‘উন্নয়ন অনেক হয়েছে, এখন নজর দিতে হবে গুণগত মানে’

করোনাভাইরাস মহামারীর মধ্যে আগামী অর্থবছরের বাজেটকে ‘টিকে থাকার বাজেট’ বলে মনে করছেন অর্থনীতির গবেষক ড. নাজনীন আহমেদ। তার মতে, অনেক উন্নয়ন হয়েছে এবার উন্নয়নের গুণগত মানের দিকে নজর দিতে হবে।
উন্নয়নের যে জাহাজটি এতদিন ধরে এগিয়ে যাচ্ছিল, এই বাজেটকে সেই জাহাজের হাল ধরে রাখার বাজেট হিসেবে দেখছেন অর্থনৈতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্ট্যাডিজের (বিআইডিএস) এই সিনিয়র রিসার্স ফেলো।
করোনাভাইরাস মহামারীর কারণে অন্যান্যবারের চেয়ে সম্পূর্ণ এক ভিন্ন পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার বিকালে জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
ড. নাজনীন আহমেদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘চলমান মহামারীতে সাধারণ মানুষের খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা এবং ক্ষুদ্র-মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তারা যেন টিকে থাকতে পারে বাজেটে তেমন ব্যবস্থা রাখতে হবে।’
‘উন্নয়ন আমরা অনেক করেছি। এখন এই বাজেটে সময় এসেছে সেই উন্নয়নের গুনগত মানের দিকে নজর দেওয়া। আর ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট হচ্ছে আমাদের টিকে থাকার বাজেট।’
আগামী অর্থবছরের বাজেট স্বাভাবিক কোনো বছরের বাজেট নয় মন্তব্য করে বিআইডিএসের এই সিনিয়র সিনিয়র রিসার্স ফেলো বলেন, ‘করোনাভাইরাসের কারনে দেশের অর্থনীতি এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কাজেই টিকে থাকার এই বাজেটে উন্নয়নের যে জাহাজটি এগিয়ে যাচ্ছিল তার হাল ধরতে হবে। যেন বড় রকমের কোনো ক্ষতি না হয়।’
‘বাজেটের লক্ষ্য হওয়া দরকার আগামী একটি বছর আমাদের অর্থনীতি যেন ক্ষতি কমিয়ে টিকে থাকতে পারে। সেই দর্শনেই এই বাজেট প্রণীত হওয়া দরকার। এই ক্ষতির ক্ষেত্রে জীবনের ক্ষতি, জীবিকার ক্ষতি যেন কম হয়, উন্নয়নের ক্ষতি যেন কম হয় সেসব দিকে মনোযোগ দিতে হবে।’
এসব লক্ষ্য নিয়ে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে ক্ষতি কম রেখে অর্থনীতির হালটাকে ধরে রাখা গেলে সেটা একটা বড় সাফল্য হবে বলে মত ড. নাজনীনের।
তিনি বলেন, ‘এই বাজেটে অন্য বছর যেভাবে প্রবৃদ্ধি দেখেছি, এবার সাড়ে আট শতাংশ প্রবৃদ্ধি হতে পারতো। সেটা হবে না, দুই-তিন কিংবা চার শতাংশ নানা রকম প্রাক্কালন করা হচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মানুষের জীবন-জীবিকার ক্ষতি যেন অনেক কম হয়।’
‘মানুষের কাছে যেন খাদ্যসামগ্রী, অর্থসাহায্য পৌঁছায় ক্ষুদ্র-মাঝারি কুটির শিল্প, অনুশিল্প যেন টিকে থাকে সেসব বিষয়ে জোর দিতে হবে। যে ফেরিওয়ালা, দিনমজুর, যারা ছোটখাটো চাকরি করতেন, তাদের আয়ের সংস্থান যেন টিকে থাকে। অথবা তাদের জীবন নিয়ে টিকে থাকার ব্যবস্থা যেন থাকে’-যোগ করেন ড. নাজনীন।
স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজাতে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানোসহ নতুন বাজেটে একটি ‘মেগা প্ল্যান’ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এর মধ্যে থাকবে ৩ বছরের মধ্যম এবং ১০ বছরের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা।
ড. নাজনীন বলেন, ‘সামাজিক সুরক্ষার আওতা যেন বাড়ে, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে গিয়ে গুনগত মান যেন উন্নত হয় সেদিকেও নজর রাখতে হবে। উন্নয়ন আমরা অনেক করেছি। এখন এই বাজেটে সময় এসেছে সেই উন্নয়নের গুনগত মানের দিকে নজর দেওয়ার।’
(ঢাকাটাইমস/১০জুন/ডিএম)

মন্তব্য করুন