ভোলায় আলোচিত জোড়া খুন মামলায় আপন ভাইসহ দুই জনের ফাঁসি

ভোলা প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ৩০ মার্চ ২০২২, ২১:৪০

ভোলা সদর উপজেলায় আলোচিত মাসুম ও জাহিদ হত্যা মামলায় মাসুমের আপন বড় ভাই মো. মামুনসহ দুই জনের ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেকেরই ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ মামলায় মামুনের ছেলে মো. শরীফকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করা হয়েছে। এছাড়াও এ মামলায় পাঁচজন আসামির মধ্যে মো. আরিফ ও রেহেনা ওরফে খালেদা সুলতানা রেহেনাকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। দণ্ডপ্রাপ্তদের প্রত্যেকের বাড়ি সদর উপজেলার বাপ্তা ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডে। বুধবার (৩০ মার্চ) দুপুরে প্রায় দুই ঘন্টা ব্যাপী এ রায় ঘোষণা করে ভোলা জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক।

রায়ে জেলা ও দায়রা জজ মো. মহসিনুল হক উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালের ১৩ মে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্তার ইউনিয়নের ৩নম্বর ওয়ার্ডের ইউনিয়ন পরিষদের সামনে জমিজমা বিরোধের জেরে বড় ভাই কর্তৃক হত্যার শিকার হয় ওই এলাকার বাসিন্দা মো. মাসুম ও তার শ্যালক মো. জাহিদ। এ হত্যার পর মাসুমের শ্বশুর মো. মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে পাঁচজনকে আসামি করে ভোলা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয় মাসুমের বড় ভাই মো. মামুনকে। মামলার দুই নম্বর আসামি মামুনের চাচাতো ভাই মো. ফিরোজ, তিন নম্বর আসামি মামুনের ছেলে মো. শরীফ, চার নম্বর আসামি মামুনের অপর ছেলে মো. আরিফ ও পাঁচ নম্বর আসামি মামুনের স্ত্রী রেহেনা ওরফে খালেদা সুলতানা রেহেনা।

মামলায় পুলিশ চার আসামিকে আদালতে হাজির করতে পারলেও দুই নম্বর আসামি মো. ফিরোজ পলাতক থাকায় তাকে আদালতে হাজির করা যায়নি। এমতাবস্থায় দীর্ঘ সময় ধরে মামলার ২৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ প্রমাণের ভিত্তিতে আদালতে তিন জন আসামির অপরাধ প্রমাণিত হয়। তাই মামলার এক নম্বর আসামি মামুন ও দুই নম্বর আসামি ফিরোজকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা প্রদান করেন। একই সাধে মামলার তিন নম্বর আসামি মো. শরীফের বয়স কম হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো ৬ মাস সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। এবং মামলার অপর আসামি আরিফ ও রেহেনার বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় বেকসুর খালাশ প্রদান করে আদালত। মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের দ্রুত ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকর করার আদেশ প্রদান করেন।

এ মামলায় আসামি পক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট অতিন্দ্র লাল ব্যানার্জী ও রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ছিলেন অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশ্রাফ হোসেন লাবু।

মামলার বাদী নিহত মাসুমের শ্বশুর মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আদালতে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি। তারপরও আমার দাবি পলাতক আসামি মো. ফিরোজকে দ্রুত গ্রেপ্তার করে এ রায় কার্যকর করা হউক। তাকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আমার আতঙ্কিত রয়েছি।

মামলার আসামি পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট অতিন্দ্র লাল ব্যানার্জী এ রায়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ঘটনাটি স্পর্শকাতর। আমরা মনে করেছি মামলায় বিজ্ঞ বিচারক এক নম্বর ও দুই নম্বর আসামিকে সাজা দিলেও বাকি আসামিরা খালাশ পাবে। কিন্তু আদালত তিনজন আসামিকেই সাজা দিয়েছে। আমরা এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবো।

মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) অ্যাডভোকেট সৈয়দ আশ্রাফ হোসেন লাবু রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, ভোলার আদালতে আজকে একটি যুগান্তকারী রায় দেয়া হয়েছে। রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে।

২০১৮ সালের ১৩ মে রাতে ভোলা সদর উপজেলার বাপ্ত ইউনিয়নের ভোটেরঘর এলাকায় ব্রিজের ওপর জমিজমা বিরোধের জেরে মামুন তার ছোট ভাই মাসুমকে কুপিয়ে হত্যা করে। এ সময় মাসুমকে বাঁচাতে আসলে মাসুমের শ্যালক জাহিদকেও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এআর

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :