কোরবানির জন্য প্রস্তুত হচ্ছে সোয়া কোটি পশু

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাক টাইমস
  প্রকাশিত : ০৭ জুন ২০২৩, ০৮:৩৩
অ- অ+

প্রতি বছর কোরবানি ঈদের জন্য প্রায় এক কোটি পশু দরকার। তার মধ্যে কমপক্ষে ৯৭ থেকে ৯৮ লাখ পশু কোরবানি করা হয়। সামনে জাতীয় দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে আসছে কোরবানিতে অনেকেই একাধিক পশু কোরবানি করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তাই এবার প্রায় সোয়া কোটি পশু প্রস্তুত করা হচ্ছে।

আগামী ২৮ অথবা ২৯ জুন কোরবানির ঈদ (চাঁদ দেখার উপর নির্ভরশীল) ঈদুল আযহা উদ্যাপিত হবে। এ উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশে প্রায় ১ কোটি ২৪ লাখ গবাদিপশুর শেষ মুহূর্তের পরিচর্যা নিয়ে ৭ লাখ খামারিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। গত বছর ৯৯ লাখ ৫৪ হাজার ৬৬২টি কোরবানিযোগ্য পশু ছিল। গতবারের চেয়ে এবার ২৪ লাখ ৫৪ হাজার ৩৩৮ বেশি রয়েছে কোরবানিযোগ্য পশু। ১ কোটি ২৪ লাখ পশুর সুস্থ ও সবল রাখার জন্য জেলা ও উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা সর্বক্ষণ বিষয়টি তদারকি করছেন।

অন্যদিকে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে সারাদেশের গবাদিপশু গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়া, দুম্বা, উটসহ অন্যান্য পশুর তথ্য সংগ্রহের কাজ ইতোমধ্যে শেষ করেছেন। তাদের গোপন প্রতিবেদন প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে সম্প্রতি জমা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে বিষয়টি জানানো হবে।

বর্তমানে এক বস্তা ভালো মানের গমের ভুষি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ২৫০ টাকায়। কয়েক মাস আগে ছিল ৯৫০ থেকে এক হাজার টাকা। একই ভাবে মাসকলাইয়ের ভুষির বস্তা বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৪৫০ টাকা। দুই থেকে তিন মাস আগেও এর দাম ছিল এক হাজার ১০০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। এক বস্তা খৈল বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার থেকে ৩ হাজার ২০০ টাকা। যা কয়েকমাস আগে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হতো। দাম বেড়েছে শুকনো খড়ের। বর্তমানে এক মণ খড় বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। এ কারণে আসন্ন ঈদে গবাদিপশুর বাজার চড়া থাকতে পারে। তবে পশুর সঠিক মূল্য পাবে কিনা দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছে খামারিরা।

বিদেশ থেকে পশু আমদানি করলে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ক্ষুদ্র খামারিরা একবার ক্ষতিগ্রস্ত হলে তারা আর গবাদিপশু পালন নাও করতে পারেন। তাই চোরাই পথে বা পশু আমদানি না করলে ক্ষুদ্র কৃষকরা লাভবান হবে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে, গত রমজানের ঈদের পর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোরবানির পশুর তালিকা তৈরি করেছেন।

একজন পশু ডাক্তার জানান, রোজার ঈদের পর তারা নিজ নিজ এলাকার খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে ডাটা তৈরির কাজ করছেন। সম্প্রতি এই ডাটা চূড়ান্ত করা হয়েছে। ওই তালিকা প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছেন বলে তারা জানান। পশু চিকিৎসকরা জানান, শেষ মুহূর্তের মোটাতাজা করার কাজ এখন পুরোদমে চলছে। তবে কেউ পশু মোটাতাজা করতে ক্ষতিকর ওষুধ সেবন করাচ্ছে কি না তারও খোঁজ নেয়া হচ্ছে।

লক্ষ্মীপুর জেলার আয়নাল হোসেন নামে একজন পশু খামারি মুঠোফোনে জানান, তাদের বাড়িতে কোরবানির জন্য ৩০টির বেশি গরু আছে। তবে পশু খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় তারা দুশ্চিন্তায় আছেন। ১৪শ’ টাকার পশু খাদ্য এখন ৩২শ’ থেকে ৩৩শ’ টাকা। আবার ওষুধের দামও আকাশছোঁয়া। তাই গরুর দাম এইবার অনেকে বেশি হতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের একজন কর্মকর্তা বলেন, জেলায় জেলায় যে ডাটা সংগ্রহ করা হচ্ছে তাতে গরু, মহিষ, খাসি, ভেড়াসহ অন্যান্য প্রাণীর পৃথক সংখ্যা বেরিয়ে আসছে। সারাদেশে গত বছরের হিসাব মতে, ৬ লাখ ৮১ হাজার ৫৩২টি ছোট-বড় খামারি ছিলেন। এই বছর এই সংখ্যা কিছু বাড়তে পারে। অনেক বেকার যুবক ক্ষুদ্র খামার করেছেন। অনেকেই গরু কিনে কোরবানির জন্য পালন করছে।

কোরবানির সময় সবাই যাতে রোগমুক্ত পশু কোরবানি দিতে পারে তার জন্য শহর থেকে জেলা ও উপজেলা পর্যন্ত ভ্যাটেরেনারি মেডিকেল টিম কাজ করছেন। কোরবানির সময় পশু ডাক্তাররা কাজ করবেন। এই নিয়ে এই বছর আগে থেকে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। রোগাক্রান্ত পশু যাতে কোরবানি দিতে না হয় তা নিয়ে প্রাণিসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা এখন কাজ করে যাচ্ছেন। কোরবানির হাটেও পশু চিকিৎসার মেডিকেল টিম থাকবে। টার্গেট রোগমুক্ত পশু কোরবানি দেয়া।

(ঢাকাটাইমস/০৭জুন/আরকেএইচ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
ফের একাধিক প্রদেশে ড্রোন হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান, দাবি ভারতের
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের বাড়িতে আ.লীগ নেতার হামলা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে জনমনে আতঙ্ক
পুশ ইন ঠেকাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার বিজিবির
বিএনপি ক্ষমতায় গেলে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান দলীয়করণ করা হবে না: আমিনুল হক 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা