সাংবাদিক শামসুজ্জামানের জামিন প্রার্থনা, আটকে রাখার আবেদন পুলিশের

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ৩০ মার্চ ২০২৩, ১২:১৩| আপডেট : ৩০ মার্চ ২০২৩, ১৫:১৭
অ- অ+

প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামস ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দুটি মামলায় জামিনের আবেদন করেছেন। অপরদিকে এ মামলায় তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও রমনা মডেল থানার পরিদর্শক আবু আনছার। আদালত সূত্রে জানা গেছে, দুটি আবেদনের বিষয়ে দুপুরে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

বৃহস্পতিবার সকালে শামসুজ্জামান শামস ঢাকার চিফ মেট্রোপিলটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে নেয় পুলিশ। তাকে আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে।

বুধবার ভোররাত চারটার দিকে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশের আমবাগান এলাকায় শামসুজ্জামানের বাসা থেকে ১৪-১৫ ব্যক্তি নিজেদের সিআইডি সদস্য পরিচয় দিয়ে শামসুজ্জামানের থাকার কক্ষ তল্লাশি করে তার ব্যবহৃত একটি ল্যাপটপ, দুটি মুঠোফোন ও একটি পোর্টেবল হার্ডডিস্ক নিয়ে যান। পরে শামসুজ্জামানকে নিয়ে যান তারা। বুধবার রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাকে আটক বা গ্রেপ্তারের কথা স্বীকার করেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। তবে গতকাল দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, ‘আমি যতটুকু জানি, একটা মামলা হয়েছে।’

পরে জানা গেছে, সৈয়দ মো. গোলাম কিবরিয়া নামের এক ব্যক্তি মঙ্গলবার দিবাগত রাত ২টার দিকে তেজগাঁও থানায় শামসুজ্জামানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেন। বাদী ঢাকার কল্যাণপুরের বাসিন্দা। তিনি যুবলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের ১১ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক।

এদিকে বুধবার মধ্যরাতে প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়। এ মামলায় শামসুজ্জামান শামসকে আসামি করা হয়।

বুধবার রাতে রমনা থানায় মামলাটি করেন আইনজীবী আবদুল মালেক। মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে রমনা থানার পরিদর্শক (নিরস্ত্র) আবু আনছারকে।

এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসে দৈনিক প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে একটি ছবিসহ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। একই সঙ্গে সংবাদটি তাদের ফেসবুক পেজে শেয়ার করা হয়। সংবাদটিতে দেখা যায়, একটি শিশু ফুল হাতে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ফটকে দাঁড়িয়ে আছে। প্রতিবেদকের দাবি, ওই শিশুটির নাম জাকির হোসেন। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, শিশু জাকির হোসেন বলে- ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো।’

পরবর্তীতে ৭১ টিভি চ্যানেলে প্রকাশিত সংবাদে উল্লেখ করা হয়েছে, অনুসন্ধানে দেখা যায় শিশুটির নাম সবুজ আহমেদ। তার বাড়ি সাভার থানার কুরগাঁও পাড়ায়। বাবা একজন রাজমিস্ত্রি, মা মুন্নী বেগমের তিন সন্তানের মধ্যে মেজো সন্তান সবুজ। প্রথম আলোর তথ্যে বলা হয়েছে, সে দিনমজুর। কিন্তু সাতবছরের শিশু সবুজ আহমেদ প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে এবং স্কুল শেষে মাঝেমধ্যে ফুল বিক্রি করে।

এজাহারে আরও বলা হয়, শামসুজ্জামানের প্রস্তুত করা প্রথম আলোর ওই সংবাদে বলা হয়েছে, ‘পেটে ভাত না জুটলে স্বাধীনতা দিয়া কী করুম। বাজারে গেলে ঘাম ছুটে যায়। আমাগো মাছ, মাংস আর চাইলের স্বাধীনতা লাগবো’। প্রকৃতপক্ষে শিশুটি এ ধরনের কোনো কথা বলেনি। শিশুটি জানিয়েছে, প্রথম আলোর সাংবাদিক শিশুর হাতে ১০ টাকা দিয়ে এই ছবি তুলেছে। এতে প্রমাণিত হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি এবং বাংলাদেশের অর্জনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার হীন উদ্দেশ্যে একটি অশুভ চক্র দ্বারা প্রভাবিত হয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য এই মিথ্যা সংবাদ তৈরি ও পরিবেশন করে অনলাইন ও সামাজিক মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। যার ফলে দেশের অভ্যন্তরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতির সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৩০মার্চ/এফএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
স্ত্রীর বাড়ি ছাড়ার গুঞ্জন নিয়ে যা বললেন শামীম
ঐক্যবদ্ধ শাহবাগ বিএনপির অপেক্ষায়: সারজিস
ভারত-পাকিস্তান সংঘাত: বিমানের টরেন্টো, রোম ও লন্ডন ফ্লাইটের সময় পরিবর্তন
প্রাইমএশিয়ার শিক্ষার্থী পারভেজ হত্যা: আলোচিত তরুণী টিনা ৩ দিনের রিমান্ডে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা