ইলিশ পাওয়ার আশায় মেঘনা পাড়ের জেলেদের প্রস্তুতি

চাঁদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ নভেম্বর ২০২৩, ১৭:২৬

মা ইলিশকে নিরাপদে মিঠাপানিতে ডিম ছাড়ার সুযোগ করে দিতে গত ১২ অক্টোবর থেকে পদ্মা-মেঘনা নদীর অভয়াশ্রম এলাকায় চলছে ইলিশসহ সব ধরণের মাছ আহরণের নিষেধাজ্ঞা। যা চলবে আগামীকাল ২ নভেম্বর দিনগত রাত ১২টা পর্যন্ত।

এ সময়ে মাছ আহরণ থেকে বিরত থাকা চাঁদপুরের মেঘনা পাড়ের জেলেরা ব্যস্ত তাদের ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিয়ে। জেলেরা আশা করছেন অভিযান শেষ হলে ভালো ইলিশ পাবেন। কারণ অভিযানের পূর্বেও তারা ইলিশসহ অন্যান্য মাছ পেয়েছেন।

শহরের যমুনা রোড টিলবাড়ী, মোলহেড, সদর উপজেলায় পুরান বাজার রনাগোয়াল, দোকানঘর, বহরিয়া, লক্ষ্মীপুর ও ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের মেঘনা পাড় এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে জেলেদের মাছ ধরার প্রস্তুতি। জেলেরা তাদের জালগুলো প্রস্তুত করছেন।

ইব্রাহীমপুর ইউনিয়নের সাখুয়া গ্রামের জেলে আবদুল মালেক জানান, যখন নদীতে মাছ আহরণ নিষেধ থাকে তখন তিনি জেলেদের জাল মেরামত করার কাজ করেন। ২ নভেম্বর থেকে আবার নদীতে নামবে জেলেরা তাই ভোর থেকেই জাল মেরামত করার কাজে ব্যস্ত তিনি। বয়স হয়ে যাওয়ার কারণে তিনি এখন আর নদীতে নামেন না। দৈনিক হাজিরায় জাল মেরামত করেন।

পার্শ্ববর্তী রামদাসদী গ্রামের জেলে মো. আকবর খান জানান, সরকার মা ইলিশ রক্ষায় যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, তা আমরা মেনেছি। আমরা নদীতে নামি নাই। এখন আল্লাহ যদি কিসমতে রাখে তাহলে ইলিশ পাবো। আর না পেলে ঋণের মধ্যে থাকতে হবে।

আরেক জেলে মো. শাহজাহান জানান, নিষেধাজ্ঞার কারণে কিছুদিন অবসরে ছিলাম। সরকার যে ২৫ কেজি করে চাল দিয়েছে তা পেয়েছি। তবে এই দিয়ে আমাদের সংসার চলে না। এখন আবার ইলিশ ধরার জন্য জালগুলো প্রস্তুত করছি। আশা করছি নদীতে ইলিশ থাকলে পাবো। কারণ অভিযানের পূর্বেও বেশ কিছুদিন আমাদের এলাকার জেলেরা ইলিশসহ অন্যান্য প্রজাতির মাছ পেয়েছে।

এদিকে মা ইলিশ সংরক্ষণের শেষ পর্যায়ে এক শ্রেণির জেলেরা থেমে নেই। তারা প্রতিদিনই প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ইলিশ ধরছে। নৌ-পুলিশ, জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের অভিযানে আটক হচ্ছে জেলেরা। জেলা-জরিমানা করা হলেও মানছে না জেলেরা। বেপরোয়া জেলেরা ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা করছে।

নৌ-পুলিশ চাঁদপুর অঞ্চলের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, জাতীয় সম্পদ ইলিশ রক্ষায় আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। অভিযানে গিয়ে এ পর্যন্ত আমাদের বেশকিছু পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ইলিশ মাছ নিরাপদে ডিম ছাড়লে জেলেরাই আহরণ করবে। তাদেরকে প্রতি অভিযানের পূর্বেই সচেতন করা হয়, কিন্তু নিষেধাজ্ঞা না মেনে অহরহ ইলিশ ধরতে নদীতে নেমে পড়েন জেলেরা।

চাঁদপুর জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. গোলাম মেহেদী হাসান জানান, মা ইলিশ রক্ষায় জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্স গত ১২ অক্টোবর থেকে ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত প্রায় ৪১৫টি অভিযান পরিচালনা করেছেন। মৎস্য আইনে নিয়মিত মামলা ও ৬২টি ভ্রাম্যমাণ আদালতে ২৮৪জন জেলেকে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। আমরা দিন ও রাতে অভিযান অব্যাহত রেখেছি। মা ইলিশ রক্ষা হলে জেলেদেরই লাভ হবে। তারাই পদ্মা-মেঘনায় ইলিশ আহরণ করবে।

(ঢাকাটাইমস/০১ অক্টোবর/ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :