বন্ধ করে দেয়া হলো আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজ

ফরিদপুরের সবচেয়ে ব্যস্ততম আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজটি দুই পাশে লোহার অ্যাঙ্গেলবার দিয়ে ওয়েল্ডিং করে প্রবেশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। শনিবার বিকালে দুজন ওয়েল্ডিং মিস্ত্রিকে এ কাজ করতে দেখা যায়। এই ব্রিজটি দিয়ে অবশ্য দীর্ঘদিন যাবত পরিবহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কুমার নদের উপরে মুজিব সড়কে ব্রিজটির এক প্রান্তে ফরিদপুরের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র হাজি শরিয়তুল্লাহ বাজার এবং অন্য প্রান্তে নিউ মার্কেট ও তিতুমীর বাজার এলাকা। শুধুমাত্র পায়ে হেটেই ব্রিজটিতে চলাচল করা যেতো। শহরের মানুষ নিত্য প্রয়োজনে এই পথে চলাচল করতো। এবার সেটিও বন্ধ করা হলো। জেলা সদরে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ক্রমবর্ধিষ্ণু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এ পদক্ষেপ নেয়া হলো।
সরেজমিনে শনিবার সন্ধ্যার আগে দেখা গেলো ব্রিজটির দুই পাশে লোহার মোটা অ্যাঙ্গেল ঝালাই করে এমনভাবে লাগিয়ে দেয়া হয়েছে যাতে কোনো মানুষের পক্ষে প্রবেশ করা সম্ভব না হয়।
এলাকাবাসী জানান, চলমান লকডাউনের শুরুতে গত ২১ জুন ব্রিজটির দুই পাশে বাঁশ দিয়ে বেঁধে যাতায়াত বন্ধ করা হয়েছিল। তবে বাঁশের প্রতিবন্ধকতা পেরিয়েও কিছু মানুষকে ওই পথে চলাচল করতে দেখা গেছে। এ প্রেক্ষিতে এবার স্থায়ীভাবে পথটি বন্ধ করা হলো।
শহরবাসীর নিত্যদিনের যাতায়াতের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত এই ব্রিজটি ১৯৩৫ সালে নির্মিত। তৎকালীন জেলা বোর্ডের চেয়ারম্যান আলিমুজ্জামান চৌধুরী শহরের বুকে কুমার নদের উপর সর্ব প্রথম কোনো সেতু হিসেবে এই সেতুটি নির্মাণ করেন। লোহার পিলারের উপরে পাথরের ঢালাইয়ের এই সেতুটি ১৯৮৮ সালের বন্যায় ধসে যায়। এরপর সেখানে আবার একটি বেইলি ব্রিজ নির্মাণ করার পর ২০১২ সালে সেটি দুর্ঘটনায় ধসে যায়। এরপর ফরিদপুর সড়ক ও জনপদ বিভাগ ২ কোটি ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে কুমার নদের উপর ৯১ মিটার দৈর্ঘ্য আলিমুজ্জামান বেইলি ব্রিজটি সংস্কার করে জনচলাচলের ব্যবস্থা করে।
এদিকে ২৭ জুন ফরিদপুরের ঘোষিত লকডাউনের বেঁধে দেয়া সময় শেষ হবে। নতুন করে আবার লকডাউন আসছে কি না- শহরবাসীর এই জল্পনা-কল্পনার মাঝেই ফরিদপুরের বহুল ব্যবহৃত জনপথের ব্রিজটি স্থায়ীভাবে বন্ধ করে দেয়া হলো। এ উদ্যোগকে লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধির লক্ষণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
ফরিদপুরে লকডাউন কার্যকর করতে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ বিভাগ কঠোর অবস্থানে রয়েছে। সব ধরনের গণপরিবহন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। যদিও পুলিশের চোখ ফাঁকি দিয়ে দু’চারটা রিকশা ও অটো চলছে। তবে মাছ বাজার, কাঁচা বাজারসহ সব ধরনের দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। এমনকি হাসপাতাল এলাকার বাইরে ওষুধের দোকানও বন্ধ রয়েছে। এতে অবশ্য জনগণকে বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার বলেন, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ক্রমবর্ধিষ্ণু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউন বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, র্যাবসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো একযোগে মাঠে কাজ করছে।
তিনি বলেন, সবাইকে আরও সচেতন হতে হবে। ফরিদপুরে করোনা বিস্তার রোধে ফরিদপুরসহ তিনটি পৌরসভায় লকডাউন দেয়া হয়েছে। এই বিধিনিষেধ পালন করার উপর নির্ভর করছে এই পরিস্থিতির কতটা উন্নতি বা অবনতি হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৭জুন/কেএম)

মন্তব্য করুন