হবিগঞ্জে চার উপজেলায় বন্যা, বাড়ছে নদীর পানি

টানা বর্ষণ আর উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে হবিগঞ্জের তিনটি উপজেলার বেশকিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেই সঙ্গে অব্যাহতভাবে বাড়ছে কালনী, কুশিয়ারা, খোয়াই নদীর পানি।
জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে চার উপজেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৯৩টি আশ্রয় কেন্দ্র। সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ শুখনো খাবার, ওষুধ, বিশুদ্ধ পানি, মোমবাতিসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মজুদ করে রাখা হয়েছে। ইতোমধে বেশকিছু পরিাবারের মধ্যে শুকনো খাবার, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় জিনিস পৌঁছে দেয়া হয়েছে।
কুশিয়ারা নদীর পানি শেরপুর পয়েন্টে এরই মধ্যে বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। বালুর বস্তা দিয়ে নদীর বাঁধ রক্ষায় চেষ্টা চালাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যে কোনো সময় বাঁধ ভাঙতে পারে এবং বাঁধ ভাঙলে বন্যা ভয়াবহ রূপ ধারণ করবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, গত দুদিনের টানা বর্ষণ, উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জেলার কুশিয়ারা, কালনী, খোয়াইসহ বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। কুশিয়ারার পানি আজমিরীগঞ্জ ও নবীগঞ্জ উপজেলার কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে হাওরে প্রবেশ করছে। এরইমধ্যে বেশকিছু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
আজমিরীগঞ্জের সাংবাদিক আবু হেনা জানান, আজমিরীগঞ্জ পৌর এলাকার জয়নগর, আদর্শগ্রাম, নিজ বাজার, অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কৈয়ারঢালা ও নিকলিরঢালা এলাকায় বাঁধ ভেঙে কুশিয়ারা ও কালনী নদীর পানি লোকালয়ে প্রবেশ করছে।
তিনি বলেন, দুর্গত লোকজনকে আজমিরীগঞ্জ সরকারি কলেজ ও মিয়াধন মিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। এরইমধ্যে সরকারি কলেজে ৭৪টি পরিবারকে তোলা হয়েছে।
অন্যদিকে খোয়াই নদীর পানি বাঁধের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সুজাতপুর, শতমুখা, বাজুকা, দত্তপুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মিনহাজ আহমেদ শোভন বলেন, আজমিরীগঞ্জের নিকলী ঢালা বাঁধ ভেঙে কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। বানিয়াচং উপজেলারও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। নবীগঞ্জ উপজেলার পাহারপুর, রাধাপুর, দিঘলবাগ ও দুর্গাপুর এলাকায় বাঁধ উপচে পানি প্রবেশ করছে। আউশকান্দি ও দিঘলবাগ ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, নবীগঞ্জ উপজেলার পাহাড়পুর ও রাধাপুরে কুশিয়ারা নদীর বাঁধের ১ ফুট ৬ ইঞ্চি ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। যদি কুশিয়ারা নদীর বাঁধ ভাঙে তবে বন্যা ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। আমরা বালুর বস্তা দিয়ে প্রাণপণ চেষ্টা করছি বাঁধ রক্ষায়।
জেলা প্রশাসক ইশরাত জাহান জানান, জেলার বিভিন্ন উপজেলার বন্যাকবলিতদের জন্য এরইমধ্যে শুকনা খাবারের প্যাকেট উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের বন্যাদুর্গতদের জন্য পাঁচ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার পাঠানো হয়েছে।
(ঢাকাটাইমস/১৮জুন/এলএ)

মন্তব্য করুন