মোবাইলে গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক্সরে রিপোর্ট দেখে রাফিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ
বন্ধুকে রক্ত দিতে যাওয়ার পথে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের (১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ) শিক্ষার্থী মো. আবু সাঈদ রাফীকে আটক করেছে কুমিল্লা কতোয়ালী থানা পুলিশ। গত ২৯ জুলাই তাকে আটক করা হয়। পরবর্তীতে বিস্ফোরক মামলায় তাকে জেলে পাঠানো হয়েছে।
পরিবারের অভিযোগ, বন্ধুকে রক্ত দিতে যাওয়ার পথে কোটা আন্দালনের মধ্যে পড়ে রাফি গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন। সেগুলো অপারেশনের এক্সরে রিপোর্ট তার মোবাইলে ছিল। এটা দেখে রাফিকে বিস্ফোরক পাওয়ার মিথ্যা মামলায় আটক করেছে। বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও তাকে জামিন করানো যাচ্ছে না।
রাফিকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে তার বোন শামীমা আক্তার বন্যা বলেন, ‘রাফি নিয়মিতই রক্ত দান করতেন। ২৯ জুলাই বন্ধুকে রক্ত দিতে যাচ্ছিলেন। পথেই তাকে আটক করা হয়। আমরা খবর পেয়ে থানায় যাই। রাফি আমাদের বলেছে, পথে প্রথমে তার মোবাইল চেক করে পুলিশ। ফোনে তারা গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক্সরে রিপোর্ট দেখতে পায়। এরপরই তাকে আটক করে কুমিল্লা কোতোয়ালি থানায় নিয়ে যাওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘রাফি কখনও কোনো রাজনৈতিক দলে জড়িত ছিল না। আমরা তাকে ছেড়ে দেয়ার জন্য কর্তব্যরত অফিসারকে অনেক অনুরোধ করেছি। কিন্তু আমাদের কোনো কথাই শোনা হয়নি। ৩০ জুলাই তাকে থানা থেকে কোর্টে পাঠায় এবং কোর্ট জেলখানায় পাঠায়। পরে তার মামলার নথি বের করে সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, পুলিশ নাকি তার সঙ্গে তিনটি ককটেল পেয়েছে। তাকে সম্পূর্ণভাবে একটি মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে।’
রাফির মামলার নথির তথ্য অনুযায়ী, তাকে বিস্ফোরক আইনের ৪ এবং ৬ ধারার অধীনে অভিযুক্ত করা হয়েছে। এছাড়া, তার কলেজ ব্যাগ থেকে সাদা স্কচটেপ দ্বারা মোড়ানো ৩টি ককটেল সদৃশ্য বস্তু উদ্ধারের দাবি করা হয়েছে। জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই কুমিল্লার কোটবাড়ি বিশ্বরোডে পুলিশের গুলিতে আহত হন। এসময় তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে ১১টি ছররা গুলি লাগে। ওই দিন অপারেশন করে ৯টি গুলি বের করা হয়। পরবর্তীতে ২৭ তারিখ এক্সরে করে বাকি ২টি গুলি বের করা হয়।
এই বিষয়ে প্রক্টর ড. কামরুজ্জামান বলেন, তার পরিবারের সাথে কথা বলেছি। তাকে কোর্টে চালান দিয়ে দিয়েছে। এটা আইনি প্রক্রিয়ায় চলে গেছে। আমাদেরকে জানানো হয়েছে কোর্টে চালান দেওয়ার পরে। তাদেরকে বলেছি আইনি কোনো সহায়তা প্রয়োজন হলে আমাদেরকে জানাতে, আমরা সহায়তা করব। প্রয়োজন হলে আমরা কোর্টের সবচেয়ে ভালো যে উকিল তাকে ধরব।
তিনি বলেন, থানায় রাখা অবস্থায় আমাদের জানালে আমরা কিছু করতে পারতাম।
(ঢাকাটাইমস/০২আগস্ট/ইএস)