‘কেউ শোনে না আমাদের কথা’

জহির রায়হান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০২০, ১৪:০২ | প্রকাশিত : ০১ এপ্রিল ২০২০, ১৭:১২

প্রিয়জনকে ফুল দেয়া। বিয়ে, জন্মদিন, সভা, সেমিনার এবং বিশেষ দিনের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন- কোনো আনুষ্ঠানিকতা এখন ফুল ছাড়া বেমানান লাগে। রাজধানীসহ সারা দেশে ফুলের দোকান গড়ে উঠেছে। দেশে ফুলের বাজারের প্রতীক হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ। ফুল কেনার কথা ভাবলেই চোখের সামনে সবার আগে চলে আসে এই রাজধানী কেন্দ্রটি। ফলে সারা দিনই ভিড়বাট্টা লেগে থাকে এখানে।

এখানে খুচরা ও পাইকারি মূল্যে ফুল বিক্রি হয়। কিন্তু বর্তমান করোনাভাইরাসের প্রভাবে সংকটে পড়েছেন এখানকার ফুল ব্যবসায়ীরা। বন্ধ রয়েছে তাদের দোকান। ৫১টি ফুলের দোকানে গড়ে প্রতিদিন ১০ লাখ টাকা বিক্রি হতো। এখন বন্ধ দোকানের মালিক-কর্মীরা বেকার। কবে এই দুর্ভোগ কাটবে জানা নেই কারও। সরকারকে তাদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।

শাহবাগ বটতলার ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমরা এমন একটা পর্যায়ে আছি, না আমরা কাউকে বলতে পারি। না কেউ আমাদের ডাকে। আমরা তো না খেয়ে থাকলেও এটা বলতে পারছি না। আমরা সুবাস বিক্রি করি। কিন্তু কেউ আমাদের পাশে দাঁড়ায় না।’

শাহবাগ ফুটপাতে ৫১টি দোকানে ফুল বিক্রি করা হয় জানিয়ে আবুল কালম আজাদ বলেন, ‘এসব দোকান ২৬ তারিখ (মার্চ) থেকে বন্ধ। প্রতিদিন যে বেচাকেনা হতো, তা দিয়ে পরিবার চলত তাদের।’

এ ছাড়া সরকারের বন্ধ ঘোষণার পর এ কদিন দোকানে থাকা সব ফুল পচে গেছে বলে জানান আজাদ। বলেন, এতে সবারই বড় একটা লোকসান হয়েছে।

আজাদ বলেন, ‘এখন তো দোকান বন্ধ্। কারও এমন কোনো সঞ্চয় নেই যে ভেঙে খাবে। আর যাদের কিছু আছে, তাতে আর কত দিন বসে চলে!’

‘বিভিন্ন খাতের অনেকেই অনুদান পাচ্ছে। কিন্তু আমরা কোনো অনুদান এখনো পাইনি। কেউ আমাদের কাছে আসেওনি।’ বলেন ফুল ব্যবসায়ীদের এ নেতা।

তাদের ফুল ব্যবসায়ী ও কর্মীদের অনেকে খাবার সংকটে পড়ছেন জানিয়ে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আজ (সোমবার) আমাকে একজন ফোন দিয়ে বলল দুই দিন ধরে তার ঘরে বাজার নেই। আমি তাকে ডেকে ৫০০ টাকা দিয়েছি। আমিই বা কত জনকে দিতে পারি। আমাদের মার্কেটা তো সারা বাংলাদেশে পরিচিত। কিন্তু তবুও আমাদের পাশে কেউ এগিয়ে আসছে না।’

শাহবাগের বটতলার ফুল ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘সবাই তো অনুদান পাচ্ছে। এখানে ৫১টি দোকানের সঙ্গে প্রায় আড়াই হাজার স্টাফ আছে। এই লোকগুলো অনাহারে চলছে। আমাদের একটা ব্যবস্থা করবেন আশা রাখি। যাতে আমরা এ সংকট কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে পারি।’

দীর্ঘমেয়াদি চাওয়া বলতে গিয়ে ফুল ব্যবসায়ীদের এ নেতা বলেন, ‘আমরা রোদে ভিজি, রোদে শুকাই। রোদে আমাদের অনেক টাকার ফুল নষ্ট হয়। যদি আমাদের জন্য একটা স্থায়ী জায়গা করে দেয়া হতো।’

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র নাকি পাঁচ বছর ধরে আশ্বাস দিয়েছেন তাদের পুনর্বাসন করে দেবেন। কিন্তু এখনো কিছু হয়নি। তাদের পুনর্বাসনের দাবি জানান আবুল কালাম আজাদ।

সাধারণ সময়ে প্রতিদিন শাহবাগের এ ফুল মার্কেটে গড়ে ১০ লাখ টাকার ফুল বিক্রি হয়। আর উৎসব-পার্বনে বিক্রি হয় আরও বেশি। তবে সবাই যে এক রকম বিক্রি করে তা নয়। ফুল ব্যবসায়ীদের নেতা বলেন, ‘কেউ এক হাজার, কেউ ১০ হাজার, কেউ ৫০ হাজার টাকার ফুল বিক্রি করত। আবার কেউবা বউনিও (বিক্রি শুরু) করতে পারত না। এখন সব বন্ধ। এক টাকাও বিক্রি নেই।’

আজাদ বলেন, ‘আমরা সরকারের ঘোষণামতো বন্ধ রেখেছি। আরও সময় বাড়লে সেটাও আমরা মেনে নেব। আমাদের টিকে থাকার জন্য সরকারি সহায়তার দাবি জানাই।’

(ঢাকাটাইমস/১এপ্রিল/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

আজ শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

বড় বড় খেলাপিরা সাত, আট, নয়বার করে ঋণ পুনঃ তফসিল করতে পারছে: ফরাসউদ্দিন

গতানুগতিক ভবন নির্মাণে পরিবেশের ক্ষতি হচ্ছে: জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী

২১ মে ১৫৭ উপজেলায় সাধারণ ছুটি ঘোষণা

প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন শহীদ স্কোয়াড্রন লিডার জাওয়াদের পরিবার

সব জেলায় বইছে তাপপ্রবাহ, শনিবার থেকে বৃষ্টির আভাস

‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’ নীতি বাস্তবায়নে পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশ

জেন্ডার সমতা-নারীর ক্ষমতায়নে ভূমিকা: মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয়ের প্রশংসা জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারির

উপজেলা নয়, এখন থেকে জেলাভিত্তিক হবে উন্নয়ন পরিকল্পনা

বৈদেশিক ঋণের প্রকল্প দ্রুত শেষ করার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :