সাগর থেকে সরাসরি জ্বালানি তেল যাচ্ছে মহেশখালী

চট্টগ্রাম ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৭:৪৮

দেশের জ্বালানি নিরাপত্তায় বাস্তবায়নাধীন বড় প্রকল্প ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহ শুরু হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে বঙ্গোপসাগরে ভাসমান জাহাজ থেকে পাইপলাইন ব্যবহার করে জ্বালানি তেল সরাসরি মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে নেওয়া হচ্ছে। এরপর ট্যাংক থেকে পাইপলাইনে করে এসব জ্বালানি পতেঙ্গায় ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) স্থাপনায় নিয়ে আসা হবে।

গত জুনে ‘এমটি হরে’ নামের একটি তেলবাহী জাহাজ থেকে প্রথমবারের মতো এসপিএম দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহের উদ্যোগ নেওয়া হলেও ত্রুটি ধরা পড়ায় সেটি ভেস্তে যায়। ত্রুটি সারিয়ে প্রায় ৫ মাস পর গতকাল ফের পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি তেল সরবরাহের কার্যক্রম শুরু করা হয়। তবে এবার জাহাজ থেকে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে তেল নিতে কোনো ত্রুটি ধরা পড়েনি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

ইআরএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ লোকমান বলেন, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে ‘এমটি গ্যামসানওরো’ নামের একটি তেলবাহী জাহাজ থেকে ক্রুড অয়েল পাইপলাইন দিয়ে সরাসরি স্টোরেজ ট্যাংকে নেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। এসপিএম প্রকল্প দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে এটিই প্রথম জাহাজ থেকে সরাসরি স্টোরেজ ট্যাংকে জ্বালানি তেল নেওয়ার ঘটনা।

তিনি বলেন, এখন পরীক্ষামূলকভাবে সাগরে ভাসমান জাহাজ থেকে ক্রুড অয়েল সরাসরি পাইপলাইনে করে মহেশখালীর স্টোরেজ ট্যাংকে নেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে মুরিং, পাইপলাইন, ইন্টার স্টোরেজ ট্যাংকসহ আনুষঙ্গিক সব যন্ত্রাংশ, স্থাপনা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। সফল কমিশনিং শেষ হলে দেশের জ্বালানি খাতের যুগান্তকারী এ প্রকল্প চালু করা হবে।

সূত্র জানায়- ইন্দোনেশিয়ান পতাকাবাহী মাদার ক্রুড অয়েল ট্যাংকার ‘এমটি গ্যামসানওরো’ ৮২ হাজার মেট্রিক টন এরাবিয়ান লাইট ক্রুড অয়েল নিয়ে গত ২৪ অক্টোবর সৌদি আরবের রাস তানুরে বন্দর ত্যাগ করে। গত ৮ নভেম্বর এটি চট্টগ্রাম বন্দরের জলসীমায় এসে পৌঁছায়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ১৩ দশমিক ১ মিটার ড্রাফট, ২২৮ দশমিক ৬ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৪২ মিটার প্রস্থের এ তেলবাহী জাহাজ থেকে পরীক্ষামূলকভাবে তেল খালাস শুরু হয়।

সূত্র জানায়, বন্দরের অবকাঠামোর সীমাবদ্ধতা এবং কর্ণফুলী নদীর চ্যানেলের নাব্যতা কম হওয়ায় এখন তেলবাহী বড় জাহাজগুলো সরাসরি খালাস করা সম্ভব হয় না। বঙ্গোপসাগরের কুতুবদিয়া চ্যানেলে নোঙর করে ছোট লাইটারেজের মাধ্যমে তেল খালাস করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ১ লাখ মেট্রিক টন অপরিশোধিত তেলবাহী জাহাজ খালাসে ১০-১১ দিন এবং ৩০ হাজার মেট্রিক টন ডিজেলবাহী জাহাজ খালাসে ৪-৫ দিন সময় লাগে।

গতানুগতিক এই পদ্ধতি সময়সাপেক্ষ, ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যয়বহুল হওয়ায় বড় জাহাজ থেকে সরাসরি তেল খালাসের জন্য ‘ইনস্টলেশন অব সিঙ্গেল পয়েন্ট মুরিং (এসপিএম) উইথ ডাবল পাইপলাইন’ শীর্ষক একটি প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। ২০১৫ সালের নভেম্বরে নেওয়া এই প্রকল্পের মাধ্যমে পাইপলাইনে করে জ্বালানি তেল পরিবহনে কক্সবাজারের মহেশখালী থেকে নগরীর পতেঙ্গার মধ্যে সংযোগ তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এসপিএম প্রকল্প চালু হলে বিদেশ থেকে আমদানি করা তেলবাহী জাহাজ থেকে জ্বালানি খালাসে আধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্রবেশ করবে বাংলাদেশ। গভীর সাগরে নোঙর করা ১ লাখ মেট্রিক টন তেলবাহী বড় জাহাজ থেকে জ্বালানি তেল খালাসে সময় লাগবে মাত্র ২-৩ দিন। কমে আসবে তেল চুরি ও সিস্টেম লস, জ্বালানি তেল পরিবহনে নৈরাজ্য এবং সাগরের পানি দূষণের হার। বছরে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের (বিপিসি) সাশ্রয় হবে অন্তত ৮০০ কোটি টাকা।

(ঢাকাটাইমস/০১ ডিসেম্বর/ইএইচ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

সারাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

সারাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :