সিরাজগঞ্জে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ফের চলছে অবৈধ বালু উত্তোলন

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিরাজগঞ্জ
| আপডেট : ২৬ জুন ২০২৩, ১৮:০৬ | প্রকাশিত : ২৬ জুন ২০২৩, ১৭:৩৭

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার কাশিপুরে প্রশাসনকে ম্যানেজ করে আবারও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন শুরু করেছে প্রভাবশালীরা। সংবাদ প্রকাশের ১৫দিন পর বালু উত্তোলন বন্ধ থাকলেও গত ৩দিন ধরে ফের বালু উত্তোলন শুরু করেছে তারা। প্রশাসনের দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঠিকাদার কামনা গ্রুপ জিও ব্যাগে বালু ভর্তি করার জন্য নদী থেকে কামনা গ্রুপের শ্যালো মেশিন চালিত ট্যাংকি নৌকা দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে।

স্থানীয়দের দাবি পানি উন্নয়ন বোর্ডের জিও ব্যাগের কাজ ১২ জুন শেষ হয়েছে। ১৩ জুন থেকে শাহজাদপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র পুত্র বিএনপি নেতা সজীব ও পৌরজনা ইউনিয়নের আনিছের নেতৃত্বে গালা ইউনিয়নের কাশিপুর মৌজার মারজান ফকির গ্রামের যমুনার পূর্বপাড় থেকে অনামিকা, তায়িম ও আন্নাফী লোড ড্রেজার বসিয়ে ভাল্কহেডের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। প্রায় ২০ ভাল্কহেডে মাধ্যমে অবৈধ বালু চলে যাচ্ছে মানিকগঞ্জ, আরিচা, চাঁদপুরে বিভিন্ন পয়েন্টে।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার কাশিপুর মৌজায় নেই কোনো সরকারি ইজারা। তবু দেদারছে ৩টি ড্রেজার দিয়ে দিনরাত অবৈধভাবে বালু উত্তোলন চলছে। একদিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে, অন্যদিকে শাহজাদপুরের যমুনা নদীর তীরে দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন।

বালু উত্তোলনের ফলে গত কয়েক দিনে শাহজাদপুরের বেনুটিয়া, কাশিপুর, ব্রাহ্মণগ্রাম, আরকান্দি, বাঐখোলা এলাকায় দেখা দিয়েছে তীব্র ভাঙন। ভাঙনের মুখে অনেকে সরিয়ে নিচ্ছে বসতঘর।

গত ২২ মে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল ও গণমাধ্যমে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে সংবাদ প্রচারিত হওয়ার পর শাহজাদপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান ঘটনাস্থলে গিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ করে দেন।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার যমুনা নদীতে সরকারিভাবে কোনো বালুমহল ইজারা না হওয়া সত্ত্বেও কিছু চিহ্নিত বালু দস্যু সাবেক মেয়রপুত্র সজীব, আনিছ, মান্নান, হিরক, নাসির গং ড্রেজার বসিয়ে ভাল্কহেডের মাধ্যমে দিনে ও রাতে কাশিপুর মৌজার মারজান ফকিরপাড়া গ্রামের যনুনা নদীর পূর্বপাড়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছেন।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন অব্যাহত থাকলে বেনুটিয়া ও কাশিপুর গ্রামের ফসলি জমি, বসতবাড়ি, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, পাকা রাস্তা ও সরকারি স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হতে চলেছে। এ অবস্থা চলমান থাকলে এলাকাবাসী সর্বস্বান্ত হয়ে পথে বসবে।

অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের বিষয়ে অভিযুক্ত আনিছকে প্রশ্ন করা হলে, তিনি শাহজাদপুরে চা খাওয়ার দাওয়াত দিয়ে মোবাইল ফোন কেটে দেন।

শাহজাদপুরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) লিয়াকত সালমান বলেন, শাহজাদপুরের যমুনা নদীতে বালু উত্তোলনের কোনো সুযোগ নেই। অভিযোগের আলোকে কাশিপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করেছি। আবারও যদি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া আফরিন জানান, মে মাসের শেষের দিকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা হয়েছিল। আবারোও যদি বালু উত্তোলন শুরু করলে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :