ই-কমার্সে প্রতারণা ঠেকাতে সিসিএমএস প্ল্যাটফর্মে কদিনেই শত শত অভিযোগ
অনলাইন কেনাকাটায় প্রতারিত ভোক্তাদের প্রতিকারে ‘সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ (সিসিএমএস) নামে যে প্ল্যাটফর্ম হয়েছে, সেটি চালুর কদিনের মধ্যেই তাতে জমেছে শত শত অভিযোগ।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সিসিএমএস প্ল্যাটফর্ম উদ্বোধন করেন বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি। নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে একজন ভোক্তা সিসিএমএস ডটগভট ডটবিডি (ccms.gov.bd) পোর্টালে ই-কমার্স সংক্রান্ত যে কোনো ‘যৌক্তিক’ অভিযোগ দিতে পারেন।
জানা গেছে, প্ল্যাটফর্মটি চালুর পর গত ১০ দিনে জমা পড়েছে শত শত অভিযোগ। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অভিযোগই নিষ্পত্তি হয়নি। তবে প্রক্রিয়া অনুযায়ী অভিযোগ নিষ্পত্তির কাজ চলছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হেড অব ইকমার্স এটুআই (A2I) রেজাউনুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা এই সিসিএমএস প্ল্যাটফর্ম ভোক্তা অধিকারের কাছে হস্তান্তর করেছি। অফিসিয়াল ডাটা তারাই ভালো বলতে পারবেন। আমরা শুধু টেকনিক্যাল জিনিসটা তৈরি করে দিয়েছি।’
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, সিসিএমএস প্ল্যাটফর্মে জমা পড়া অভিযোগের সমাধান দেয়ার দায়িত্ব ভোক্তা অধিকারের। ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে মিলে ভোক্তা অধিকারকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ সহযোগিতাও দেয়া হচ্ছে।
কত অভিযোগ আর কয়টা নিষ্পত্তি হলো জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের হেড অব ই-কমার্স এটুআই (A2I) রেজাউনুল হক ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘যেহেতু আমাদের এই প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন এখনও ১৫ দিন হয়নি, তাই ১৫ দিন পার হলে তারপর বলা যাবে।’
জানা গেছে, দেশের যে কোনো জায়গা থেকে এই প্লাটফর্মে অভিযোগ জমা দেয়া যায়। সাধারণত সব বিভাগীয় পর্যায়ে ভোক্তার অফিস আছে। তবে ইউনিয়ন পর্যায়ে বসেও ডিজিটাল শুনানিতে অংশ নেয়া যাবে। শুনানিতে অভিযুক্ত ইকমার্স প্রতিষ্ঠানের কেউ উপস্থিত না হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কেউ যদি হয়রানিমূলক অভিযোগ দেয় সেক্ষেত্রে ওই গ্রাহককে সহজে চিহ্নিত করা যাবে। এছাড়া অভিযোগ নিষ্পত্তির অগ্রগতি এসএমএস ও ইমেইলের মাধ্যমে অভিযোগকারীকে জানিয়ে দেয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে এ প্ল্যাটফর্মে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকারের অভিযোগ শাখার সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ হাসানুজ্জামান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে যেটা তৈরি করা হয়েছে, অ্যাকসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) করা হয়েছে। আমাদের নিজেদেরও একটা (সিসিএমএস) আছে সেটার সঙ্গে এটার লিংকেজ হবে।’
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিসিএমএস উদ্বোধনের সময় মন্ত্রী টিপু মুনশি বলেছিলেন, ই-কমার্সে প্রতারণা রোধে এই প্ল্যাটফর্ম চালু করা হয়েছে। ই-কমার্সে সিসিএমএস ভোক্তা, নিয়ন্ত্রক, সমন্বয়ক এবং ই-কমার্স স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করবে বলে আশা রাখেন তিনি।
যেভাবে কাজ করবে সিসিএমএস:
প্রতিটি ই-কমার্স সাইটের সঙ্গে সিসিএমএস প্ল্যাটফর্মটি ইন্টিগ্রেটেড থাকবে। ফলে ভোক্তা খুব সহজেই এটি ব্যবহার করে অভিযোগ দিতে পারবেন। ভোক্তাদের মোবাইল নম্বর ভেরিফিকেশনের মাধ্যমে অভিযোগটি গ্রহণ করা হবে। ফলে কেউ হয়রানিমূলক অভিযোগ করলে ধরা পড়ে যাবেন।
অভিযোগের ক্ষেত্রে গ্রাহক সুনির্দিষ্ট প্রমাণ দাখিল করে সহজেই অভিযোগ দাঁড় করাবেন। অভিযোগ দায়েরের আগে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্সে অভিযোগ করা হয়েছে কিনা এবং কোনো প্রতিকার পেয়েছেন কি না সেটি যাচাই করা হবে।
গ্রাহক যেকোনো সময়ে তার অভিযোগের বিস্তারিত ও অগ্রগতি জানতে পারবেন। অভিযোগ নিষ্পত্তির অগ্রগতি গ্রাহক এসএমএস ও ইমেইল নোটিফিকেশনের মাধ্যমে জানতে পারবেন।
অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান সেটি সমাধানের চেষ্টা না করলে বা দুপক্ষের মধ্যে মতের অমিল হলে সিস্টেম সেটি নিয়ন্ত্রণক সংস্থাকে জানিয়ে দেবে।
(ঢাকাটাইমস/০৩ফেব্রুয়ারি/ডিএম)