ঢাকা উত্তর বিএনপির শীর্ষপদে আসছেন কারা?

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি গঠনের আড়াই মাসের মধ্যে ২৯ সেপ্টেম্বর ভেঙে দেওয়া হয়েছে। হঠাৎ করে কী কারণে অকালেই কমিটি বিলুপ্ত হলো তা নিশ্চিত করে না বলতে পারলেও বিলুপ্ত কমিটির শীর্ষ নেতারা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করছেন।
তবে যে কারণেই সাইফুল আলম নীরব এবং আমিনুল হকের নেতৃত্বাধীন কমিটি বিলুপ্ত করা হোক, তাদের দুইজনই অভিজ্ঞতাসম্পন্ন নেতা। বিশেষ করে সাইফুল আলম নীরব তৃণমূল থেকে উঠে আসা পরীক্ষিত নেতা। আমিনুল হকও দীর্ঘদিন মহানগর উত্তর বিএনপির নেতৃত্বে ছিলেন।
শীর্ষ নেতারা বলছেন, কমিটিতে কাকে কাকে নেতৃত্ব দেওয়া হবে, সেটা নিয়ে কাজ চলছে। যেকোনো সময় কমিটি ঘোষণা করবে বিএনপির হাইকমান্ড।
তৃণমূল নেতাকর্মীরা বলছেন, যাদের সাংগঠনিক দক্ষতা বেশি, অভিজ্ঞতা আছে, রয়েছে ক্লিন ইমেজ। যাদের কাছে জনগণের জানমাল ও ইজ্জত নিরাপদ– এমন নেতাকেই নেতৃত্বে আনা উচিত। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে নেতৃত্ব নির্ধারণ করবে বিএনপির হাইকমান্ড।
তাদের দাবি, দলীয় রাজনীতিতে প্রতিপক্ষ থাকে, নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকে। অসুস্থ প্রতিযোগিতা কাম্য নয়। প্রতিপক্ষরা নীরবের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত। তবে আবারো নীরবকে দায়িত্ব দিলে তার অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা দিয়ে উত্তর বিএনপিকে আরও সংগঠিত করতে সক্ষম তিনি।
সাইফুল আলম নীরব ও আমিনুল হকসহ আগের কমিটির অনেকেই আবারো নেতৃত্বে আসতে নিজ নিজ অবস্থান থেকে লবিং চালিয়ে যাচ্ছেন।
এছাড়া মহানগর উত্তর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা এমএ কাইয়ুম, সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, মোস্তাফিজুর রহমান সেগুন ও এ জি এম শামসুল হকের নামও আহ্বায়ক বা সভাপতি হিসেবে শোনা গেছে।
সদস্য সচিব বা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ফয়েজ আহমেদ ফরু, এম কফিল উদ্দিন আহম্মেদ, এস এম জাহাঙ্গীর, শফিকুল ইসলাম মিল্টন, ফখরুল ইসলাম রবিন, গোলাম কিবরিয়া মাখন ও এবিএম রাজ্জাক, আক্তার হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে।
যুবদল এবং ছাত্রদলের সাবেক দায়িত্বশীল নেতাও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির দায়িত্ব পেতে পারেন বলেও একাধিক সূত্র জানায়।
সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক সাইফুল আলম নীরব ঢাকা টাইমসকে বলেন, “আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি আমার কারণে কমিটি ভাঙা হয়নি। কারণ আমার বিষয়ে আমি শতভাগ অবগত। আমার বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ যেসব অভিযোগ করেছেন তা অবাস্তব এবং বায়বীয়।”
দলের সিনিয়র নেতারা বলছেন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণে সাংগঠনিকভাবে দক্ষ অসংখ্য নেতা রয়েছেন। সে তুলনায় উত্তরে নেতা কম। তাই দক্ষ নেতার হাতেই নেতৃত্ব তুলে দিতে হবে।
ঢাকা মহানগর উত্তরের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মোয়াজ্জেম হোসাইন মতি ঢাকা টাইমসকে বলেন, “যাদের ইমেজ ক্লিন, অভিজ্ঞতা ও সাংগঠনিক দক্ষতা আছে এমন নেতৃত্ব নেতাকর্মীরা চায়। নিশ্চই হাইকমান্ড মাঠের নেতাকর্মীদের কাছে গ্রহণযোগ্য নেতাকে নেতৃত্ব দেবেন। এক্ষেত্রে সাইফুল আলম নীরব বা এমএ কাইয়ুম নেতৃত্বে আসতে পারেন।”
তিনি বলেন, “আমাদের ত্রুটিবিচ্যুতি ছিল। ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে ভূমিকা পালন করতে পারিনি, সেজন্য হয়েতো কমিটি ভেঙে দেয়া হয়েছে।”
কফিলউদ্দিন আহম্মেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, “তিন যুগ থেকে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এমন কোনো জায়গা নেই নেতাকর্মীদের পাশে থাকিনি। সব কিছু বিবেচনা করে দল আমাকে মূল্যায়ন করবে বলে বিশ্বাস করি।”
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, “কমিটি গঠনের কাজ চলছে। শিগগির ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির নতুন কমিটি ঘোষণা করা হবে।”
(ঢাকাটাইমস/১৩অক্টোবর/জেবি/এফএ)

মন্তব্য করুন