আরও এক বছর মন্ত্রিপরিষদ সচিব থাকছেন মাহবুব হোসেন, প্রজ্ঞাপন জারি
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনের মেয়াদ আরও এক বছর বাড়াল সরকার। তাকে আরও এক বছরের জন্য নিয়োগ দিয়ে মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও বৈদেশিক নিয়োগ শাখা।
যুগ্মসচিব ড. আশরাফুল আলম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ধারা ৪৯ অনুযায়ী মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেনকে তার অবসরোত্তর ছুটি এবং তদসংশ্লিষ্ট সুবিধাদি স্থগিতের শর্তে আগামী ১৪ অক্টোবর ২০২৩ অথবা যোগদানের তারিখ থেকে পরবর্তী এক বছর মেয়াদে মন্ত্রিপরিষদ সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।’
এতে আরও বলা হয়, এই নিয়োগের অন্যান্য শর্ত অনুমোদিত চুক্তিপত্র দ্বারা নির্ধারিত হবে।
মাহবুব হোসেন চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি দেশের ২৪তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে দায়িত্ব নেন। চাকরির মেয়াদ বাড়ায় আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে-পরের গুরুত্বপূর্ণ সময়টিতে বেসামরিক প্রশাসনের শীর্ষ এ পদাধিকারী সামলাবেন সরকারের অনেক গুরুদায়িত্ব।
প্রশাসনে নিষ্ঠাবান, মার্জিত ব্যবহার, সাবলীল উপস্থাপনা, অত্যন্ত রুচিশীল কর্মকর্তা হিসেবে মাহবুব হোসেনের সুনাম রয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার পর তিনি গণমাধ্যমে প্রত্যয় রেখেছিলেন—চাকরিজীবনে যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছেন, যে জ্ঞান অর্জন করেছেন সেগুলো প্রয়োগ করে তার কাছে সরকারের যে প্রত্যাশা তা পূরণ করার চেষ্টা করবেন।
প্রশাসনের একাধিক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ঢাকা টাইমসের কাছে মাহবুব হোসেনের সততা ও নীতিনিষ্ঠার প্রশংসা করেছেন। তারা বলেন, তিনি (মাহবুব হোসেন) সরকারের অত্যন্ত ডায়নামিক কর্মকর্তা। সততা ও নীতিনিষ্ঠায় প্রোজ্জ্বল, চৌকস, কর্মযোগী কর্মকর্তা। তিনি সরকারের যে বিভাগেই কাজ করেছেন দক্ষতা-অভিজ্ঞতার উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন।
মাহবুব হোসেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হওয়ার আগে স্বল্পসময়ের জন্য পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার এই পদে আসেন। গত বছরের ১০ ডিসেম্বর তাকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার। তিনি ২২তম মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। গত ৪ জানুয়ারি বয়স ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ায় নিয়ম অনুযায়ী তাকে অবসরে পাঠানো হয়।
এরপর মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ পদটিতে নিয়োগ পান মাহবুব হোসেন। এর আগে তিনি জ্যেষ্ঠ সচিব হিসেবে দায়িত্ব সামলেছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের। তার আগে দু বছর তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব ছিলেন৷
মাহবুব হোসেন বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের অষ্টম ব্যাচের কর্মকর্তা। ১৯৮৯ সালের ২০ ডিসেম্বর তিনি সরকারি চাকরিতে যোগ দেন। চাকরি জীবনে বিভিন্ন সময়ে তিনি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, পরিকল্পনা কমিশন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন৷
জাতীয় পরিকল্পনা ও উন্নয়ন একাডেমির প্রশিক্ষক, স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের উপ-প্রধান (জেন্ডার), ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের সচিব এবং বাংলাদেশ জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্টের পরিচালক (উন্নয়ন ও পরিকল্পনা) পদেও তিনি কাজ করেছেন৷
বরিশাল রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজ (বর্তমানে বরিশাল ক্যাডেট কলেজ) থেকে মাধ্যমিক এবং বরিশাল বিএম কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর মাহবুব হোসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজ বিজ্ঞানে লেখাপড়া করেন৷
চাকরিতে যোগ দেওয়ার পর যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব নর্থ লন্ডন থেকে এমবিএ এবং অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ইউনিভার্সিটি থেকে জেন্ডার অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিষয়ে স্নাতকোত্তর করেন তিনি৷
বরিশালের মুলাদী উপজেলার পাতারচর গ্রামের সন্তান মাহবুব হোসেন ব্যক্তিজীবনে দুই পুত্রসন্তানের বাবা৷
ঢাকাটাইমস/০৩অক্টেবর/ইএস