‘ইয়াবা কিনতে ঘণ্টায় অন্তত ২৫টি মোটরসাইকেল মধুপুরে’
ফরিদপুরের মধুখালী পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের মধুপুর এলাকায় মাদক কারবারির প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে গ্রামবাসী। শনিবার দুপুরে আড়কান্দি বটতলায় অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবীদ ও ভুক্তভোগী গ্রামবাসী অংশ নিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. শাজাহান খান বলেন, মধুপুর গ্রামের পল্লী চিকিৎসক আব্দুস সামাদ খানের পরিবার দীর্ঘদিন মাদক কারবারের সঙ্গে জড়িত। এর প্রতিবাদ করায় তার ছেলে সোহেল খানকে ইয়াবা দিয়ে গ্রেপ্তার করিয়েছে সামাদের পরিবারের লোকজন।
সোহেলের স্ত্রী শিখা বেগম বলেন, তার স্বামী ঘরে ঘুমিয়ে ছিল। এক লোককে দিয়ে ডেকে নিয়ে মধুখালী রেলগেটের সজলের বাড়িতে আটকে ইয়াবাসহ তাকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দেয়া হয়।
২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মীর্জা আব্বাস হোসেন বলেন, সামাদ খানের বাবা ছিলেন গ্রামের চৌকিদার। কিন্তু মাদক কারবার করে তিনি এখন গাড়ি ও জমির মালিক হয়ে গেছেন।
কাউন্সিলর বলেন, সামাদ পরিবারের কারণে এলাকার তরুণ সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
২০১৭ সালে তিন হাজার ১০০ পিস ইয়াবা, বিদেশী মদ ও যৌন উত্তেজক বড়ি, পুলিশের বুট ও মাদক বিক্রির ৭৭ হাজার টাকাসহ সামাদ খান ও তার মা রোকেয়া বেগমকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। ওই মামলার সাক্ষী মধুপুর গ্রামের হায়দার আলী খান বলেন, তার সামনেই এসব মাদক ও মালামাল উদ্ধার করলেও সামাদ খান তাকে ভয় দেখিয়ে আদালতে মিথ্যা সাক্ষী দিতে বাধ্য করেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে মধুখালী আখচাষী কল্যাণ সমিতির সাবেক সভাপতি ও ব্যবসায়ী মুন্সি এনায়েত হোসেন বলেন, তার গ্রামে ইয়াবা কেনার জন্য প্রতি ঘণ্টায় কমপক্ষে ২৫টি মোটরসাইকেল ঢুকে। তিনি বলেন, তার দোকান ভাড়া নিয়ে সোহেল টেইলারিংয়ের ব্যবসা করতেন। ১০ বছর আগে একদিন শুনি তার দোকানে ফেনসিডিল পাওয়া গেছে। সোহেলের মতো অনেক তরুণকে মাদক দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে আরো বক্তব্য দেন উপজলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ওহিদুজ্জামান বাবলু মিয়া, নওপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি শহিদুল ইসলাম খান, স্কুল শিক্ষক মাসুদ খান, মজিবুর রহমান, মাহবুবুর রহমান বাকী প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনের পরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ ব্যাপারে সামাদ খানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, র্যাবের এক সদস্য অন্যায়ভাবে তার গাড়ি আটকের ঘটনায় তিনি এক র্যাব কর্মকর্তার নামে একটি মামলা করেন। এর প্রতিশোধ নিতেই রাতের আঁধারে আমাকে ও আমার মাকে ধরে নিয়ে একইরাতে একই অভিযোগে তিনটি মামলা করে। পরে এসব মামলায় তদন্ত শেষে ফাইনাল রিপোর্ট দেয় পুলিশ।
তিনি সোহেলখানের বিরুদ্ধে মাদক কারবারের পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, তার বাবাকে এব্যাপারে সতর্ক করলে তারা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন।
(ঢাকাটাইমস/২৭মার্চ/কেএম)