যুবলীগ নেতা তালেব হত্যায় গ্রেপ্তার ২

বগুড়ার সাবগ্রাম ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব হত্যা মামলার দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় শহরের বারোপুর এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এছাড়া হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্রও উদ্ধার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীটি।
গ্রেপ্তাররা হলেন আকাশতারা মধ্যপাড়া এলাকার আফসার প্রামাণিকের ছেলে চাঁন মিয়া এবং একই এলাকার কাইয়ুম প্রামানিকের ছেলে বাপ্পারাজ ওরফে বাপ্পা।
গত ১৪ জুন দুপুর দেড়টার দিকে সাবগ্রাম বাজার ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তালেবকে শহরের আকাশতারা জুট মিলের সামনে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গলাকেটে হত্যা করা হয়। ঘটনার পরদিন নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে ওই এলাকার ফিরোজ, চাঁন মিয়া ও বাপ্পাসহ অজ্ঞাত ৭/৮ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এরপর পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভূঞাঁর নির্দেশনায় পুলিশের একাধিক টিম ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং হত্যকাণ্ডের রহস্য উদঘাটনে মাঠে নামে।
এর একপর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ইমরান মাহমুদ তুহিনের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশ চাঁন মিয়া এবং বাপ্পারাজকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। গ্রেপ্তারের সময় তাদের দুজনের গায়ে রক্তমাখা পোশাক ছিলো। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে থাকার কারণে তারা পোশাক পরিবর্তন করতে পারেনি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাদে তারা ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। পরে তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আকাশতারা এলাকার গাবতলী সড়ক সংলগ্ন একটি ইউক্যালিপটাস বাগানের ভেতর থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাকু উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তার আসামিরা পুলিশকে জানিয়েছে, মামলার এক নম্বর আসামি ফিরোজ ফোকরার সঙ্গে খুন হওয়া তালেবের পূর্বে ভাল সম্পর্ক ছিল। তবে সম্প্রতি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাদের মাঝে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়। চাঁন এবং বাপ্পার সঙ্গেও তালেবের সম্পর্ক ভালো ছিল না। তালেব বিভিন্ন সময়ে তার প্রয়োজনে ডাকলে সম্প্রতি তারা কেউ যেত না। তালেবের বড় ভাইয়ের আচরণে তারা তিনজনই ক্ষুব্ধ ছিলো। ঘটনার দিন তারা তিনজন ঘটনাস্থলের পাশে আইয়ুবের দোকানে পান খাচ্ছিল। এসময় তালেব একটা মোটরসাইকেল নিয়ে সেখানে যায়। মোটরসাইকেল থেকে নেমে সে চাঁনকে ডাক দিলে তারা তিনজনই এগিয়ে যায়। তালেব চাঁনকে জিজ্ঞেস করে ‘কিরে, কথা শুনিস না কেন, বেশি শেয়ানা হয়ে গেছু?’ এরপর তাদের মাঝে বাকবিত-া শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে চাঁন তার কাছে থাকা চাকু বের করে তালেবের বুকে আঘাত করে। তালেব পালিয়ে তার বাড়ির দিকে দৌড় দেয়। তারা তিনজনও তালেবের পেছনে ধাওয়া করে তাকে ধরে ফেলে এলোপাথাড়ি শরীরে বিভিন্ন স্থানে ছুরিকাঘাত করে। এরপর মাটিতে তালেব পড়ে যায়। এ সময় ফিরোজের চাকুর আঘাতে তালেবের শ্বাসনালী প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সনাতন চক্রবর্তী ঢাকাটাইমসকে জানান, মামলার অপর আসামি ফিরোজকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। গ্রেপ্তার আসামিদের আজ আদালতে সোপর্দ করা হবে।
ঢাকাটাইমস/২০জুন/প্রতিনিধি/এমআর

মন্তব্য করুন