ভোটে প্রার্থী মায়ের কাছে জিম্মি সন্তানের লাশ!

সিরাজগঞ্জে প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর ২০২১, ১৮:০২| আপডেট : ২৬ নভেম্বর ২০২১, ১৯:২৩
অ- অ+

মেঝ ছেলের ‘আত্মহত্যা’ করে মারা যাওয়ার খবর প্রকাশ্যে আনতে চাননি মা করুনা বেগম। তাই স্বামীকে নিয়ে ছেলের মরদেহ সেপটিক ট্যাংকে বালু দিয়ে ঢেকে রেখেছিলেন। ছেলের লাশ গোপনের পেছনে মা যুক্তি দেখালেন ভোটের। কারণ হিসেবে বলছেন, ছেলে মারা গেছে জানাজানি হলে তাদের ভিটেবাড়িও হারাতে হবে।

করুনা বেগম সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার নারিনা ইউনিয়নের সংরক্ষিত আসনে ভোটে লড়ছেন। এই ইউনিয়নের পূর্ব পাড়ায় মর্মান্তিক এই ঘটনা ঘটেছে। মারা যাওয়া আঠারো বছর বয়সী করিম করুনা বেগমের মেঝ ছেলে। এরইমধ্যে করুনা বেগম, তার স্বামী আলহাজ, বড় ছেলে ও পুত্রবধূকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শাহজাদপুর থানা পুলিশের একটি দল করুনা বেগমের বাড়ির সেপটিক ট্যাংক থেকে বালি চাপা লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে হাসপাতালে।

শাহজাদপুর থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে করুনা ও তার স্বামী জানিয়েছেন তাদের ছেলে করিম দীর্ঘদিন ধরে ড্যান্ডিসহ বিভিন্ন মাদকের নেশায় আসক্ত ছিল। গত মঙ্গলবার রাতে খাওয়া শেষে করিম তার ঘরে শুয়ে পড়ে।

বুধবার ভোরে করুণা বেগম তার ছেলে করিমকে ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া না মেলায় ছোট ছেলের ঘর থেকে উঁকি দিয়ে করিমের লাশ ঘরের আড়ার (ধরনার) সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্বামী-স্ত্রী মিলে ছেলের লাশ নামিয়ে বাড়ির টয়লেটের সেফটিক ট্যাংকে ফেলে বালি দিয়ে চাপা দিয়ে রাখেন।

সেপটিক ট্যাংকে লাশ রাখা কারণ হিসেবে করুনা বেগমের ভাষ্য, প্রায় দুই বছর আগে বড় ছেলের বউ আত্মহত্যা করে। এ ঘটনায় তারা প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ করে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। এখন মেঝ ছেলের আত্মহত্যার খবর মানুষ জানলে তাদের বর্তমান ভিটে বাড়িটিও থাকবে না। তাই তারা বুকে পাথর বেঁধে ছেলের মৃত্যুর খবর গোপন করেছেন।

করুনার স্বামী আলহাজের দাবি, এভাবে মারা যাওয়া ছেলের লাশ গোপন করার ঘটনা আর লুকাতে না পেরে শুক্রবার সকালে গাড়াদহ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলামের কাছে প্রকাশ করে দেন। যদিও এ বিষয়ে সাইফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

এদিকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে শাহজাদপুর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসিবুল হোসেন ও শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ খান ও ওসি অপারেশন অ্যান্ড কমিউনিটি পুলিশিং আব্দুল মজিদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, ‘আমরা শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হই। পরে বিকাল ৪টার দিকে নিহতের লাশ সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। এখন এটা হত্যা নাকি আত্মহত্যা জানার মারা যাওয়া ছেলেটির বাবা-মা ভাই ও ভাবিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় এনেছি।’

ওসি শাহিদ মাহমুদ জানান, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর সঠিক কারণ সম্পর্কে জানা যাবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/প্রতিনিধি/কেএম/ডিএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
তারেক রহমানকে শরণখোলা বিএনপির নেতাদের চিঠি, কাউন্সিলে আঞ্জুমান আরার প্রার্থীতা বাতিলের দাবি
সনাতনী জনগণের মাঝে বিএনপির বার্তা পৌঁছে দিলেন কাজী আলাউদ্দিন
বিচার সংস্কার ও নতুন সংবিধানের মাধ্যমেই দেশ পুনর্গঠন করতে হবে: নাহিদ ইসলাম
ভানভীরের ফাইফারে শ্বাসরুদ্ধকর জয় পেল টাইগাররা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা