সরকারি প্রতিষ্ঠানই মানছে না পণ্যের সরকারি দাম 

জাফর আহমেদ, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ১৮ মার্চ ২০২৪, ২০:০৯ | প্রকাশিত : ১৮ মার্চ ২০২৪, ১১:১৫

সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে পণ্য বিক্রি করছে না খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। এমন চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের বিপরীত পাশে এমপিদের হোস্টেল ন্যাম ভবন এলাকায়।

ন্যাম ভবন এলাকা, ২২ মানিক মিয়া এভিনিউ উদ্যান উন্নয়ন প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র (আরবান সেলস সেন্টার) চালু করেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। প্রতিষ্ঠানটি কৃষি মন্ত্রণালয় অধীনস্থ। সরকার ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিলে সেই দামে পণ্য বিক্রি করছে না প্রতিষ্ঠানটি। সরকারের দামের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে পণ্য। এই নিয়ে প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা জানান সরকারি প্রতিষ্ঠান হলেও কম দামে পণ্য বিক্রির সুযোগ নেই।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, এমপিদের জন্য বরাদ্দকৃত ভবন এমপি হোস্টেল এলাকায় কোনো কৃষি বাজার নেই। তবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের প্রতিষ্ঠান আছে। তারাও সরকারের নির্ধারিত দামে পণ্য বিক্রি করছে না।

ছোলা বিক্রি করার সরকারি নির্ধারিত দাম ৯৮ টাকা হলেও বিক্রি করা হচ্ছে ১১০ টাক। প্রতি কেজি চিনির মূল্য ১৪০ টাকা কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে ১৫০ টাকায়। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি খুচরা মূল্য ৬৫ দশমিক ৪০ টাকা কিন্তু বিক্রি করা হচ্ছে ৯০ টাকা, মসুর ডাল (উন্নত) খুচরা মূল্য ১৩০ দশমিক ৫০ টাকা হলেও বিক্রি হচ্ছে ১৪০ টাকা, প্রতি পিস ডিম খুচরা মূল্য ১০ দশমিক ৪৯ টাকা বেঁধে দেওয়া হলেও বিক্রি ১২ টাকা করে।

বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) উদ্যান উন্নয়ন প্রদর্শনী ও বিক্রয় কেন্দ্র (আরবান সেলস সেন্টার) ম্যানেজার আব্দুল আজিজ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ন্যাম ভবনে কোনো বাজার নেই। এখানে একটা কৃষকের বাজার আছে, সপ্তাহে শুক্রবার বসে।

সরকার ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে, সেই দামে পণ্য বিক্রি করছেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নির্ধারিত দাম হলো যারা বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি দিয়ে পণ্য বিক্রি করে তাদের জন্য। অন্যান্য দোকানে বা বাজারে যে দামে বিক্রি হয় আমাদের দোকানেও সেই দামে পণ্য বিক্রি হচ্ছে। আামাদের প্রতিষ্ঠানটি সরকারি হলেও কম দামে পণ্য বিক্রির সুযোগ নেই।’

তিনি বলেন, ‘মূলত আমরা কৃষি পণ্যের বীজ কম দামে বিক্রি করি।

গত শুক্রবার কৃষি বিপণন অধিদপ্তর যে ২৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে: মুগ ডালের পাইকারি মূল্য ১৫৮ দশমিক ৫৭ টাকা ও খুচরা মূল্য ১৬৫ দশমিক ৪১ টাকা, মাষকলাই ডালের পাইকারি মূল্য ১৪৫ দশমিক ৩০ টাকা ও খুচরা মূল্য ১৬৬ দশমিক ৪১ টাকা, ছোলার (আমদানিকৃত) ডালের পাইকারি মূল্য ৯৩ দশমিক ৫০ টাকা ও খুচরা মূল্য ৯৮ দশমিক ৩০ টাকা, মসুর ডাল (উন্নত) পাইকারি মূল্য ১২৫ দশমিক ৩৫ টাকা ও খুচরা মূল্য ১৩০ দশমিক ৫০ টাকা, মসুর ডাল (মোটা) পাইকারি মূল্য ১০০ দশমিক ২০ টাকা ও খুচরা ১০৫ দশমিক ৫০ টাকা, খেসারির ডাল পাইকারি মূল্য ৮৩ দশমিক ৮৩ টাকা ও খুচরা মূল্য ৯২ দশমিক ৬১ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এছাড়া পাঙাশ মাছ (চাষের) পাইকারি মূল্য প্রতি কেজি ১৫৩ দশমিক ৩৫ টাকা ও খুচরা মূল্য ১৮০ দশমিক ৮৭ টাকা, কাতল মাছ (চাষের) পাইকারি মূল্য ৩০৩ দশমিক ০৯ টাকা ও খুচরা মূল্য ৩৫৩ দশমিক ৫৯ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

মাংসের মধ্যে গরুর মাংস প্রতি কেজি পাইকারি মূল্য ৬৩১ দশমিক ৬৯ টাকা ও খুচরা মূল্য ৬৬৪ দশমিক ৩৯ টাকা, ছাগলের মাংস পাইকারি মূল্য ৯৫২ দশমিক ৫৮ টাকা ও খুচরা মূল্য ১০০৩ দশমিক ৫৬ টাকা, বয়লার মুরগি পাইকারি মূল্য ১৬২ দশমিক ৬৯ টাকা ও খুচরা মূল্য ১৭৫ দশমিক ৩০ টাকা, সোনালি মুরগি পাইকারি মূল্য ২৫৬ দশমিক ১০ টাকা ও খুচরা মূল্য ২৬২ টাকা। ডিম প্রতি পিস পাইকারি মূল্য ৯ দশমিক ৬১ টাকা ও খুচরা মূল্য ১০ দশমিক ৪৯ টাকা বেঁধে দেওয়া হয়েছে।

এর বাইরে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি পাইকারি মূল্য ৫৩ দশমিক ২০ টাকা ও খুচরা মূল্য ৬৫ দশমিক ৪০ টাকা, দেশি রসুন পাইকারি মূল্য ৯৪ দশমিক ৬১ টাকা ও খুচরা মূল্য ১২০ দশমিক ৮১ টাকা, আদা (আমদানিকৃত) পাইকারি মূল্য ১২০ দশমিক ২৫ টাকা ও খুচরা মূল্য ১৮০ দশমিক ২০ টাকা, শুকনো মরিচ পাইকারি মূল্য ২৫৩ দশমিক ২৬ টাকা ও খুচরা মূল্য ৩২৭ দশমিক ৩৪ টাকা, কাঁচামরিচ পাইকারি মূল্য ৪৫ দশমিক ৪০ টাকা ও খুচরা ৬০ দশমিক ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

সবজির মধ্যে বাঁধাকপি প্রতি কেজি পাইকারি মূল্য ২৩ দশমিক ৪৫ টাকা ও খুচরা মূল্য ২৮ দশমিক ৩০ টাকা, ফুলকপি পাইকারি মূল্য ২৪ দশমিক ৫০ টাকা ও খুচরা মূল্য ২৯ দশমিক ৬০ টাকা, বেগুন পাইকারি মূল্য ৩৮ দশমিক ২৫ টাকা ও খুচরা মূল্য ৪৯ দশমিক ৭৫ টাকা, সিম পাইকারি মূল্য ৪০ দশমিক ৮২ টাকা ও খুচরা মূল্য ৪৮, আলু পাইকারি মূল্য ২৩ দশমিক ৩০ টাকা ও খুচরা মূল্য ২৮ দশমিক ৫৫ টাকা, টমেটো পাইকারি বাজার মূল্য ৩০ দশমিক ২০ টাকা ও খুচরা মূল্য ৪০ দশমিক ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া পাইকারি মূল্য ১৬ দশমিক ৪৫ টাকা ও খুচরা মূল্য ২৩ দশমিক ৩৮ টাকা, খেঁজুর (জাহিদি) পাইকারি মূল্য ১৫৫ দশমিক ৫৩ টাকা ও খুচরা মূল্য ১৮৫ দশমিক ০৭ টাকা, মোটা চিড়া পাইকারি মূল্য ৫২ দশমিক ৭৫ টাকা ও খুচরা মূল্য ৬০ টাকা, সাগর কলা প্রতি হালি পাইকারি মূল্য ২২ দশমিক ৬০ টাকা ও খুচরা মূল্য ২৯ দশমিক ৭৮ টাকা এবং বেসন পাইকারি মূল্য ৯৯ দশমিক ০২ টাকা ও খুচরা মূল্য ১২১ দশমিক ৩০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে রোজার শুরুতেই খেজুর ও চিনির দাম নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। সেসময় প্রতি কেজি অতি সাধারণ মানের খেজুরের ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকা ও প্রতি কেজি চিনির মূল্য ১৪০ টাকা নির্ধারণ করা হয়।

(ঢাকাটাইমস/১৮মার্চ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

সোনার ধানের মায়ায় হাওরে নারী শ্রমে কৃষকের স্বস্তি

উপজেলা নির্বাচন নিয়ে কঠোর বার্তা দেবে আ. লীগ 

গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন: চাহিদা বেড়েছে তরমুজের, ক্রেতা কম ডাবের

গাছ কাটার অপরাধে মামলা নেই 

কথায় কথায় মানুষ পেটানো এডিসি হারুন কোথায়? থানায় ছাত্রলীগ নেতাদের মারধরের তদন্ত কোথায় আটকে গেল?

মজুত ফুরালেই বাড়তি দামে বিক্রি হবে সয়াবিন তেল

কোন দিকে মোড় নিচ্ছে ইরান-ইসরায়েল সংকট

ছাদ থেকে পড়ে ডিবি কর্মকর্তার গৃহকর্মীর মৃত্যু: প্রতিবেদনে আদালতকে যা জানাল পুলিশ

উইমেন্স ওয়ার্ল্ড: স্পর্শকাতর ভিডিও পর্নোগ্রাফিতে গেছে কি না খুঁজছে পুলিশ

জাবির হলে স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে জঙ্গলে ধর্ষণ, কোথায় আটকে আছে তদন্ত?

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :