দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের ঘরে ঈদ আনন্দ আনলেন বগুড়ার এসপি

এনাম আহমেদ, বগুড়া
| আপডেট : ১১ আগস্ট ২০১৯, ১৫:১৮ | প্রকাশিত : ১১ আগস্ট ২০১৯, ১৫:১২

ঈদ যায় ঈদ আসে। কিন্তু তাদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয় না। এবারের ঈদের দিনগুলোও তাদের মন খারাপের সাথেই কাটাতে হতো। কিন্তু বগুড়া পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাঁর মহতি উদ্যোগে তাদের প্রত্যেকের পরিবারে এসেছে ঈদের আনন্দ। প্রত্যেকে পেয়েছে নতুন জামা-কাপড়। প্রত্যেকের ঘরে এখন ঈদ পালন করার জন্য পর্যাপ্ত ঈদ সামগ্রী। তারা এবার অনায়াসে একে অপরকে দাওয়াত দিয়ে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে পারবে।

বগুড়া শহর থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরে শিবগঞ্জ উপজেলার ময়দানহাটা ইউনিয়নের সোবহানপুর গ্রাম। এই গ্রামের অনেকগুলো পরিবারের মধ্যে ছয়টি পরিবারের চিত্র ভিন্ন রকমের। তাদের জীবনে দুঃখ এবং কষ্টের পাল্লাটাই বেশি ভারী। কারণ এই ৬টি পরিবারের ১৪ নারী, পুরুষ এবং শিশু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধি। ফলে গ্রামের অন্যরা যখন সকালে ঘুম থেকে উঠে সূর্য দেখে মাঠে কাজ করতে যায়, তখন এই ছয়টি পরিবারের সদস্য চোখে অন্ধকার ছাড়া আর কিছুই দেখে না। কাজের জন্য যেতে পারে না মাঠে। ফলে বাধ্য হয়েই ভিক্ষাবৃত্তির থালা নিয়ে পথে পথে ঘুরতে হয়।

সম্প্রতি বগুড়ার স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘জাগো বগুড়া’ সমাজের অবহেলিত এবং নিদারুণ কষ্টে জীবনযাপনে অভ্যস্থ এই ছয়টি পরিবারের বিষয়টি নজরে আসে বগুড়ার পুলিশ সুপারের। এরপর ছয়টি পরিবারের সবাই যেন এবারের ঈদের আনন্দ সম্পূর্ণ উপভোগ করতে পারেন এবং তাদের চিকিৎসার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেন। তারপর শনিবার ঠিক পড়ন্ত বিকেলে ১৪ সদস্যের ৬টি পরিবারের প্রত্যেকের জন্য হাত ভর্তি বাজার নিয়ে তাদের বাড়ি হাজির হন পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাঁ। এক এক করে প্রত্যেকের হাতে তুলে দেন ঈদের নতুন জামা এবং প্রতি পরিবারের জন্য ২ কেজি গরুর মাংস, ১০ কেজি চাল, ২ লিটার সয়াবিন তেল, ১ কেজি মসুর ডাল, ১ কেজি লবণ, ২ কেজি আলু, ১ কেজি সেমাই, ১ কেজি চিনি। এ সময় তার সহধর্মিনী পুলিশ নারী কল্যাণ সমিতি (পুনাক) এর সভানেত্রী রোমানা আশরাফ উপস্থিত ছিলেন।

ঠিক ঈদের দু’দিন আগে হঠাৎ করে পর্যাপ্ত ঈদ সামগ্রী পেয়ে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী পরিবারগুলোর অনেকেই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। অনেকের মুখে হাসির ঝিলিকও ফুটে ওঠে। এদের মধ্যেই একজন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শহিদুল ইসলাম ঢাকা টাইমসকে জানালেন, তার বাবা মৃত আব্দুল জব্বারও ছিলেন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। তারা চার ভাই ও তিন বোনের মধ্যে শুধুমাত্র এক ভাইয়ের দৃষ্টি শক্তি রয়েছে। অন্য তিন ভাই, তিন বোনসহ তাদের সন্তানদের মধ্যে ৮ জন দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। বোনদের বিয়ে দেয়া হলে তাদের সন্তানরাও দৃষ্টি প্রতিবন্ধী হয়েছে। বোনসহ তাদের সন্তানরা এখন তাদের বাড়িতেই থাকে। শহিদুল আরো জানান, মানুষের কাছে হাত পেতে তাদের সংসার চলে। কোনো ঈদেই তাদের সন্তানদের নতুন পোশাক কিনে দিতে পারেননি। তবে এবারের ঈদ তাদের কাছে ব্যতিক্রম। তারা অনেক খুশি।

ঈদ সামগ্রী বিতরণকালে বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঁইয়া বিপিএম বার গ্রামবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, প্রতিবন্ধী শিশুদের লেখাপড়া এবং চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের দৃষ্টি ফেরানোর ব্যাপারে চক্ষু বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এছাড়াও যারা কাজ করতে না পেরে ভিক্ষা করেন তাদের কর্মসংস্থানের ব্যাপারেও চিন্তা ভাবনা করা হবে।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন সহকারী পুলিশ সুপার কুদরৎ-ই-খুদা শুভ, বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম বদিউজ্জামান, শিবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, মোকামতলা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ পুলিশ পরিদর্শক সনাতন সরকার। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন জাগো বগুড়া আতিক রহমান, খালিদ হাসান, তৌহিদ মন্ডলসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকাটাইমস/১১আগস্ট/ইএস

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

সুন্দরবনের আগুন নেভেনি, আরও ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা

বগুড়ায় বসতবাড়ি‌তে বি‌স্ফোরণে আহত বুশরা মারা গে‌ছেন

অনলাইন ডেলিভারি ম্যান সেজে গাজা পাচার, আটক ১

চাটখিলে এমডির বিরুদ্ধে হাসপাতাল দখলের অভিযোগ

গাজীপুরে রেল দুর্ঘটনা: ৩১ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

বরিশালে তুচ্ছ ঘটনায় পরিবহন শ্রমিকদের সংঘর্ষ, যান চলাচল বন্ধ

সৈয়দপুরে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে তালাকের অভিযোগ কোস্টগার্ড সদস্যের বিরুদ্ধে

খাবারে নেশাদ্রব্য মিশিয়ে শিক্ষকের বাসায় চুরি, ৩ জন অসুস্থ

তাপদাহ: দিনাজপুরে নাবি টমেটোর বাম্পার ফলনেও কৃষকের মাথায় হাত

এক পাগলা কুকুরের কামড়ে শিশুসহ ২২ জন আহত, হাসপাতালে নেই ভ্যাকসিন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :