ঘুস ও জালিয়াতি

হবিগঞ্জে পিডিবির দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, হবিগঞ্জ
| আপডেট : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:৪৬ | প্রকাশিত : ১১ ডিসেম্বর ২০২৩, ১৬:২৯

হবিগঞ্জে ঘুস গ্রহণ করে জাল নথির মাধ্যমে তা দাপ্তরিক প্রক্রিয়ায় উপস্থাপন করার অভিযোগে পিডিবির দুই প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুদক। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন- নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী চাঁদনী আক্তার।

গত রবিবার দুপুরে দুর্নীতি দমন কমিশন হবিগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সাইফুর রহমান হবিগঞ্জের স্পেশাল জজ (সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ) হাসানুল ইসলামের আদালতে এই মামলা দায়ের করেন।

আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদার এর আগে ছাতকের নির্বাহী প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় দুর্নীতির অভিযোগে বদলি হন। তিনি রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার হাতেম খাঁ কলাবাগান গ্রামের মৃত সেলিম সরদারের ছেলে। চাঁদনী আক্তার হবিগঞ্জ শহরের রাজনগর এলাকার শাকিল চৌধুরীর স্ত্রী।

মামলার বিবরণে জানা যায়, রফিক উদ্দিন নামের এক ব্যক্তি বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড হবিগঞ্জ থেকে থ্রি ফেইজ লাইনের বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে ব্যবহার করছিলেন। গত বছরের ৩১ মে তার প্রিপেইড মিটার রিচার্জ না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট উপ-সহকারী প্রকৌশলী চাঁদনী আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি মিটারটি নষ্ট হয়ে গেছে বলে লাইনম্যান দিয়ে খুলে নেন।

তিনি রফিক মিয়াকে বলেন, এ মুহূর্তে নতুন মিটার দেওয়া সম্ভব নয়, সিলেট থেকে মিটার আনতে হবে। জরুরিভাবে মিটার আনতে হলে অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ অন্য কর্মচারীদের ম্যানেজ করতে হবে। এ জন্য তিনি ২ লাখ টাকা ঘুস দাবি করেন। রফিক উদ্দিন ব্যবসায়িক লোকসানের কথা বিবেচনা করে ৮০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন।

গত বছরের ১ জুন রফিক উদ্দিন, তার ভাই নাসির উদ্দিন ও লিয়াকত আলীসহ হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের চাঁদনী আক্তারের অফিস কক্ষে আসেন। এ সময় নতুন মিটার স্থাপনের জন্য লিয়াকত আলী হাত দিয়ে ৬০ হাজার টাকা প্রদান করে। কিন্তু চাঁদনী আক্তার ৮০ হাজার টাকার ১ পয়সা কম হলেও মিটার দিতে পারবেন না বলে দেন। নিরুপায় হয়ে আরো ২০ হাজার টাকা দিতে রাজি হন। চাঁদনী আক্তারের এছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কয়েক লাখ টাকা মাসোয়ারা চাঁদা নেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ঘুস প্রদানকালে নাছির উদ্দিন তার মোবাইলের গোপন ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও ধারণ করেন। যা পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হবিগঞ্জ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তার ঘুস গ্রহণের ভিডিও হিসাবে ছড়িয়ে পড়ে।

হবিগঞ্জ দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট সামছুল হক মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রফিক উদ্দিন নামে এক গ্রাহকের প্রিপেইড মিটার সঠিক থাকার পরও তা নষ্ট বলে প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ঘুস দাবি করেন পিডিবির লোকজন। এ ব্যাপারে ওই গ্রাহকের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে দুদক মামলা দায়ের করেছে। এই মামলা দায়েরের ফলে গ্রাহকরা হয়রানি থেকে রক্ষা পাবেন।

উল্লেখ্য, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন সরদারকে সম্প্রতি সিলেট জেলার ফেঞ্চুগঞ্জে বদলি করা হয়েছে। তবে আরেক অভিযুক্ত উপ-সহকারী প্রকৌশলী চাঁদনী আক্তার এখনও হবিগঞ্জেই বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

(ঢাকাটাইমস/১১ডিসেম্বর/প্রতিনিধি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :