সাতক্ষীরার 'ভয়ঙ্কর প্রতারক' বাদশা গ্রেপ্তার

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ০১ মে ২০২১, ১৭:১২| আপডেট : ০১ মে ২০২১, ১৭:৫০
অ- অ+

ছবির প্রতারক হিসেবে পরিচিত এসএম বাদশা মিয়াকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার ভোরে সাতক্ষীরা শহরের বাইপাস সড়ক এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। আটক বাদশা মিয়া জেলায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হুমকি দিয়ে অবৈধ সুবিধা আদায়ের চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন।

বাদশার প্রতারণার বিষয়ে গত ২৯ এপ্রিল সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান সতর্ক থাকতে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে সবার প্রতি আহ্বান জানান।

কথিত ডা. বাদশা মিয়ার বাবা সাতক্ষীরার পলাশপোল এলাকার নূর ইসলাম ছিলেন ‘হাতুড়ে ডাক্তার’। বাদশার কোনো পেশা বা আয়ের বৈধ উৎস নেই। প্রতারণা করে অর্থ আদায় করাই তার মূল কাজ। তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করতে গিয়ে ভয়ঙ্কর তথ্য পায় পুলিশ। বাদশা নিজেকে ডাক্তার দাবি করেন। যদিও তার ডাক্তার হিসেবে কোনো সার্টিফিকেট নেই এবং তিনি ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন অঙ্গ সহযোগী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, কেন্দ্রীয় সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ইত্যাদি বলে নিজেকে পরিচয় দেন।

বিভিন্ন মানুষকে টাকার বিনিময়ে চাকরিতে পদোন্নতি, চাকরি পাইয়ে দেয়া এমনকি যেকোনো মামলার সুরাহা করে দেয়ার কথা বলে কোটি টাকা হাতিয়েছেন। এছাড়া তিনি নিজেকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর পরিচয় দিতেন।

সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) দেলোয়ার হোসেনকে সরকারি নম্বরে ফোন দিয়ে একজন নিজেকে দৈনিক মানবাধিকার প্রতিদিন পত্রিকার সম্পাদক ও ভুঁইফোড় সংগঠন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার কেন্দ্রীয় সংসদের প্রচার-প্রকাশনা সম্পাদক বলে পরিচয় দেন। তিনি ওসিকে বলেন, তার সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান এবং প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের ডিরেক্টর ডা. বাদশা মিয়া স্যার কথা বলবেন।

এরপর ফোনে বাদশা মিয়া ওসিকে জনৈক নছু বিবিসহ তার মেয়েদের মিথ্যা মামলায় অভিযোগ থেকে মুক্তি দিয়ে ফাইনাল রিপোর্ট দেয়ার নির্দেশ দেন। জবাবে ওসি বলেন, মামলা তদন্ত চলমান রয়েছে। আপনি প্রয়োজন হলে এসপি মহোদয়ের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু তিনি (বাদশা) আদালত চালু হলে ওসির বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন আদালতে মিথ্যা মামলা করবেন বলে ভয়-ভীতি দেখান এবং খুলনা-০২ আসনের সংসদ সদস্যের প্যাডে ওসির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ খুব শিগগির আইজিপি বরাবর পাঠানোর কথা বলে হুমকি দেন।

গত ২৯ এপ্রিল দুপুরে পুলিশ সুপার ফেসবুক পেজে কথিত ডা. বাদশা মিয়াকে নিয়ে সতর্কতামূলক পোস্ট দেন। পরবর্তীতে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রাতেই শহরস্থ লেকভিউ মোড়ে জনৈক শহিদুল ইসলামের মুদি দোকানে অভিযান চালায় পুলিশ। সেখান থেকে দুটি নকল সিল, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব লেখা একটি নকল নোট প্যাড, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্যের নকল ডিও লেটার/প্যাডে ওসি দেলোয়ার হোসেনের নামে লিখিত মিথ্যা অভিযোগনামা, বিভিন্ন প্রকার নিয়োগপত্র, জমাজমি সংক্রান্ত কাগজপত্রসহ ওসি দেলোয়ার হোসেন বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত কপি উদ্ধার করা হয়।

এদিকে পুলিশের তৎপরতার খবর পেয়ে আত্মগোপনে চলে যান বাদশা মিয়া। অবশেষে শনিবার ভোরে বাইপাস সড়ক এলাকা থেকে তাকে আটক করে সাতক্ষীরা পুলিশ।

সাতক্ষীরা সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বুরহান উদ্দীন তাকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

(ঢাকাটাইমস/১মে/কেএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
নির্বাচনের আগেই ফ্যাসিস্টদের বিচার হবে : আইন উপদেষ্টা
ফিরে দেখা ৮ জুলাই: ‘বাংলা ব্লকেড’ শেষে সরকারকে আল্টিমেটাম, সমন্বয়ক কমিটি গঠন
নির্বাচিত হলে স্থানীয় সব সমস্যা সমাধানের আশ্বাস আমিনুল হকের
মিলন-জাদুর ঝলক কি দেখা যাবে আবার?
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা