ওয়াসায় নিয়োগ দুর্নীতি: দুদকের মামলায় ফাঁসতে পারেন তাকসিম
ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তাকসিম এ খানের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অনুসন্ধান পরবর্তী প্রতিবেদনে তাকসিমসহ মোট ১০ জনের বিরুদ্ধে মামলার সুপারিশ করা হয়েছে। দুদকের অনুসন্ধান কর্মকর্তা ও উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম এ প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
দুদক সূত্র জানিয়েছে, ঢাকা ওয়াসা বোর্ডের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ সাত সদস্য এবং চাকরি গ্রহণকারী দুজনকে আসামি করার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
দুদক সূত্র আরও জানায়, ওয়াসার অর্গানোগ্রামে পরিচালক (উন্নয়ন) ও পরিচালক (কারিগর) পদ দুটি না থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটির এমডি প্রভাব খাটিয়ে দুজনকে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছেন বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে। এই দুই কর্মকর্তাকে চার বছরের বেশি সময়ে বেতন বাবদ এক কোটি ৯৮ লাখ ৬৫ হাজার ৯৮০ টাকা দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ হওয়ায় এই পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করা হয়েছে।
নিয়মবহির্ভূতভাবে নিয়োগ দেওয়া দুই কর্মকর্তা হলেন— পরিচালক (উন্নয়ন) মো. আবুল কাশেম ও পরিচালক (কারিগর) একেএম সহিদ উদ্দিন।
ঢাকা ওয়াসার ২৫২তম সভায় এ দুই কর্মকর্তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ওই সভায় সাতজন সদস্য উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন>> হাতিরঝিলে রাজউকের হাঁসে কতটা লাভ হলো জীব বৈচিত্র্যের?
আরও পড়ুন>>জাতিসংঘে ভুল তথ্য দিয়ে আমন্ত্রণপত্র, অতঃপর মানবপাচার, মিলল চমকপ্রদ তথ্য
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সভায় নিয়োগের পক্ষে মত দিয়েছেন অতিরিক্ত সচিব (অবসরপ্রাপ্ত) সুধাংশু শেখর বিশ্বাস, এফসিএ ভাইস প্রেসিডেন্ট মু. মাহমুদ হোসেন, ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের প্রতিনিধি প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান, ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের সভাপতি প্রকৌশলী একেএম হামিদ, ডিএনসিসির কাউন্সিলর আলেয়া সারোয়ার ডেইজি, ডিএসসিসির কাউন্সিলর মো. হাসিবুর রহমান মানিক এবং ওয়াসার এমডি তাকসিম এ খান।
প্রকৌশলী তাকসিম এ খান ২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে নিয়োগ পান। এর পর একাধিকবার তার নিয়োগের মেয়াদ বাড়ানো হয়। যদিও তিনি গণমাধ্যমে বলেছেন, ‘এমডি পদের চাকরি ছেড়ে দিতে চেয়েছি বহুবার। আমাকে অনুরোধ করে রাখা হয়েছে।’
পদে থাকার এই দীর্ঘ সময়ে তার বিরুদ্ধে বারবার নিয়োগবিধি অমান্য করার অভিযোগ উঠেছে।
এমডিসহ ওয়াসার অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে আরও দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে, যা তদন্ত করছে দুদক।
অভিযোগের মধ্যে রয়েছে- সেবাসংস্থাটির পদ্মা-জশলদিয়া প্রকল্পে প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা, গন্ধর্বপুর পানি শোধনাগার প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকা, দাশেরকান্দি পয়ঃশোধনাগার প্রকল্পে এক হাজার কোটি টাকা, গুলশান-বারিধারা লেক দূষণ প্রকল্পে ৫০ কোটি টাকার অনিয়ম-দুর্নীতি। দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম এসব অভিযোগ অনুসন্ধান করছেন।
তাকসিম এ খান একাধিকবার সংবাদ সম্মেলন করে ‘এক টাকাও হারাম খাননি’ বলে দাবি করেছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৪মে/এফএ)