কলাপাড়ায় দেশীয় জাতের মাছ বিলুপ্তির পথে, প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২২ আগস্ট ২০২৩, ১২:৫৯

পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা ব্যাপী দেশীয় জাতের মাছ ধ্বংসের মহোৎসব চলছে। এ উৎসবে মেতেছে খাল-বিলের মৌসুমী জেলেরা। ধ্বংস যজ্ঞের প্রধান অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে, চায়না দূয়ারী, বুচনা, ভোডা, ভেশন ও কারেন্টসহ নাম না জানা অসংখ্য জাল। এখনই ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হবে বলছেন সচেতন মহল ও মৎস্য গবেষকরা। তাই প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি বলে মনে করছেন তারা।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা যায়, সদ্যজন্ম নেওয়া ছোট ছোট দেশীয় মাছের পোনায় সয়লাব শহর ও গ্রামীণ মাছের বাজার। এর মধ্যে রয়েছে সিং, মাগুর, কই, টাকি, পুটি, ভেদা, শোল ও বোয়ালসহ নানা জাতের মাছ। সবচেয়ে বেশি রয়েছে টেংরা মাছের পোনা। প্রতিটি মাছের চটে কারি কারি ছোট টেংরা মাছ। সর্বোচ্চ ৫০ থেকে ২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ওইসব মাছ। কয়েক দিন ধরে প্রতিদিনই এসব মাছ দেখা যাচ্ছে বাজারে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বিক্রেতা বলেন, ‘এ ছোড টেংরা মাছের জালায় অস্থির। জম্মের আনা আনে জাইল্লারা। ২০/ ৩০ টাহা কেজিতেও কেউ কেনতে চায়না। শেষ পর্যন্ত হালাইয়াও দেওয়া লাগে।’

কি জাল দিয়ে মাছগুলো ধরছে জানতে চাইলে ছগির (ছদ্মনাম) বলেন, চায়না দূয়ারী এবং বুচনা জালে দিয়ে ভেতর খালে এই টেংরা মাছের পোনাগুলো ধরা পরছে।

বাজারে মাছ কিনতে আসা অবসরপ্রাপ্ত এক সেনা অফিসার মো. আবুল কালাম বলেন, প্রতিদিনই এ সকল মাছ বাজারে দেখছি। এভাবে ছোট মাছ ধ্বংস করা হলে অচিরেই দেশীয় মাছ বিলুপ্ত হবে।

আরও এক ক্রেতা নীলগঞ্জের সাবেক চেয়ারম্যান কামারুজ্জামান শহীদ মাতব্বর বলেন, এভাবে নির্বিচারে দেশীয় ছোট মাছ নিধন হলে ভবিষ্যতে মাছ খুজে পাওয়া মুশকিল হবে। তাই এই মাছ মারতে যে সকল অবৈধ চায়না দূয়ারী, ভোডা, বুচনা জাল ব্যবহার করছে তার দৌরাত্ম বন্ধে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ জরুরি।

নাগরিক উদ্যোগ আহবায়ক ও কমিউনিস্ট পার্টি কলাপাড়া শাখার সাধারণ সম্পাদক কমরেড নাসির তালুকদার বলেন, বহুকাল ধরে পরিচিত একটি প্রবাদ বাক্য শুনে এসেছি মাছে ভাতে বাঙালি। তবে মাছ শুন্য থালায় সে কথা এখন মানতে নারাজ নতুন প্রজন্ম। ভাতের সাথে মাছ খাওয়া এখন আকাশ কুসুম ব্যাপার। এর প্রধান কারণ নামে-বেনামে অনেক বিদেশি জাল জেলেদের হাতে পৌঁছে নির্বিচারে ছোট মাছ ধ্বংস করছে।

আন্তর্জাতিক মৎস্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান ওয়ার্ল্ড ফিস ইকো ফিস (২) এর সহযোগী গবেষক সাগরিকা স্মৃতি বলেন, চায়না দূয়ারী একটি অবৈধ জাল। এটি অবাধে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। এই জালে দেশীয় মাছসহ বিলুপ্ত প্রায় কচ্ছপ প্রচুর পরিমাণে মারা যাচ্ছে। এখনি এ ধরনের অবৈধ জাল বন্ধ করা না গেলে ভবিষ্যতে দেশীয় প্রজাতির মাছ সহ কচ্ছপ একেবারে বিলুপ্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই এ কাজে সচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রচারণার পাশাপাশি প্রশাসনিক অভিযান জরুরি বলে মনে করেন তিনি।

এ বিষয়ে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, দেশীয় প্রজাতির মাছ রক্ষায় আমরা সারা বছরই কাজ করছি। যে সকল জেলেরা এই ধরনের কাজে লিপ্ত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২২আগস্ট/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :