চাকরি দিতে ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট খুঁজছে অগমেডিক্স

জহির রায়হান
  প্রকাশিত : ১০ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৭:৪৩| আপডেট : ২৩ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৫:৫২
অ- অ+
জহির রায়হান

রিমোট মেডিকেল স্কাইব বা দূরলেখক হিসেবে ডাক্তারদের সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশের তরুণরা। যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিভিত্তিক স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান অগমেডিক্স এরই মধ্যে ৩২৫ কর্মী নিয়োগ দিয়েছে। আগামী বছর আরও এক হাজার কর্মী নিয়োগ দিতে চায় প্রতিষ্ঠানটি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ডাক্তারদের বাধ্যতামূলকভাবে রোগীর তথ্য সংগ্রহ করতে হয় ইলেকট্রনিক হেলথ রেকর্ড সিসটেমে, যা সহযোগীদের নিয়ে করে নেওয়ার নামই স্কাইব।

অগমেডিকস এই কাজটিই সহজ করে দিচ্ছে গুলগ গ্লাস ব্যবহার করে। এর মাধ্যমে ডাক্তার রোগীর কথোপকথন বাংলাদেশে বসে দেখতে ও শুনতে পান বাংলাদেশের কোনো স্কাইব। তারা প্রয়োজনীয় তথ্য যুক্ত করছে রোগীর তথ্যভাণ্ডারে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের ইয়ান শাকিল বাংলাদেশে এর কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

অগমেডিক্সের বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ মুজিব নোমান। রাজধানীর পান্থপথে তাদের প্রধান কার্যালয়ে ঢাকা টাইমসের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে রাশেদ মুজিব নোমান বলেন, তারা চাকরি দিতে ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট খুঁজছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন ঢাকা টাইমসের নিজস্ব প্রতিবেদক জহির রায়হান।

ঢাকা টাইমস: অগমেডিক্স বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে কাজ করছে। এর যাত্রা সম্পর্কে বলুন।

রাশেদ মুজিব নোমান: চিকিৎসা ও রোগীর সম্পর্ক আরও উন্নত করার জন্য অগমেডিক্সের যাত্রা। চিকিৎসার বাইরেও আধুনিক চিকিৎসকদের আরও নানা রকমের বাড়তি দায়িত্ব নিতে হয়। তার অনেকগুলোই অগমেডিক্স সমাধান করে ফেলে। যেমন মেডিকেল ডকুমেন্টেশন করতে চিকিৎসকদের যে সময় লাগত সেটি অগমেডিক্স করে দেওয়ায় তাদের বাড়তি কাজের চাপ হালকা হয়। ফলে তারা তাদের মূল কাজ চিকিৎসাতে সবটুকু মনোযোগ দিয়ে রোগীদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারে।

ঢাকা টাইমস: এখানে যাদের নিয়োগ দিচ্ছেন তাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা কী?

রাশেদ মুজিব নোমান: আমরা খুঁজছি যারা মূলত ইংরেজিতে ভালো। তাদের কোনো অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই। ফ্রেশ গ্র্যাজুয়েট। যারা চাকরি খুঁজছে। ঠিক তাদের আমরা খুঁজছি। আমাদের প্রথম দরকার একটা বেসিক ইংরেজি জানা কর্মী, তিনি গ্র্যাজুয়েট না-ও হতে পারেন। যদি বেসিক ইংরেজি জানা থাকে আমরা তাদের সহায়তা করতে পারি সেটা উন্নয়নের। দুই নম্বর হলো, যারা কাজ করবে তাদের কাজ করার আগ্রহ থাকতে হবে। যেহেতু আমরা হেলথ কেয়ারে কাজ করছি, মানুষের জীবন নিয়ে কাজ করা সিরিয়াস ব্যাপার। আমরা চাই উদ্দীপনার সঙ্গে কাজ করা। আরেকটা হলো আমরা যেহেতু ভালো ক্যারিয়ার অপরচুনিটি দিচ্ছি, কেউ ভালো পারফর্মার হলে চার বছরের মাথায় এক লাখ টাকা আয়ের লেভেলে চলে যেতে পারে। আমরা এমন একটি ক্যারিয়ার অফার করছি যার জন্য দরকার পরিশ্রম করার আগ্রহ এবং উন্নতি করার ইচ্ছ।

ঢাকা টাইমস: নতুন কর্মীদের আপনার প্রতিষ্ঠানে কাজটা কী হবে? আর শুরুতে তাদের বেতনটা কেমন হবে?

রাশেদ মুজিব নোমান: আমরা এই মুহূর্তে আমেরিকার চিকিৎসকদের কাজ করছি। সংক্ষেপে যদি বলি, আমেরিকার ডাক্তারদের গুগল গ্লাস দিই, তারা গুগল গ্লাস পরে রোগী দেখে। এর মাধ্যমে আমাদের এখানে কর্মীরা সরাসরি ডাক্তার ও রোগীর কথোপকথন শুনতে ও দেখতে পান। বাংলাদেশে যেসব তরুণ-তরুণীকে আমরা প্রশিক্ষণ দিচ্ছি, তারা ভিডিও শুনছে দেখছে। রোগীকে ডাক্তার কী টেস্ট দিল, কী ওষুধ দিল। কবে আবার আসতে হবে। মোট কথা, একটা সামারি লিখছে তারা। কাজটা খুবই সিম্পল । তবে হেলথ নিয়ে কাজ বলে একটু কঠিনও। শুরুতে স্যালারি ৩০ হাজার। তবে এখানে আমরা প্রথমে পাঁচ মাস ট্রেনিং দিই। প্রথম দুই মাস ইংরেজি শেখাই। তখন প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা। তারপর তিন মাস কীভাবে মেডিকেল ডকুমেন্ট তৈরি করতে হবে সেটা শেখাই। সে জন্য প্রতি মাসে ১৫ হাজার টাকা করে দেই। ট্রেনিংটা শেষ হলেই ৩০ হাজার টাকা বেতন। কেউ যদি সিরিয়াস থাকে আমাদের যেভাবে প্লান আছে, তিনি দুই বছরের মাথায় ৪৫ হাজার টাকায় চলে যেতে পারবেন।

ঢাকা টাইমস: কর্মীদের কাজের সময় কখন থেকে?

রাশেদ মুজিব নোমান: আমরা আমেরিকার সঙ্গে কাজ করছি। আমাদের কাজটা রাতে। রাত আটটা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত। এক ঘণ্টা বিরতি। সপ্তাহে পাঁচ দিন অফিস। আমাদের সাপ্তাহিক বন্ধ শনি ও রবিবার। তবে রাতে কাজ হলেও খুব সুরক্ষিত। রাতে যেন বাইরে খেতে না হয় এ জন্য আমাদের ক্যাফেটেরিয়াতে ডিনার সার্ভ করি। আনলিমিডেড চা কফি এগুলো তো আছেই। আর কর্মীদের সকালবেলা বাড়ি যাওয়া নিয়েও চিন্ত নেই। আমাদের গাড়িতে তাকে বাসায় পৌঁছে দেই।

ঢাকা টাইমস: বাংলাদেশে কয়টি অফিস রয়েছে আপনাদের?

রাশেদ মুজিব নোমান: আমাদের বর্তমানে পান্থপথে প্রধান অফিস। তবে আমরা অলরেডি একটি অফিস নিয়েছি সেটা রাজধানীর সোবহানবাগের মানামা টাওয়ারে। সে ভবনে আমরা পাঁচটি ফ্লোর নিয়েছি।

ঢাকা টাইমস: আপনাদের এখন কত কর্মী আছে, আপনারা কী আরও কর্মী নিয়োগ দিচ্ছেন?

রাশেদ মুজিব নোমান: আমাদের বর্তমানে কর্মী আছে ৩২৫ জন। আগামী বছরের মধ্যে আমাদের চাহিদা এক হাজার কর্মী। আমাদের প্রচুর ডিমান্ড আছে আমেরিকাতে।

ঢাকা টাইমস: আপনারা কী পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছেন?

রাশেদ মুজিব নোমান: বাংলাদেশ সফটওয়ার ইঞ্জিনিয়ার দিয়ে যাত্রা শুরু পাঁচ বছর আগে। আমাদের ভবিষ্যত পরিকল্পনা অগমেডিক্সের যে আন্তর্জাতিক ব্যবসা তার ৬০ শতাংশই আমরা বাংলাদেশে করতে চাই। আমরা সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক কয়েকটি ভেঞ্চার ক্যাপিটালের যৌথ বিনিয়োগ ১৬৫ কোটি টাকা পেয়েছি। সিলিকন ভ্যালির শীর্ষ পর্যায়ের ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান রেডমাইল গ্রুপ, ম্যককেজন ভেঞ্চার, ডিসিএম ভেঞ্চার, ওয়াক্সিয়াং হেলথকেয়ার ইনভেস্টমেন্টর প্রতিষ্ঠান এই বিনিয়োগ করেছে।

এবারের বিনিয়োগের মাধ্যমে অগমেডিক্সে ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। দেশীয় বাজারে ‘সিলিকন ভ্যালি’ রীতি প্রচলনের মাধ্যমে কর্মীদের জীবনমান উন্নয়নে বিনিয়োগের অর্থ ব্যয় হবে। অগমেডিক্সে কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ২০২০ সালে দেশব্যাপী কর্মসূচি নেবে। আমরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও এ বিষয়ে আলোচনা করব।

(ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/মোআ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
সেই রাত স্মরণে তালা ভেঙে বেরিয়ে এলেন রোকেয়া হলের ছাত্রীরা
রাতে ‘তুমি কে আমি কে রাজাকার রাজাকার’ স্লোগানে মুখর ঢাবি ক্যাম্পাস
চাপাতি ধরে ফোন-মানিব্যাগের সঙ্গে জামা-জুতা ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ১
সিরাজগঞ্জে সরকারি অফিস ‘দখল করে’ জামায়াতের কার্যালয়ে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা