যৌতুকের বলি ঝুমা!
আট মাস আগে এক লাখ টাকা যৌতুক ধার্য করে বিয়ে হয়েছিল ঝুমা আক্তারের। কথা মতো বিয়ের পর যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা পরিশোধও করেছিলেন ঝুমার বাবা। কিন্তু পরবর্তী ধাপে যৌতুকের ৫০ হাজার টাকা যোগাড় করতে দেরি হচ্ছিল ঝুমার পরিবারের। এ দেরি সইছিল না তার শ্বশুরবাড়ির লোকজনের। এতে ঝুমাকে সইতে হয়েছে অকথ্য গালি-গালাজ, পারিবারিক ও মানসিক নির্যাতন। আর তা সইতে না পেরে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন ঝুমা আক্তার।
রবিবার সকালে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার আবদার গ্রামের ছমির উদ্দিনের ভাড়া বাড়ি থেকে ঝুমার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত ঝুমা আক্তার (২২) উপজেলা বরমী ইউনিয়নের কায়েতপাড়া গ্রামের ফজর আলীর মেয়ে। গত আট মাস আগে একই ইউনিয়নের বালিয়াপাড়া গ্রামের হাফিজ উদ্দিন ওরফে হাবির ছেলে সোহাগ মিয়া (২৫)-এর সাথে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের আবদার এলাকায় ছমির উদ্দিনের ভাড়া বাড়িতে থেকে ঝুমা স্থানীয় মাহদিন গার্মেন্টস ও স্বামী সোহাগ মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় অপর একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি করতেন।
ঝুমার বড় ভাই মামুন জানান, এক লাখ টাকা যৌতুক নির্ধারণ করে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ধারদেনা করে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধও করা হয়। পরবর্তী ৫০ হাজার টাকার জন্য চাপ দিলে আমরা কিছু সময় চাই। এতে তার শ্বশুর বাড়ির লোকজন তার বোনের ওপর বিভিন্নভাবে নির্যাতন চালায়। সবশেষ গত শনিবার রাত ১১টার দিকে ঝুমা মোবাইল ফোনে তার মাকে বাকি ৫০ হাজার টাকা পরিশোধের জন্য আকুতি জানায়। পরে সকাল ৬টার দিকে তারা ঝুমার মৃত্যুর খবর শুনতে পায়। তাদের ধারণা, ঝুমা আত্মহত্যা করেনি। তাকে পরিকল্পিত হত্যা করে আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
এ ব্যাপারে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল মালেক জানান, সকালে খবর পেয়ে ঝুমার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর জানা যাবে। তবে বিভিন্ন সময় ঝুমাকে যৌতুকের জন্য তার শ্বশুড়বাড়ির লোকজন চাপ প্রয়োগ করত বলে ঝুমার স্বজন ও স্থানীয়রা জানিয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/৯সেপ্টেম্বর/প্রতিনিধি/এলএ)