাতে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দে ব্রিটিশ শাসনের অবসানের পর সার্জেন্ট কমিশনের রিপোর্ট বাস্তবায়ন বন্ধ হয়ে যায়।

ভারত বিভক্তির পর, সর্বজনীন বাধ্যতামূলক এবং বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষার জন্য একটি রেজুলেশন জাতীয় শিক্ষা সম্মেলনে (১৯৪৭) উপস্থাপন করা হয়। ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে সরকার জেলা স্কুল বোর্ড বিলুপ্ত করে প্রাথমিক শিক্ষার সার্বিক নিয়ন্ত্রণ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের ওপর ন্যস্ত করে। সাবেক জেলা স্কুল ইন্সপেক্টরগণ জেলা প্রশাসকদের অধীন প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দে বেঙ্গল (পল্লি এলাকার) প্রাথমিক শিক্ষা আইন সংশোধন করা হয়। প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার জন্য সরকার পরীক্ষামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে। নির্বাচিত ইউনিয়নের ৫,০০০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে নির্বাচন করা হয় “বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা” পরিচালনা করার জন্য। বাকিগুলোতে প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়নি। ১৯৫১ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা ৪ বছর মেয়াদি কোর্স ছিল। ১৯৫২ খ্রিস্টাব্দে প্রাথমিক শিক্ষাকে ৫ বছর মেয়াদি কোর্স করা হয়।

‘বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা’ পরিচালনাকারী ও ‘অবাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা’ পরিচালনাকারী বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে নানা কারণে অসন্তোষ ও বিভাজন সৃষ্টি হয়। এ অসন্তোষ ও বিভাজন নিরসনে সরকার ১৯৫৭ খ্রিস্টাব্দে ৫,০০০ বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা পরিচালনাকারী বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ‘মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়’ নাম দেয়। বাকিগুলো ‘অমডেল’ প্রাথমিক বিদ্যালয় নামে পরিচালিত হয়। মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকগণ অমডেল প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন ও তত্ত্বাবধান করতে পারতেন। ১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দে প্রথম শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়। ওই কমিশন, পরবর্তী ১৫ বছরের মধ্যে প্রাথমিক শিক্ষাকে ৮ বছর মেয়াদি কোর্সে উন্নীত করার সুপারিশ করে এবং বয়সের ভিত্তিতে উদার প্রমোশন পদ্ধতি প্রবর্তনেরও সুপারিশ করে। ১৯৬৫ খ্রিস্টাব্দে সরকার সম্মিলিতভাবে ‘মডেল’ ও ‘অমডেল’ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ‘ফ্রি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ হিসাবে ঘোষণা করে।

১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে মহান স্বাধীনতা-যুদ্ধে জয়ী হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ আমল শুরু হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বাধীন সংবিধানে প্রাথমিক শিক্ষা রাষ্ট্রের দায়িত্ব হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বিধানগুলো হলো : যে সকল উদ্দেশে রাষ্ট্র একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে-

১. একটি অভিন্ন, জনসম্পৃক্ত ও সর্বজনীন শিক্ষাব্যবস্থা এবং সব ছেলেমেয়ের জন্য বিনামূল্যে ও বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার প্রসার যা আইন দ্বারা নির্ণয় করা যেতে পারে ;

২. শিক্ষাকে সমাজের চাহিদার সঙ্গে যুক্ত করা এবং সমাজের ওইসব চাহিদা পূরণে সক্ষম প্রশিক্ষিত ও প্রণোদিত নাগরিক তৈরি করা এবং

৩. একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নিরক্ষরতা দূরীকরণ কৌশল একটি কার্যকর আইন দ্বারা নির্ধারণ করা যেতে পারে।

সরকার জাতীয় দায়িত্ব হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষাকে স্বীকার করে এবং শিক্ষা মানুষের মৌলিক অধিকার যা বাংলাদেশে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। স্বাধীনতার পর প্রতিবেশী দেশগুলোর শিক্ষাপদ্ধতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি স্বাধীন জাতি হিসাবে বাংলাদেশে আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। এজন্য শিক্ষাব্যবস্থার উদ্দেশ্য, কৌশল এবং কর্ম-পরিকল্পনা প্রণয়নের লক্ষ্যে সুপারিশ করার জন্য ১৯৭২ খ্রিস্টাব্দে কুদরত-ই-খুদা শিক্ষা কমিশন গঠন করা হয়।

১৯৭১ খ্রিস্টাব্দে বাংলাদেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ছিল ৬ হাজারের কম। এখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ১,০৪,০১৭টি। স্নাতক ডিগ্রিধারীর সংখ্যা বেড়েছে ৭০ গুণ। তখন দেশে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ও ছিল না। কিন্তু এখন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ছাড়িয়ে গিয়েছে। তখন গ্রামের পর গ্রাম হাঁটলেও মাস্টার্স ডিগ্রিধারীর খোঁজ পাওয়া যেত না, এখন প্রায় প্রতিঘরে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী রয়েছে।১১৫ আজ বাংলাদেশের ছাত্রছাত্রীরা সারাবিশ্বে আপন কৃতিত্বে ছড়িয়ে আছে। সর্বত্র তারা বিশ্বমানের ফলাফল করছে। আবার অনেকে বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নম্বর পাওয়ার গৌরবও অর্জন করছে। বাংলাদেশের অনেক ছেলেমেয়েই এখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে লেখাপড়া করছে। তারা নিজ দেশের সঙ্গে সঙ্গে ওইসব দেশের উন্নয়নেও অবদান রাখছে। এতে করে বাংলাদেশের মেধাবীগণ বিরল প্রশংসা ও ভূয়সী সম্মানে ভূষিত হচ্ছে।

আজ আমরা যেখানে দাঁড়িয়ে আছি- তা শুধু গৌরবোজ্জ্বল নয়, বিস্ময়কর উত্থানের অবিরাম ইতিহাস। এটি একদিনে অর্জিত হয়নি এবং তা সম্ভবও নয়। এখানে আসার জন্য আমাদের ৪৫ বছর হাঁটতে হয়েছে, পরিশ্রম করতে হয়েছে অবিরল, ঐকান্তিক। অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এটা আমাদের গন্তব্যস্থল নয়, গন্তব্যস্থলের লক্ষ্যে ধাবিত হওয়ার সূচনা মাত্র। আমাদের আরও লক্ষ্য অর্জনে অনেক দূর যেতে হবে। তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, আমরা আজ যে পথে হাঁটছি তা আমাদের নেতৃত্ব ও দেশের জনগণের দূরদৃষ্টির কারণে সম্ভব হয়েছে। তাঁরা এই দেশকে মুক্ত করে গেছেন, একটি জাতিকে পূর্ণ অবয়ব দিয়েছেন আপন মহিমার নিপুণ সৌকর্যে। তাঁরা দেখিয়ে গেছেন পরাধীনতার গ্লানি কেমন করে ভাঙতে হয়, কেমন করে একটি পরাধীন জাতি নিজের চেষ্টায় নগণ্য উপাদান নিয়েও বিজয়ের অসামান্য গৌরবের বিশালতায় মিশে যেতে পারে। আমাদের অনেক বাধা-বিঘ্ন ছিল; জাতি হিসাবে আমাদের স্বকীয় কোনো অস্তিত্ব ছিল না, সেটাও কাটানো সম্ভব হয়েছে সাহসী জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা ও সাহসী নেতৃত্বের জন্য। জনগণের বিরামহীন পরিশ্রমের কারণে দেশের মানুষ সুখী ও সমৃদ্ধিশালী হতে শুরু করে। তাঁদের ভূমিকার পাশাপাশি আমাদের নেতৃবৃন্দের অবদানও কম নয়। নেতৃবৃন্দের দূরদর্শী চিন্তা-চেতনা দেশের উন্নয়নে অভূতপূর্ব ভূমিকা রাখছে। এই কারণে বলা যায়, জাতি গঠনে আমাদের জনগণ ও নেতৃবৃন্দ সফল।

প্রাথমিক শিক্ষা বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থা প্রধানত চারটি ধারায় বিভক্ত। সেগুলো হচ্ছে : সাধারণ শিক্ষা, ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষা, মাদ্রাসা শিক্ষা ও ক্যাডেট শিক্ষা। সাধারণ শিক্ষার অন্তর্ভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নিবন্ধিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, অনিবন্ধিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কমিউনিটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাথমিক শাখা প্রভৃতি। ইংরেজি মাধ্যম শিক্ষার প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- কিন্ডারগার্টেন ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুল তথা ব্রিটিশ কারিকুলাম, এনসিটিবি কারিকুলাম ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। মাদ্রাসা শিক্ষার প্রতিষ্ঠানসমূহ হচ্ছে- আলিয়া মাদ্রাসা ও কওমি মাদ্রাসা।১১৬

একটি শিশুকে তার অভিভাবক পাঠদানের জন্য কোন ধারায় নিয়ে যাবেনÑ তা সবসময় ঐ অভিভাবকের আর্থিক অবস্থার ওপর নির্ভর করে। অপেক্ষাকৃত বেশি বেতনের স্কুলগুলোতে ভালো মানের শিক্ষা কিনতে পাওয়া যায়। পিতা যদি সামর্থ্যবান না-হন সন্তানের জন্য অল্প-বেতনের স্কুল থেকে সস্তায় নিম্নমানের শিক্ষা ক্রয় করতে বাধ্য হন। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ১০ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকা’ গ্রামের তালিকা চূড়ান্ত করে। এতে দেখা যায়, দেশের ১৬ হাজার ১৪২টি গ্রামে কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয় নেই।১১৭

প্রাথমিক স্তরে এখন মোট শিক্ষার্থী ১ কোটি ৬৩ লাখ ১২ হাজার ৭ জন। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল ৩৭ লাখের বেশি শিশু। ২০১২ খ্রিস্টাব্দে পঞ্চম শ্রেণির সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে ২৬ লাখ ৩০ হাজার শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেছিল। এই হিসাবে পঞ্চম শ্রেণিতে আসা পর্যন্ত ঝরে পড়েছে প্রায় সাড়ে ১১ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী। সরকারি হিসাবে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই প্রায় ৪০ শতাংশ শিশু বিদ্যালয় থেকে ঝরে পড়ছে।১১৮ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর পরিচালিত ২০১১ খ্রিস্টাব্দের জরিপ অনুযায়ী, ২০০৬ ও ২০০৭ খ্রিস্টাব্দে প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শিশুদের ঝরে পড়ার হার ছিল ৫০.৫ শতাংশ, ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ৪৯.৩ এবং ২০০৯ খ্রিস্টাব্দে ৪৫.১ শতাংশ। ২০১০ খ্রিস্টাব্দে পরিচালিত গবেষণায় দেখা গেছে, ঝরে পড়ার হার ৩৯.৮ শতাংশ। ঢাকাসহ শহরগুলোর বস্তিতে নগরবাসীর অন্তত ৪০% দরিদ্র মানুষ বাস করে। তাদের অধিকাংশ শিশু ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমে নিয়োজিত। ৭ থেকে ১৪ বছরের ১ কোটি ৫০ লক্ষ শিশু স্কুলে না গিয়ে পরিবারকে সাহায্য করতে শ্রমে নিয়োজিত।১১৯

মাধ্যমিক শিক্ষা নতুন শিক্ষানীতিতে মাধ্যমিক শিক্ষাকে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে। দেশে মাধ্যমিক স্তরে ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ও একটি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডসহ মোট ১০টি শিক্ষা বোর্ড রয়েছে। শিক্ষা বোর্ডগুলোর বাইরেও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে পরিচালিত হয় এসএসসি এবং এইচএসসি প্রোগ্রাম। উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডগুলোর সঙ্গে অনুষ্ঠিত হয় না কিংবা ফলও প্রকাশিত হয় না।

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশ নেয় ২১ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৭ জন। এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয় ১৪ লাখ ২০ হাজার ৫৭ জন শিক্ষার্থী। অর্থাৎ ৭ লাখ ৬৫ হাজার ৬৯০ জন শিক্ষার্থী মাধ্যমিক শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করার আগেই ঝরে গেছে। এইচএসসি পরীক্ষার্থী ছিল ৯ লাখ ১৭ হাজার ৬৭৩ জন। অর্থাৎ ৫ লাখ ২ হাজার ৩৮৪ জন শিক্ষার্থী শুধু দশম শ্রেণি ও দ্বাদশ শ্রেণি এই দুই বছরের মধ্যে ঝরে গেছে। কাজেই শুধু মাধ্যমিক স্তরে ঝরে পড়া মোট শিক্ষার্থীর পরিমাণ ১২ লাখ ৬৮ হাজার ৭৪ জন। বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে ঝরে পড়ার মূল কারণটি আর্থিক।১২০

বিজ্ঞান শিক্ষায় শিক্ষার্থীদের আগ্রহ নানা কারণে কমে যাচ্ছে। গত আট বছরে বিজ্ঞান শিক্ষার্থী কমার হার ৩১.৩৩ শতাংশ। ১৯৮৮ খ্রিস্টাব্দে এসএসসি পর্যায়ে মোট শিক্ষার্থীর ৪১.৩৫ শতাংশ ছিল বিজ্ঞানের ছাত্রছাত্রী, ১৯৯৫ খ্রিস্টাব্দে এ হার দাঁড়িয়েছিল ২৫.৪০ শতাংশ এবং ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ২৩.৭৬ শতাংশ। বিজ্ঞান পড়ছে এমন শতকরা ৫৮ জন শিক্ষার্থী মনে করে, বিজ্ঞান বিষয়ে পড়তে খরচ বেশি। শতকরা ৬৫ জন মনে করে বিজ্ঞানে বিষয়ভিত্তিক প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই, ৬৯ জন মনে করে বিজ্ঞানে পড়লে প্রাইভেট পড়তে হয় এবং ৫৭ জন প্রাইভেট পড়ে, ৬৫ জন মনে করে বিজ্ঞানের জন্য আলাদা গবেষণাগার নেই, ৫৮ জন মনে করে ব্যবহারিক ক্লাসে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নেই, ৯৪ জন বলেছে কোনো বিজ্ঞান মেলা হয় না।১২১

মাদ্রাসা শিক্ষা দেশে মাদ্রাসা শিক্ষার প্রধান দুটো ধারা রয়েছে। তা হচ্ছে : আলিয়া ও কওমি। এছাড়া রয়েছে নূরানী মাদ্রাসা, ফোরকানিয়া মাদ্রাসা ও হাফিজিয়া মাদ্রাসা ইত্যাদি। মাদ্রাসা বোর্ডের ২০১২ খ্রিস্টাব্দের দাখিল পরীক্ষায় সারা দেশ থেকে ২ লাখ ৭৩ হাজার ৬৫ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।১২২

কওমি মাদ্রাসাগুলো স্বীকৃত নয়। যদিও বিশ্বব্যাংকের এক গবেষণায় দেখা গেছে দেশের মাধ্যমিক স্তরে পড়ুয়া শিক্ষার্থীর অন্তত ২.২ শতাংশ কওমি মাদ্রাসায় অধ্যয়ন করে। এই ধারার মাদ্রাসাগুলো বিভিন্ন কওমি বোর্ড দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এসব মাদ্রাসাগুলোর পাঠ্যক্রমে একটির সঙ্গে আরেকটির বিস্তর পার্থক্য রয়েছে। ক্ষেত্রবিশেষে অনেকগুলো মাদ্রাসায় বাংলা, বিজ্ঞান, অঙ্ক, ইংরেজি ইত্যাদি পড়ানো হয় না। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে দাখিল ও আলিম স্তরকে যথাক্রমে এসএসসি ও এইচএসসির সমমান দেওয়া হয়। তারপর ২০০৬ খ্রিস্টাব্দে ফাজিল ও কামিল স্তরকে যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সমমান প্রদান করা হয়।১২৩

কারিগরি শিক্ষা কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের হিসাব মতে, দেশে এখন সরকারি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট আছে ৪৯টি, ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট আছে ৬৪টি। কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, বস্ত্র প্রকৌশল ও কৃষি ইনস্টিটিউটসহ মোট ২৫১টি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এ বোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় এ বছর মোট ৯১ হাজার ১৭০ জন পরীক্ষা দিয়েছে। বাংলাদেশে সবচেয়ে উপেক্ষিত কারিগরি শিক্ষা। এ শিক্ষায় শিক্ষিতের হার মাত্র ৩ শতাংশ। অথচ উন্নত দেশগুলোতে কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিতের হার ৪০ থেকে ৬০ শতাংশ।১২৪ কারিগরি শিক্ষায় অন্যতম সমস্যা হচ্ছে তীব্র শিক্ষক সংকট এবং নিম্নমানের শিক্ষাব্যবস্থা। কারিগরি শিক্ষা অধিদফতরের সূত্রমতে, স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে বর্তমানে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতেই ৪৬ শতাংশ শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। অন্যদিকে ভোকেশনাল ইনস্টিটিউটগুলোতে শিক্ষকদের শূন্যপদ ৬৪ শতাংশ। লোকবল সংকটও চরম। তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর পদেও ৫৬ শতাংশ খালি রয়েছে।১২৫ বিজ্ঞানশিক্ষার সমান্তরালভাবে কারিগরি শিক্ষার বিস্তার ছাড়া আধুনিক বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় আমরা টিকে থাকতে পারব না। কিন্তু এই শিক্ষা নিয়ে এক ধরনের অবহেলা দৃশ্যমান। মেধাবীদের আকৃষ্ট করার জন্য কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। অভিভাবক মহলে বরং এক ধরনের নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি বিদ্যমান।

উচ্চশিক্ষা বাংলাদেশে বর্তমানে ৩০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আসনসংখ্যা প্রায় ৩৫ হাজার। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন বিভিন্ন বিষয়ে আসন সর্বমোট ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৮৫৪টি। ইউজিসির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী ৫১টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট আসনসংখ্যা ১ লাখ ১৪ হাজার ৫১২টি।১২৬ দেশের সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ ও মাদ্রাসা সব মিলিয়ে উচ্চশিক্ষায় আসনসংখ্যা ৫ লাখের কিছু বেশি।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের ২০০৯ খ্রিস্টাব্দের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মূল কাজ হলো- শিক্ষা, গবেষণা ও নতুন জ্ঞান সৃষ্টি করা এবং মানবজাতির কল্যাণে তার বিস্তার ঘটানো। কিন্তু সে কাজ এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেকাংশে ব্যর্থ হচ্ছে। এর কারণগুলোর মধ্যে- গবেষণা কার্যক্রমের স্বল্পতা, ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ-প্রক্রিয়া, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর অসম অনুপাত, শিক্ষকদের কম মনোযোগ, গবেষণা ও শিক্ষা আনুষঙ্গিক খাতে অল্প বরাদ্দ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।১২৭

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার প্রসারে ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অভাবে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে ৪৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে যাত্রা শুরু করেছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজ রয়েছে ২ হাজার ২১৬টি। প্রথম বর্ষে ভর্তি হতে পারে প্রায় ৩ লাখ ৭০ হাজার শিক্ষার্থী। একসঙ্গে প্রায় ১২ লাখ শিক্ষার্থী এ বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত। এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের উচ্চশিক্ষার শতকরা ৮০ ভাগ দায়িত্ব পালন করে থাকে। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশন জট একটি গুরুতর সমস্যা। এখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাস করতে একজন শিক্ষার্থীর জীবনের মূল্যবান ৭/৮টি বছর চলে যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলোর মধ্যে সরকারি কলেজ রয়েছে মাত্র ২৫৩টি। বাকি কলেজগুলো বেসরকারি অধিভুক্ত কলেজ।১২৮

প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার চাহিদা আর শিক্ষার্থীর অনুপাতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা কম। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের এ যুক্তির ভিত্তিতে ১৯৯২ খ্রিস্টাব্দে সরকার জারি করেছিল প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় আইন। উচ্চশিক্ষার চাহিদা ও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকটের বিষয়টি অত্যন্ত সঠিক। কিন্তু এর সমাধান কোনোভাবেই প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির মধ্য দিয়ে সম্ভব নয়, সেটি এখন প্রমাণিত সত্য। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনেরও এখন সে বোধোদয় ঘটেছে বলে মনে হয়। সম্প্রতি উচ্চশিক্ষায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ইউজিসি বার্ষিক রিপোর্টে যা উল্লেখ করেছে তা সুখকর নয়।

শিক্ষা-বাজেট ২০০৮-০৯ অর্থবছরে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য মোট বরাদ্দ ছিল ৮৫৯ কোটি টাকা। এর মধ্যে শিক্ষা-আনুষঙ্গিক খাতে ব্যয় ধরা হয় মাত্র ১১০ কোটি টাকা। আর প্রকৃত ব্যয় হয়েছে তার চেয়েও কম, ৯৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য যে বরাদ্দ দেওয়া হয়, তার বেশিরভাগ ব্যয় হয় শিক্ষক ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা খাতে। ওই অর্থবছরের মোট বরাদ্দের ৭২ ভাগ ব্যয় হয়েছিল এ খাতে। আর শিক্ষা-আনুষঙ্গিক খাতে ব্যয় করা হয়েছে মাত্র ১১ ভাগ। তার ওপর ২০০৭-০৮ অর্থবছরে শিক্ষার সঙ্গে প্রযুক্তি ও ২০০৮-০৯ অর্থবছরে তার সঙ্গে স্বাস্থ্যখাতকে যোগ করা হয়। এতে প্রকৃত অর্থে শিক্ষা-বাজেট হয় আরও সংকুচিত ও সীমিত।১২৯

১৯৭২ খ্রিস্টাব্দের জাতীয় বাজেটের ২১ শতাংশ শিক্ষাখাতে বরাদ্দ করা হয়েছিল। পর্যায়ক্রমে তা কমে ২০১২-১৩ অর্থবছরে দাঁড়িয়েছে ১২ শতাংশে। ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে দারিদ্র বিমোচন কৌশলপত্রে শিক্ষাখাতে জাতীয় আয়ের ৫ শতাংশ বরাদ্দের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ কৌশলপত্রে ২০১০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে জাতীয় বাজেটে শিক্ষাখাতে বরাদ্দ ২৫ শতাংশে উন্নীত করার কথা বলা হয়েছিল।১৩০ অপরদিকে ইউনেস্কোর প্রস্তাব অনুযায়ী শিক্ষাখাতে জাতীয় আয়ের ৮ শতাংশ অথবা বাজেটের ২৫ শতাংশ বরাদ্দ থাকা উচিত।

অর্থনীতিবিদদের মতে, শিক্ষাখাতে বিনিয়োগ সবচেয়ে লাভজনক এবং নিরাপদ রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ। অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ, ডেভিড রিকার্ডো এবং মার্শালের মতে, শিক্ষা এমন একটি খাত যার কাজ হলো দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টি করে পুঁজির সঞ্চালন ঘটানো। এ বিনিয়োগের মাধ্যমে একটি জাতিকে অতিসহজে আধুনিকতার সব উপাদান এবং উন্নয়নের সব কৌশলে বিভূষিত করা যায়। শিক্ষার অর্থনীতি নিয়ে মৌলিক গবেষণায় অর্থনীতিবিদ আর্থার শুল্জ্ ও রবার্ট সলো দেখিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষায় বিনিয়োগ করলে সম্পদের সুফল ফেরত আসে ৩৫ শতাংশ, মাধ্যমিক শিক্ষায় ২০ শতাংশ এবং উচ্চশিক্ষায় ১১ শতাংশ।১৩১

শিক্ষার সঙ্গে মানুষের অর্থনীতি, রাজনীতিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। শিক্ষার মধ্য দিয়ে মানুষ নিজেকে আবিষ্কার করতে শেখে। তার শ্রেণিচেতনার বিকাশ সাধিত হয়। ফলে, সে তার অবস্থানকেও সচেতনভাবে পরিবর্তন করতে চায়। সে প্রভাবিত করে বাকিদের। যেটি জন্ম দেয় একটি উন্নত রাজনীতিক সংস্কৃতির।

আগামীকাল কাল থাকছে - “আমি, পদ্মা সেতু ও বিশ্বব্যাংক আরও পড়ুন -সুস্থ মানুষ ও সুস্থ নেতা, একটি শিশুর স্বপ্ন, '​মন্ত্রিসভার রদবদল’ পর্যটন ও ভ্রমন, সময়ের এক ফোঁড়, অসময়ের দশ, জাতিগত ঐক্য : অপরিমেয় শক্তির আধার, প্রেরণা ও উৎসাহঃ কর্মক্ষমতা বাড়ায়, ‘​​কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাছে প্রত্যাশা’ বৈশ্বিক সহায়তা, বাংলাদেশের সফলতা, ​প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনের গুরুত্ব,সরকারি কাজের পর্যবেক্ষণ, ব্যবসায়ীদের বিশ্বসমাবেশ, ‘‘অসম্ভব’: একটি ভৌতিক শব্দ’ 'বোয়াও ফোরাম ফর এশিয়া', ‘ক্যারিয়ার গঠনে প্রতিযোগিতা’ ঝুঁকি বনাম সাফল্য, ভিশন-২০২১, ‘সৃজনশীলতা’ ‘বিনিয়োগ’, ‘বাংলার বসন্ত’, ‘সময়, শ্রম ও অধ্যবসায়’ ‘আমার আদর্শ আমার নায়ক’ , ‘ধৈর্য পরীক্ষা’, ‘খেলাধুলা ও বাংলাদেশ’ ‘অধ্যয়ন, লেখালেখি ও নেতৃত্ব’ ‘নারীর ক্ষমতায়ন ও বাংলাদেশ’, ‘সাফল্যের স্বর্ণদ্বার’ , ‘ঐক্যবদ্ধ শক্তি সাফল্যের মেরুদণ্ড’ ‘পদ্মা সেতু’, `বিজয়চিহ্ন 'V' প্রকাশে ভিন্নতা', ‘উন্নয়ন ও অগ্রাধিকার’ , ​‘ইতিবাচক ভাবনা সাফল্যের চাবিকাঠি’ , ‘ভবিষ্যতের সরকার কেমন হবে’ ‘মাতৃভাষার প্রতি মমতা’, ‘সুখ ও শান্তি : আমাদের করণীয়’ , ‘নেতৃত্বের শক্তি’, ‘আদর্শ জীবন গঠনে মূল্যবোধ’, ‘আমার প্রাত্যহিক জীবন’​, 'আমার অনুভব'

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নওগাঁয় সাবেক মন্ত্রী সাধনের বাড়িতে ভাঙচুর
সিরাজগঞ্জে ৮১ কেজি গাঁজাসহ মাদক কারবারি গ্রেপ্তার
কুবি ছাত্রলীগ নেতা ভিক্টোরিয়া কলেজ থেকে আটক
গত ৫৩ বছর দেশে শুধু বিভক্তি দেখেছে মানুষ: জামায়াত আমির
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা