যমুনার পানি বৃদ্ধি, ২৫ বাড়ি নদীগর্ভে

এস.এম. আব্দুল মান্নান, সিরাজগঞ্জ
| আপডেট : ২২ জুন ২০২৩, ১২:৫১ | প্রকাশিত : ২২ জুন ২০২৩, ১২:১৭

নদী ভাঙন চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের কাছে এক আতঙ্কের নাম। শব্দটি শুনলেই চোখের কোণে ভেসে উঠে সব হারানো কিছু অসহায় মানুষের ছবি। প্রতি বছরই চরাঞ্চলে মাইলের পর মাইল জমি নদীগর্ভে চলে যায়।

তেমনি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। ফলে বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী তীরবর্তী চরাঞ্চলের মানুষেরা।

এদিকে পানি বৃদ্ধির কারণে জেলার সদর, চৌহালীর এনায়েতপুর ও শাহজাদপুর উপজেলায় তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে শাহজাদপুর উপজেলার কৈজুরি ইউনিয়নের পাঁচিল গ্রামে অন্তত ২০টি বাড়ি ও অর্ধশত গাছপালা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এসব বাড়িঘরের অসহায় মানুষজন অন্যত্র আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভাঙনের হাত থেকে রক্ষার জন্য দ্রুত ঘরবাড়ি ও আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ায় সচ্ছল কৃষকেরা সহায়-সম্বলহীন হয়ে পড়েছে। রাক্ষসী যমুনার তীব্র ভাঙনে আশ্রয় হারানোর শঙ্কায় দিন কাটছে হাজারো মানুষের।

বৃহস্পতিবার সকালে পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা হার্ড পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি ৩৫ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ৭৫ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে, কাজিপুরের মেঘাই ঘাট ৩০ সেন্টিমিটার বেড়ে বিপৎসীমার ১ দশমিক ৩৫মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এছাড়াও অভ্যন্তরীণ করতোয়া নদীর পানি উল্লাপাড়া পয়েন্টে ৪৪ সেন্টিমিটার এবং বড়াল নদীর পানি শাহজাদপুরের বাঘাবাড়ি পয়েন্টে বেড়েছে ৭০ সেন্টিমিটার।

পাঁচিল গ্রামের মির্জা সরকার, চতুর আলী, আব্দুল আলীম বলেন, দুই দিন আগেও আমাদের বাড়িঘর সব ছিল। আজ নদীতে সব হারিয়ে পথে বসেছি। নদীগর্ভে বাড়িঘর বিলীন হওয়ায় কোথাও যাওয়ার মত অবস্থা নেই তাদের। মাথা গোজার ঠাঁই হারিয়ে তারা এখন ভাসমান মানুষে পরিণত হয়েছে।

পাঁচিল গ্রামের হযরত আলী, শিপলু সরকার ও জয়মালা খাতুন বলেন, ভাঙন এলাকার পাশেই কয়েক মাস আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদাররা হাজার হাজার বালুর বস্তা প্রস্তুত করে ফেলে রেখেছে। কিন্তু ভাঙন শুরু হলেও তা ফেলার ব্যবস্থা না করায় চোখের সামনে তাদের বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেল। তাদের দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না। তারা অবিলম্বে এ ভাঙন রোধে কার্যকরি পদক্ষেপ নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাদিয়া আফরিন বলেন, সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ভাঙন রোধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, উজানের ঢল ও ভারি বৃষ্টির কারণে কয়েকদিন ধরেই যমুনার পানি বাড়ছে। এতে চরাঞ্চলের নিম্নভূমিগুলো প্লাবিত হচ্ছে। ইতোমধ্যে অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানিও বাড়তে শুরু করেছে। পানি আরও ২/৩ দিন বাড়তে পারে। ভাঙন কবলিত এলাকায় জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি চলছে বলে তিনি জানিয়েছেন।

(ঢাকা টাইমস/২২জুন/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :