জগন্নাথের ছাত্রী হলের নির্মাণ শেষ কবে?

নাসিমা আক্তার তূরা, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ১৭:৩১ | প্রকাশিত : ২৩ জানুয়ারি ২০১৭, ০৮:২৯

‘অনার্স শেষ হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু হলে থাকার স্বপ্ন শুধু স্বপ্নই রয়ে গেল।’ এই আক্ষেপ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মাহফুজা আনামের।

বিশ্ববিদ্যালয়টিতে তীব্র আবাসক সংকটের মধ্যে এক হাজার আসনের ছাত্রী হল নির্মাণ শুরুর পর থাকার ভোগান্তির অবসানের আশায় ছিলেন মাহফুজা। কিন্তু নির্মাণ কাজ কবে শেষ হবে, কবে উদ্বোধন হবে আর কবে সেখানে উঠা যাবে-এ নিয়ে এখন ছাত্রীদের মধ্যে অনেক প্রশ্ন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে বাংলাবাজার সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের পাশে ২০ তলার এই হলটি নির্মাণ হচ্ছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পত্নী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের নামে এই হলটির নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল আগেই। কিন্তু দুই দফা সময় বাড়ানোর পরও তা শেষ করা যায়নি। এবার তৃতীয় দফায় নতুন সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ২০১৮ সালের ১ জুলাই।

কিন্তু এর মধ্যেও কাজ শেষ হবে কি না এ নিয়ে আছে শঙ্কা। কারণ, জায়গা সংকুলানের জন্য দিনের বেলায় নির্মাণ কাজ করা যায় না। পাশাপাশি মালামাল এনে রাখার জায়গা নেই। সিমেন্ট ও বালুর মিশ্রণ করে এখানে এনে ঢালতে হয়।

ছাত্রী হল নির্মাণ প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১১ সালের ২১ জানুয়ারি। মেয়াদ ছিল কাজ শুরুর দিন থেকে ২০১৩ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। এরপর মেয়াদ বৃদ্ধি করে ২০১৬ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত করে সরকার। এরপরও প্রশাসন নির্মাণ কাজ শেষ করতে পারেনি। এরপর বিশেষ শর্তে আবার মেয়াদ ২০১৬ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়। পরপর তিনবার সময় বৃদ্ধি করে প্রকল্পটি আবার চালু করে।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের একমাত্র অনাবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সেটাই উল্লেখ আছে। তবে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজ, তিতুমীর কলেজের মতো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হল থাকলেও প্রায় ৩০ হাজার শিক্ষার্থীর এই প্রতিষ্ঠানে হল থাকবে না-এটা মেনে নিতে পারেননি শিক্ষার্থীরা। তাই শিক্ষার্থীরা বেদখল হয়ে যাওয়া হল উদ্ধারের পাশাপাশি নতুন হল নির্মাণে আন্দোলনে নামে একাধিকবার।

আর শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের মুখে আবাসন সংকট সমাধানে কর্তৃপক্ষ প্রথমে উদ্যোগ নেয় ছাত্রীদের জন্য। এক হাজার শয্যার হলটি নির্মাণ হলে এটিই হবে দেশের সবচেয়ে বড় হল।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসের মধ্যেই ঠিকাদারকে সম্পূর্ণ কাজ শেষ করে হলটিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বুঝিয়ে দিতে হবে। ঠিকাদারদের কাজ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নিয়মিত দেখভাল করছে।

প্রকল্পটি যাতে পুনরায় বন্ধ হয়ে না যায় সেজন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন পরিকল্পনা দপ্তর নিজেদের রুটিন ওয়ার্কের বাইরে ১০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প দেখভাল করছে। এ জন্য তারা নিয়মিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীদের দৈনিক হাজিরা নিচ্ছেন। যাতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান শ্রমিক সংখ্যা কমাতে না পারে। নির্মাণ কাজের সবশেষ তথ্য তারা উপাচার্য মীজানুর রহমানকে জানাচ্ছেন। তিনিও কাজের সকল দিক নজরে রাখছেন। ফলে দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে জবির একমাত্র ছাত্রী হলের কাজ।

এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় তলার কাজ সম্পন্ন হয়েছে। তৃতীয় তলার কাজ শুরু হয়েছে। এসব বিষয়ে বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছাত্রী হলের প্রকল্প ব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, সবকিছুর সরবরাহ নিয়মিত থাকলে আমাদের কাজে আরও গতি পেত। আশা করি নির্ধারিত সময়ে অর্থাৎ ২০১৮ সালের জুনের মধ্যে আমরা কাজ শেষে হলটি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিতে পারব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ছাত্রীদের অসুবিধার কথা ভেবেই তাদের জন্য আগে হল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। হলটি নির্মাণের কাজ শেষ হলে অনেকাংশেই ছাত্রীদের অসুবিধা লাঘব হবে।’ নির্মাণ কাজে বিলম্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে, যেখানে হলটি নির্মাণের কাজ চলছে সেখানে দিনের বেলা সকল কাজ করা যায় না। অন্যদিকে জায়গা সংকলনের জন্য সকল মালামাল সঠিক সময় আনতে না পারার কারণে কাজ করতে কিছু অসুবিধা হচ্ছে। সরবরাহের কাজ সঠিক সময় না করার কারণেই প্রকল্পের কাজ শেষ করতে দেরি হয়েছিল। তাই দুইবার প্রকল্প বাতিল হয়েছিল। তবে এবার নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই হল নির্মাণের কাজ শেষ করতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী।’

ঢাকাটাইমস/২৩জানুয়ারি/এনএ/ডব্লিউবি

সংবাদটি শেয়ার করুন

শিক্ষা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিক্ষা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :