তানিয়া হাসানের পাঁচটি কবিতা
বহুগামী বৃত্তান্ত
গমনের বৃত্তান্ত জানাই ছিল
তবু ছিপছিপে জৈব আলো
কাঁঠালপাতা একমাত্র সত্য, পাগলা ঠোঁটে!
কী অদ্ভূত!
কোনো কিছুই এড়ায়নি সেই দাঁত
পৃথিবীর সব ভোগ চুষে নিয়ে নির্যাস করেছে মধু
জোড়ায় জোড়ায় বসন্ত জন্মিয়েও হয়নি পিতা
তাহার নামেও শীৎকারের গন্ধ
অথচ, মিষ্টির কারিগরের মৃত্যুদণ্ড হল
ধর্ষণের অভিযোগে!
প্রেমকে কোন ক্রিয়ায় বেঁধে বহুগামী হল মায়া
মুর্খ হাওয়ায় বটগাছের আশীর্বাদও হারাল চরিত্র;
আলোর চশমা জানলই না—
মধু থেকে শরীর খুলে গেলেই শুধু রংধনু হয়
একমাত্র আকাশই তাই বহুগামী
যদিও তুমি আকাশি ভাইরাসে আক্রান্ত
তবুও একটা বিশালে ডুব দিলে সেটিং হয় সর্বগামী
তৃষ্ণা জুড়ালে সকলেই এক উড়ালের নাইওর
সর্বনাশের সর্বনাম
এইসব ইতিকথার ভূমিকায় অনামিকারা প্রসন্ন হলেও ছিদ্র হয় বায়োলজি।
লিরিক কলসির ছলাৎ ছলাৎ ঝুমকে
বাঁধা পড়ে একটা ওই ডাক
কোকিল কোমল কেয়ারে
বোতামের দ্বিতীয় সিঁড়ি উন্মুক্তই ছিল
একরোখা আঙুল
একুশ আলিঙ্গনের সুড়ঙ্গে
ঘেমে গিয়েছিল পরাণ
ঢলঢলে নেশায়
এ-ই সেই ছল আলোয় লোমশ বাগানের
উগ্রতায় বখাটে পেয়ার
ছিনিয়ে নেয় একটা নীল ওড়না
তাহার তাহাতেই ছিলেন তিনি
ছিপছিপে সেকেন্ডের শরীর
যখন ছাড়িয়ে যাচ্ছিল ফার্স্ট স্টেজ
ক্ষেপে ওঠা সর্বনাশের রঙ পোক্ত হওয়ার ধাঁচে
সর্বনামেরা হেফজ করে খুন হওয়ার বৃত্তান্ত
এমন আযানী জোয়ারে
সেকেন্ডের শরীর উ-ম বর্ণে
ক্ষতের খোয়াব রাঙায়
রক্তপাখি রিক্ত কলিজার ঘ্রাণে
পোয়াতি হয় একটা সুনীল সর্বনাশ
বক্ররেখার বন্দনা
অতঃপর ডালিমদ্বয় খুলল
বেয়াড়া বিড়ালের পৃষ্ঠে
লালের চিৎকার কিংবা নখের গুঞ্জন
এড়িয়ে গেল আপনার আয়না
যোগের ভুলে
একটা না পাওয়া রাত সেভিংস হলো না
অথচ আপনি শেয়ালের গুরু
আপনার মকশোবন্দি ছিল
আস্ত ডালিম গাছ
দেড়পোয়া রোদ, গম্ভীর অভ্র
আর নীলিমাপুত্রদ্বয়
তবে মন যোগ হল না বলেই
ভেঙে গেল কম্পাস
বক্ররেখায় সাঁতার শিখল শ্রাবণ
কুমারের ডালিম গাছটির
গর্ভপাতের ঘ্রাণে
আপনি হয়তো চশমা পরবেন
আঙুরের ভাটাযৌবন
বা ডালার নিচের রিমিঝিমি ঘুমালে
রম্বসের ষষ্ঠী সীমায়
পঙ্গুরসের ম-ম হাহাকারের সাথে যখন
সংযুক্ত হবে তীর্থ
মাতালের মতো
ছিঁড়ে ফেলবেন সন্ধ্যা
দেখারে আর হবে না দেখা
তবুও জ্যোতিষীর হইহই হারিয়ে যাবে
ডিসকাউন্ট প্যাকেজে বিলুপ্তবেগ
বিক্রি শেষেও
আপনার ভিতরে আপনিই ছিলেন
দূরের-দান্তে একটা দরিয়ায়
দাঁতের ঝকমক ঠোঁটে ভিড়লে
রসের ব্যাকরণ পড়ে নেবেন
আগের পরে ও পরের আগে
রসের গ্লাস যে আপনারই হাতে!
কাঁচামাটির আকর্ষণ
আমি মূলক আমার সমগ্রের সাথে
মৃত্যুর মতো কারও খুব হচ্ছে
মধ্যবর্তী লোকাল এক্সপ্রেসের
অত্যাচারিত জ্বালানির ধোঁয়ায়
রিক্তবমির ব্যধির কথা চেকিং মাস্টার
জানেন না
যদিও বক্ষব্যধি সদনালয় উন্মুক্ত
উদাম পকেটের জন্য
তবু ঐতিহ্যের চশমা বাজারজাত নিষিদ্ধ
এই হাটেও ঋষির টালিখাতায় তাই কোনো বায়না হল না
কাঁচামাটির অকারণ আকর্ষণে মাটির মতো কেউ
মাটি হল বেগুনি রাতে
স্লিপিং পিলের শীৎকার
দোতালা এক্সপ্রেসে টিকটিকির শীৎকার
মেঘ-মেঘ গন্ধে স্টার্ট না নিয়েও ফুরিয়ে যায় পথ
একটা চুলের বাঁধেই হিমালয় হয় না দেখা
স্লিপিং পিলে করধার্য না হলে
পুটিমাছগুলো সমুদ্র সাঁতরাতেই পারতো
উড়ে যেত বাওবহর
তাহাদের বারান্দায় শনশন করে সুন্দর
হেলে যাওয়া রাত আসে হিজাব পরে
তোশকের নিচে তাই লুকিয়ে রাখে চন্দ্রমুখীর গন্ধ
ব্রান্ডের হ্যান্ডওয়াশ ধুতে থাকার কালিমা পরে
নতজানু তাদের আক্রমণ করে না
সৌরভের সুনজর থাকায়
উপসনালয়ের প্রথম সারিতে তারাই শ্রেষ্ঠ কর্তা
কাশ্মীরি সালের ওমে আইসক্রিম চিবানো দাঁত
এমন মুখোশের ফিলোসফি আওড়ায়
মায়েদের ম-খুলে যায়
তাহারাই শুধু হিংচিং খেলে থালাভরা
পৃথিবীর রঙে
সানগ্লাসের বাজার চড়া হয়
চোখগুলো ভোগে নজরশূন্যতায়
ছায়ার রাজ্যে তবু তুমিই হও বর্তমান