রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন: ঢাকার সঙ্গে সুনামগঞ্জের দূরত্ব কমল ৫৫ কিলোমিটার

নিজস্ব প্রতিবেদক, সুনামগঞ্জ
  প্রকাশিত : ০৭ নভেম্বর ২০২২, ১৪:০১| আপডেট : ০৭ নভেম্বর ২০২২, ১৪:৩৯
অ- অ+

এপারে সুনামগঞ্জ ওপারে হবিগঞ্জ। মাঝখানে কুশিয়ার নদী। এতদিন এ নদীতে ছিল না কোনো সেতু। সেই নদী পার হতে খেয়াঘাটের ভোগান্তির শেষ ছিল না। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর দীর্ঘদিনের খেয়াঘাটের ভোগান্তি শেষে বহুল প্রতীক্ষিত জেলাবাসীর স্বপ্নের রানীগঞ্জ সেতু সোমবার সকালে উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রানীগঞ্জ সেতু উদ্বোধন করেন তিনি। এদিন দেশের সাত বিভাগের ১০০ সেতু উদ্বোধন করেন সরকারপ্রধান।

সেতুটি উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে হাওর অধ্যুষিত জেলাটির যোগাযোগব্যবস্থায় যুক্ত হয়েছে নতুন মাইলফলক। এই সেতুর ফলে সুনামগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকায় আসতে হলে আর সিলেট ঘুরে নয়, সরাসরি হবিগঞ্জ হয়ে আসা যাবে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে এতে সুনামগঞ্জের দূরত্ব কমেছে ৫৫ কিলোমিটার। এরফলে হবিগঞ্জ হয়ে কম সময়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গা যাতায়াত করতে পারবে সুনামগঞ্জ জেলার বাসিন্দারা।

এছাড়া জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে হাওরাঞ্চলবাসীর জন্য পদ্মা সেতু খ্যাত সুনামগঞ্জের সম্ভাবনায় সিলেটের দীর্ঘতম রানীগঞ্জ সেতু।

জেলাবাসী জানান, এ সেতুতে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে বাড়বে ব্যবসায়িক সম্পর্ক। উন্নয়নের মাপকাঠিতে আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে পিছিয়ে থাকা সুনামগঞ্জবাসী। জগন্নাথপুর উপজেলার রানিগঞ্জ সেতুটি জেলার সড়ক যোগাযোগে ভিন্ন মাত্রা যোগ করেছে। প্রায় ৬ বছরের অধিক সময়ে চলতে থাকা কাজ সরকারের প্রচেষ্টায় হাওর অঞ্চলে নতুর দ্বার উন্মোচিত হয়েছে। সেতুটি বাংলাদেশের সঙ্গে সুনামগঞ্জ, জগন্নাথপুর, দিরাইসহ অত্র অঞ্চলের নতুন যোগাযোগের মাইলফলক সৃষ্টি করছে।

সেতুর দুপাড়ের স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, কুশিয়ার নদীর জন্য এতদিন সীমাহীন কষ্ট করতে হয়েছে জেলার বাসিন্দাদের। নৌকা কিংবা ফেরি দিয়ে নদী পারাপারের ব্যবস্থা থাকলেও সীমাহীন কষ্ট সহ্য করে ঘন্টার পর ঘন্টা দুর্ভোগের শিকার হয়ে যোগাযোগ করতে হয়েছে দুই পারের কয়েক লাখ মানুষকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ১৯৯৬ সালে সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রয়াত জাতীয় নেতা আবদুস সামাদ আজাদের প্রচেষ্টায় শান্তিগঞ্জ উপজেলার ডাবর পয়েন্ট থেকে জগন্নাথপুর হয়ে আউশকান্দি পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়ক নির্মাণ হলেও কুশিয়ারা নদীর ওপর রাণীগঞ্জ সেতুটি করতে পারেননি। ২০১৬ সালের আগস্টে কার্যাদেশ দেওয়ার পর ২০১৭ সালের ১৪ জানুয়ারি দীর্ঘ এই সেতুর নির্মাণকাজ যৌথভাবে উদ্বোধন করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এবং সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এম মান্নান।

২০১৬ সালের আগস্টে ১৫৫ কোটি টাকা ব্যয়ে স্বপ্নের রাণীগঞ্জ সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। ৭০২ মিটার সেতু নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ৯১ কোটি টাকা। বাকি ব্যয় ধরা হয়, অ্যাপ্রোচ সড়ক, আধুনিক টোলপ্লাজা, কালভার্ট ও স্থানীয় ইটাখলা নদীর ওপর আরেকটি ছোট সেতু নির্মাণে।

সুনামগঞ্জ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আশরাফুল ইসলাম প্রাং বলেন, সুনামগঞ্জ জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবি ছিল কুশিয়ারা নদীর ওপর রানীগঞ্জ সেতু নির্মাণের। যা দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর বাস্তবায়ন হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আমাদের জেলায় সিলেট বিভাগের সবচেয়ে বড় রাণীগঞ্জ সেতুসহ আরো ১৭টি সেতু উদ্বোধন করেছেন। এ সেতুগুলো নির্মাণের ফলে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার বৈপ্লবিক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। যাতায়াতের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যও সম্প্রসারিত হবে।

(ঢাকা টাইমস/০৭নভেম্বর/এসএম)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আ.লীগ নিষিদ্ধসহ তিন দফা দাবি: শাহবাগে দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে বিক্ষোভ
পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে ভারতীয় কর্মকর্তার মৃত্যু
বরেণ্য সংগীতশিল্পী মুস্তাফা জামান আব্বাসী আর নেই
ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ধ্বংসের দাবি পাকিস্তানের
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা