ভিনিসিয়ুসের নৈপুণ্যে লা লিগায় বড় জয় পেল রিয়াল
ভিনিসিয়ুস জুনিয়রকে নিয়ে প্রায়ই বলা হয় তিনি যতটা না ব্রাজিলের, এরচেয়ে বেশি রিয়াল মাদ্রিদের। কেননা রিয়ালের জার্সি আর ব্রাজিলের জার্সিতে ভিনিসিয়ুসের পারফরম্যান্স আকাশপাতাল! রিয়ালের হয়ে প্রায় প্রতি ম্যাচেই দুর্দান্ত খেলা ভিনিসিয়ুস ব্রাজিলের হলুদ জার্সিটা গায়ে পরলে কেমন যেন ম্লান হয়ে যান।
এবার আরও একবার রিয়ালের জার্সিতে তিনি চেনা নৈপুণ্য দেখালেন। গোলের সঙ্গে করলেন এক অ্যাসিস্টও। এ ছাড়া রদ্রিগো গোয়েস, কিলিয়ান এমবাপ্পে ও দানি কারভাহালের গোলে বড় জয় পেয়েছে রিয়াল।
সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে গতকাল (শনিবার) লা লিগায় এস্পানিওলকে আতিথ্য দেয় কার্লো আনচেলত্তির দল। তার শিষ্যরা এদিনও প্রথমার্ধে ফিনিশিংয়ের সমস্যায় ভোগে। পরে ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে নামানো হয় ব্রাজিল তারকা ভিনিকে। শেষের ঝড়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা এস্পানিওলকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে।
প্রথমার্ধে দুই দলই কাটিয়েছে গোলখরায়। তবে ঠিকই দাপট দেখিয়েছে স্বাগতিক রিয়াল। গোল না পাওয়ার হতাশায় পুড়িয়েছে ফিনিশিং ব্যর্থতার কারণে। শুরুর অর্ধে এডার মিলিটাও ও কিলিয়ান এমবাপের শট ঠেকিয়েছেন এস্পানিওল গোলরক্ষক হুয়ান গার্সিয়া। প্রথমে সপ্তম মিনিটে ডিফেন্ডার মিলিটাওয়ের হেড, এরপর এমবাপে তিন দফায় শট নিয়ে গোলরক্ষকের বাধায় ব্যর্থ হন।
দ্বিতীয়ার্ধেও একইভাবে এমবাপের পাশাপাশি জুড বেলিংহ্যামকে হতাশ করেন গার্সিয়া। এরপরই আক্রমণে উঠে ৫৪তম মিনিটে রিয়ালের জালে বল পৌঁছায় সফরকারী এস্পানিওল। তবে সেটি জড়িয়েছে রিয়ালের আগের ম্যাচের নায়ক গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়ার পায়ে লেগে। স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড কারেয়াসের শট লক্ষ্যে না থাকলেও, কোর্তোয়ার স্পর্শ পেয়ে সেটি জালে জড়িয়ে যায়। একুশ শতকে রিয়ালের প্রথম গোলরক্ষক হিসেবে লা লিগার ম্যাচে আত্মঘাতী গোল করলেন এই বেলজিয়ান তারকা।
চার মিনিট পরই ম্যাচে ফেরে স্বাগতিকরা। এবার তারা প্রতিপক্ষ গোলরক্ষক গার্সিয়ার ভুলে সমতায় ফেরে। প্রথমে বক্সের বাইরে থেকে ফ্রেদরিকো ভালভার্দের জোরালো শট ঠেকান গার্সিয়া, পরে এক ডিফেন্ডারের ভুলে বল পেয়ে বাঁ দিকের বাইলাইনের কাছ থেকে শট নেন বেলিংহ্যাম। বল ধরার চেষ্টায় পারেননি গার্সিয়া, তার হাতে লেগে শরীরের নিচ দিয়ে চলে যায় গোলমুখে। ফাঁকা জালে বল পাঠান কারভাহাল। এরপর বদলি নেমে ৭৫ মিনিটে রদ্রিগোকে বল বাড়ান ভিনিসিয়ুস। ছয় গজ বক্সের মুখ থেকে ডান পায়ে ঠিকানা খুঁজে নেন রদ্রিগো। ৭৮ ভিনি নিজেও গোল পেয়ে যান।
এমবাপের থ্রু বল পেয়ে বক্সে ছুটে গিয়ে বাঁ পায়ের কোনাকুনি নিচু শটে গোলটি করেন এই ২৪ বছর বয়সী তারকা। এবারের লা লিগায় ৬ ম্যাচে তার গোল হলো ৩টি, অ্যাসিস্ট ৪টি। শেষ গোলটি আসে আরেক ব্রাজিলিয়ান এন্ড্রিক ফেলিপের কল্যাণে। তাকে ফাউল করায় ৯০ মিনিটে পেনাল্টি পেয়ে যায় রিয়াল। সফল স্পট-কিকে দলের চতুর্থ গোলটি করেন এমবাপে। এ নিয়ে লা লিগায় ফরাসি অধিনায়ক টানা তিন ম্যাচে পেনাল্টি থেকে গোল করলেন। ২০২২ সালের মার্চ-এপ্রিলে করিম বেনজেমার পর রিয়ালের প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে টানা তিন পেনাল্টিতে গোল করলেন এমবাপে।
এই জয়ে ৬ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে লা লিগার দুইয়ে আছে রিয়াল। ১৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সেলোনা, একটি ম্যাচ কম খেলেছে তারা। দুই মৌসুম মিলিয়ে লা লিগায় এ নিয়ে টানা ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত (২৮ জয়, ১০ ড্র) থেকে রিয়াল মাদ্রিদ স্পর্শ করল রিয়াল সোসিয়েদাদের রেকর্ড। ১৯৭৯ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে লিগে ৩৮ ম্যাচ অপরাজিত (২২ জয়, ১৬ ড্র) ছিল সোসিয়েদাদও। তাদের সামনে আছে কেবল বার্সেলোনা (৪৩ ম্যাচ, ২০১৭-১৮ মৌসুমে)।
(ঢাকাটাইমস/২২ সেপ্টেম্বর/এনবিডব্লিউ)