জবির বর্জ্য অপসারণে প্রতি মাসে দেড় লাখ টাকা দাবি ঠিকাদারের, অযৌক্তিক বলছে সিটি করপোরেশনও

জবি প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ০৯ জুন ২০২৩, ১০:১২ | প্রকাশিত : ০৯ জুন ২০২৩, ০৮:৫২

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) বর্জ্য অপসারণ করতে প্রতিমাসে দেড় লাখ টাকা দাবি করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বর্জ্য সংগ্রহকারী প্রতিষ্ঠানটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ বিষয়ে একটি চিঠি দিয়েছে। তবে খোদ সিটি করপোরেশন বলছে, এই দাবি যুক্তিসঙ্গত নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্জ্য অপসারণের জন্য ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন কখনও কোনো টাকা বা ফি নেয়নি। শুরুর দিকে শাঁখারিবাজার মোড়ে থাকা কন্টেইনারে সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ময়লা নিয়ে ফেলতো। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদের সামনে ময়লার ভাগার রাখা হতো আর রাতে নিয়ে যেতো সিটি করপোরেশনের কর্মচারীরা। পরে কন্টেইনারটি বাংলাবাজার ফুটওভার ব্রিজের নিচে নেয়া হয়। তখন পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কোনো ফি নেয়া হতো না।

আরও পড়ুন>>রাজধানীতে তীব্র পানি সংকট, লোডশেডিংকে দুষছে ওয়াসা

তবে মার্চ মাসে ফি পরিশোধের জন্য চিঠি পাঠায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) ৩৭ নং ওয়ার্ডের বর্জ্য সংগ্রহের জন্য নিবন্ধনকৃত ঠিকাদার সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল।

বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৩৭ নং ওয়ার্ডের অন্তর্ভুক্ত সবসরকারি, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ব্যাংক/বিমা, বাসা-বাড়ি, দোকানপাট থেকে সৃষ্ট বর্জ্য আবর্জনা সংগ্রহ ও অপসারণ করে সেবা দিয়ে আসছে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ভবন থেকে প্রতিদিন গড়ে ৮ গাড়ি (ভ্যান) ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল থেকে প্রতিদিন গড়ে ২ গাড়ি (ভ্যান) করে বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে হলে দাবি করেন তারা। এতে তিনটি গাড়ি ও তার বিপরীতে চালকসহ ৬ জন পরিচ্ছন্নতাকর্মীর প্রত্যেকের প্রতিমাসে ১৫ হাজার টাকা করে মোট ৯০ হাজার টাকা এবং একজন সুপারভাইজারের ২০ হাজার টাকা বেতন বলে দাবি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এছাড়াও ভ্যান গাড়ির রক্ষণাবেক্ষণ ও কর্মীদের নাস্তা বাবদ প্রতিমাসে আরও ১০ হাজার টাকা এবং লাভ হিসেবে আরও ২০ হাজার টাকাসহ মোট ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা দাবি করেছে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল। উদাহরণ হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একটি প্রতিষ্ঠানের চুক্তির কথাও উল্লেখ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

তবে প্রতিষ্ঠানটির এই দাবি যুক্তিসঙ্গত নয় বলে জানিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ফি নির্ধারণ করতে বলেছে ডিএসসিসি। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথাও বলেন ডিএসসিসি কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে জানতে সিকদার ট্রেড ইন্টারন্যাশনালের স্বত্ত্বাধিকারী মোহাম্মদ সালামত হোসেনকে বারবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বাসাপ্রতি ময়লার বিল সর্বোচ্চ ১০০ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছি। তবে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও ঠিকাদার আলাপ-আলোচনা করে ফি নির্ধারণ করবে। প্রয়োজনে সিটি করপোরেশন থেকে প্রতিনিধি দলও থাকবে।’

তিনি বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তুলনা করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ফি দাবি করছে তা কোনোভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদাবি প্রতিষ্ঠান বসে সমঝোতা করে চূড়ান্ত ফি নির্ধারণ করবে।’

এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দপ্তরের সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল হোসেন বলেন, ‘আগে ময়লার জন্য টাকা নেওয়া হতো না। নতুন ঠিকাদার এসে টাকা দাবি করেছে। পরিচ্ছন্নতা কমিটির আহ্বায়কের মৌখিক অনুরোধে একমাস তারা ফ্রিতে বর্জ্য অপসারণ করে। এরপর থেকে ফি প্রদানের জন্য ঠিকাদার চাপ দিতে থাকে। আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অবহিত করেছি। এ ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত নেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কয়েকদিন ধরে তারা ময়লা অপসারণ করছে না। আমি ৩৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরকে বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি ময়লা অপসারণের আশ্বাস দিয়েছেন।’

(ঢাকাটাইমস/০৯জুন/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজধানী বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :