‘মেটি স্কুল’ দেখতে এসে অবাক হন সবাই

শাহ্ আলম শাহী, দিনাজপুর
  প্রকাশিত : ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০৮:১২
অ- অ+

একেবারে অজপাড়াগাঁয়ে একটি স্কুলের নাম ছড়িয়ে পড়ছে বিশ^জুড়ে। আর এই তাক লাগানোর কারণ স্কুলটির ভিন্নধর্মী নির্মাণশৈলী। এই নান্দনিক শিল্পের জন্য ২০০৭ সালে আগা খান আর্কিটেকচার অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে। এই অপরুপ স্কুলটি দেখতে বিরলের প্রত্যন্ত রুদ্রপুর গ্রামে প্রতিদিনই ভিড় করছেন দেশি-বিদেশি দর্শকরা। শুধু স্থাপত্যেই স্বাক্ষর রাখেনি স্কুলটি, শিক্ষাতেও ছাপ রেখে চলেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দ্বিতল এ স্কুলের বৈশিষ্ট্য হলো- কক্ষে শিক্ষার্থীরা গরম কি শীতের অনুভূতি তীব্রভাবে অনুভব করে না। আলো-বাতাসের আগমনে স্বাস্থ্যও ভালো থাকে। কক্ষগুলোও পরিবেশবান্ধব। ‘দীপশিখা’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন স্কুলটি গড়ে তোলে।

আনন্দের মাধ্যমে শিক্ষাদান, শিক্ষার প্রতি স্থায়ী ও ইতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি, যুক্তিযুক্ত চিন্তার বিকাশ ও দলীয়ভাবে শিক্ষাগ্রহণ এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মেটি স্কুলের যাত্রা।

এখানে ছাত্রছাত্রীদের নাচ-গান-অভিনয়-চিত্রাঙ্কন, আলোচনা ও কথোপকথনভিত্তিক ইংরেজি শেখানোর পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের হাতের কাজ শেখানো হচ্ছে। বর্তমানে এই স্কুলে শিশু শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।

জানা যায়, সংগঠনটির তৎকালীন নির্বাহী পরিচালক পৌল চারোয়া তিগ্যা ১৯৯৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর ছোট্ট পরিসরে ‘মেটি স্কুল’ শুরু করেন। ‘মেটি’ একটি সংগঠনের নাম। যার পুরো নাম মডার্ন এডুকেশন অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (মেটি)। কম খরচে এবং হাতের নাগালের উপকরণ ব্যবহার করে মানুষের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে মেটি।

২০০৫ সালে মাটির স্কুলঘরটির নির্মাণ শুরু হয়। এতে অনুদান দেয় জার্মানির একটি দাতা সংস্থা। জার্মান ও অস্ট্রিয়ার ১০ জন ছাত্র ও বিশেষ প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্থানীয় ১৯ জন শ্রমিক স্কুলটি নির্মাণে অবদান রাখেন। জার্মান আর্কিটেক্ট আন্না হেরিঙ্গার ও আইকে রোওয়ার্গের তত্ত্বাবধান সহযোগিতা করেন দীপশিখা প্রকল্পের কর্মীরা।

এই স্কুলটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি, খড়, বালু ও বাঁশ, দড়ি, খড়, কাঠ, টিন, রড, ইট ও সিমেন্ট। মাটি ও খড় মেশানো কাদা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে এর দেয়াল। দেয়ালের ভিতের ওপর দেয়া হয়েছে আর্দ্রতারোধক। দেয়ালের প্লাস্টারে ব্যবহার করা হয়েছে মাটি ও বালু। মেঝের প্লাস্টারে পামওয়েল ও সাবানের পেস্ট ব্যবহার করা হয়েছে, যা সাধারণভাবে ওয়াটারপ্রুফ।

মেটি স্কুলের ৯ ফিট উচ্চতার ওপরে প্রথম তলায় ছাদ হিসেবে বাঁশ বিছিয়ে ও বাঁশের চাটাই দিয়ে মাটির আবরণ দেওয়া হয়েছে। দোতলার ছাদে বাঁশের সঙ্গে কাঠ দেওয়া হয়েছে। ওপরে বৃষ্টির পানির জন্য দেওয়া হয়েছে টিন। কোথাও ইট ব্যবহার করা না হলেও ঘরের ভিত হিসেবে ইট ব্যবহার করা হয়েছে।

দীপশিখার রুদ্রপুর প্রকল্প অফিসের এরিয়া ম্যানেজার সেপাল চো. দেবশর্মা জানান, ২০০৭ সালে বিশ্বের ১৩টি স্থাপত্যের সঙ্গে মেটি স্কুলকে আগা খান অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়। পুরস্কার হিসেবে দীপশিখাকে ১৩ হাজার ৭০০ মার্কিন ডলার দেয়া হয়। আর আর্কিটেক্ট আন্না হেরিঙ্গারকে ১৬ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার ও আইকে রোজওয়ার্গকে ৮ হাজার ২০০ ডলার দেওয়া হয়।

ঢাকাটাইমস/১৭সেপ্টেম্বর/ডিএম

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ক্ষমতাকে নিজেদের করে রাখতে নির্বাচনকে পেছানোর পাঁয়তারা করছে একটি দল: নীরব
তিন ম্যাচ জিতে এশিয়া কাপে বাংলাদেশ
শেরপুর সীমান্তে বন্যহাতির মৃতদেহ উদ্ধার
তানভীরের ঘূর্ণিতে জয়ের পথে বাংলাদেশ
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা