কালিয়াকৈরে সেতুর অভাবে পারাপারে দুর্ভোগ পাঁচ গ্রামবাসীর
গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ছোট একটি সেতুর অভাবে নদী পারাপারে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে পাঁচটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। চলাচলের সড়ক থাকলেও নদীর ওপর সেতু না থাকায় নদী সাঁতরে পার হয় গ্রামের লোকজন। এতে দেখা দিয়েছে তীব্র জনদুর্ভোগ।
সূত্রাপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সোলাইমান হোসেন মিন্টু জানান, ছোট একটি সেতুর জন্য গ্রামবাসীর চলাচলে ভোগান্তি হচ্ছে। বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে শিগগির পদক্ষেপ নেয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কালিয়াকৈর উপজেলার সূত্রাপুর ও শ্রিফলতলী ইউনিয়নের মধ্যবর্তী বামন্দহ গ্রামে প্রবাহমান বংশাই নদীর উপর সেতু না থাকায়, বামন্দহ, ভাওমান টালাবহ, বৃঙ্গরাজ গ্রামসহ দুটি ইউনিয়নের পাঁচ গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান ওই সড়কে চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। শুষ্ক মৌসুমে বংশাই নদীর পানি কমে গেলে নদী সাঁতরে পারাপার হয় গ্রামবাসীরা। আর বর্ষায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়ে। এর ফলে ওই অঞ্চলের বাসিন্দাদের জীবনযাত্রার মান অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে। পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গ্রামবাসী। গ্রামের কচিকাঁচা থেকে শুরু করে বৃদ্ধ লোকজন চরম ঝুঁকি নিয়ে নদী সাঁতরে পারাপার হয়। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া কোমলমতী শিক্ষার্থীরাও চরম দুর্ভোগে চলাফেরা করে।
ওই এলাকার ভুক্তভোগী বাসিন্দা শিপন হোসাইন ঢাকাটাইমসকে জানান, গ্রামে কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিতে হলে গাড়ি করে নেয়া যায় না। তাকে নদী সাঁতরে পার করে নিতে হয়। স্কুল-কলেজের শিশুরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে নদী সাঁতরে পার হয়। গ্রামে কোন আত্মীয়-স্বজন এলেও তাদের নদী সাঁতরে পার হতে হয়। এটা যে আমাদের গ্রামের কত বড় দুর্ভোগ- তা শুধু আমরাই বুঝি।
গ্রামের শিক্ষার্থী সুমন হোসেন, সোমাইয়া, রবিউল জানায়, আমরা প্রতিদিন এখান দিয়ে স্কুলে যাই। মাঝে মাঝে কেউ কোলে তুলে পার করে দেয়। আবার যখন কেউ না থাকে, তখন ভিজে ভিজে যাই। আমরা এখানে একটি ছোট ব্রিজের দাবি জানাই।
এলাকাবাসীর এমন জনদুর্ভোগের ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বাংলাদেশ মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সদস্যরা। কালিয়াকৈর উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন হান্নান জানান, সারাদেশে উন্নয়নের জোয়ার বইছে। জীবনযাত্রার মান অনেক এগিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যোগাযোগব্যবস্থা ভালো না থাকায় এই গ্রামের মানুষের ভাগ্যের চাকা ঘুরছে না। আমরা দাবি জানাই, দ্রুতই এই গ্রামের বাসিন্দাদের চলাচলের জন্য নিরাপদ সড়ক ও বংশাই নদীর উপর একটি সেতু স্থাপন করা হোক।
কালিয়াকৈর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কামাল উদ্দিন সিকদার জানান, কালিয়াকৈরে কোন এলাকা অবহেলিত থাকবে না। যেসব এলাকায় সড়ক নেই, সেতু নেই সেসব এলাকায় দ্রুত সেগুলো করা হবে। আমরা ধারাবাহিকভাবে একের পর এক বিভিন্ন এলাকায় উন্নয়নের স্বার্থে কাজ করছি।
(ঢাকাটাইমস/০৭এপ্রিল/এলএ/এসএ)