কালীগঞ্জে সম্প্রীতির মিলনমেলা শ্রী শ্রী কানাইলাল মন্দিরে কুঞ্জমেলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ১৫:৪৫ | প্রকাশিত : ০৭ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:১২
কুঞ্জমেলা

১০১ বছরে পা রাখল গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কানাইলাল মন্দির। উপজেলার চুয়ারিয়াখোলা গ্রামে ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে ধর্মীয় প্রার্থনা, বিভিন্ন পূজা, ধর্মীয় সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়ে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতি বছরের মতো এবারও রাধা কৃষ্ণের যুগল মিলন (কুঞ্জমেলা) অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে এবার ছিল ব্যতিক্রম সব আয়োজন।

মেলার প্রথম দিন বৃহস্পতিবার ভোর থেকে কৃষ্ণের লীলা কীর্তন শুরু হয়। এদিন ভক্তরা রাধা-কৃষ্ণের পূজা অর্চনায়, কীর্তন, বাদ্যযন্ত্রের বাজনায়, উলুধ্বনি ও জয়ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে মন্দির। কীর্তন পরিচালা করেন শীযুক্ত শীতল চন্দ্র দত্ত। শেষদিন শনিবার সকালেও মেলায় ভিড় লক্ষ করা যায়।

কুঞ্জমেলায় মন্দিরকে সাজানো হয়েছে রঙিন কাগজের নকশায় এবং বাহারি রঙের ফুলে, যা ভক্তদের এক নিমিষেই আকৃষ্ট করবে। মন্দিরের ফটক থেকে শুরু করে সম্পূর্ণ রাস্তা বর্ণিল সাজে সাজানো হয়। এছাড়া চোখে পরে হাতের কারুকাজ এবং ফুল দিয়ে তৈরি হাতের নকশা।

ভক্তরা জানান, রাধাকৃষ্ণের যুগল মিলন (কুঞ্জমেলা) সম্প্রীতির এক মিলন মেলা। মেলায় হিন্দু, খ্রিস্টান ও মুসলিমদের অসাম্প্রদায়িক চেতনার বহিঃপ্রকাশ। সবাই উৎসবমুখর পরিবেশে মেলায় অংশগ্রহণ করে।

এছাড়া পিটার গমেজ ঢাকাটাইমসকে জানান, এই কুঞ্জমেলা আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। এই মেলা এলেই আমরা ছোটাছুটি করে বাবা-মার সঙ্গে মেলা করতে আসতাম এবং এখনো আসি। এই মেলা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা আয়োজন করলেও আমরা নিজেদের মেলাই মনে করি। কুঞ্জমেলা এই এলাকার অসাম্প্রদায়িকতা সম্প্রীতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।

কুঞ্জমেলাকে কেন্দ্রে করে ব্যবসায়ী এবং আমজনতা নানা পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে। মিষ্টি, জিলাপি, তিলা-বাতাসা, নিমকিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য, কুটিরশিল্প, খেলনাসহ বিভিন্ন পণ্যের সমাহার ঘটে মেলায়।

ছোটদের আনন্দদানের জন্য মেলায় থাকে নাগরদোলা। মেলা উপলক্ষে জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সবার মিলন মেলায় পরিণত হয় স্থানটি। মেলা বাঙালি জাতির ঐতিহ্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

তুমলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আবুবকর বাক্কু মিয়া ঢাকাটাইমসকে বলেন, কুঞ্জমেলা ঐতিহ্যগত মেলা প্রতিবছর শ্রী শ্রী কানাইলাল মন্দির কমিটির সদস্যরা এই মেলা আয়োজন করে থেকে। আমিও সব সময় এই মেলায় উপস্থিত থাকার চেষ্টা করি।

এখানে দ্বিতীয় দিন বসে মাছের বিরাট মেলা। প্রতি ঘরে ঘরে মেলা থেকে কিনে নেওয়া হয় মাছ বাড়িতে আগত অতিথি আপ্যায়ন ও নিজেদের জন্য। তাছাড়া এই মেলাকে ঘিরে এলাকার জামাইদের মধ্যে চলে এক নীরব প্রতিযোগিতা। আর এই প্রতিযোগিতাটি হচ্ছে কোন জামাই সবচেয়ে বড় মাছটি কিনে শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যেতে পারেন। তাই কেউ কেউ জামাই মেলাও বলে থাকেন।

কুঞ্জমেলা উদযাপনকে সামনে রেখে মেলার দ্বিতীয় দিনে আকর্ষণীয় লটারির ড্র আয়োজন করা হয়। এতে ৮০টি আকর্ষণীয় লটারির পুরস্কার বিজয়ীর নাম ঘোষণা করে হয়। আকর্ষণীয় লটারি ড্র ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কালীগঞ্জ থানা আওয়ামী যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুয়ার রশিদ টিপু এবং মন্দির কমিটির সভাপতি মুকুল চন্দ্র দে-সহ অনান্য মান্যগণ্য ব্যক্তি বর্গ।

(ঢাকাটাইমস/৭জানুয়ারি/এনএস/বএআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :