বিপিএলের প্লে-অফ: কোন দলের সামনে কী সমীকরণ

গত ৩০ ডিসেম্বর পর্দা উঠেছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ-বিপিএলের ১১তম আসরের। দেখতে দেখতেই শেষ পর্যায়ে এসে পৌঁছেছে এবারের বিপিএল। ঢাকা, সিলেট, চট্টগ্রাম হয়ে বিপিএল আবার ফিরেছে ঢাকায়। লিগ পর্বের ৪২ ম্যাচের মধ্যে ইতিমধ্যে ৩২টি ম্যাচ শেষ হয়েছে।
লিগ পর্বের শেষ ১০টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল (রবিবার) থেকে শনিবার পর্যন্ত মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। কারা যাচ্ছে শেষ চারে- এমন একটা কৌতূহল নিয়েই শুরু হচ্ছে বিপিএলের শেষ ঢাকা পর্ব।
ঢাকা ও সিলেটে অপরাজিত থাকা রংপুর রাইডার্স চট্টগ্রামে এসে আসরে প্রথম হারের স্বাদ পেয়েছে। তার পরও পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষস্থানটি ধরে রেখেছে তারা। অন্যদিকে ঘরের মাঠে দুই ম্যাচ জেতা সিলেট স্ট্রাইকার্স চট্টগ্রাম পর্বে ছিল জয়হীন। তাতে পয়েন্ট টেবিলের তলানিতে চলে গেছে স্ট্রাইকার্সরা।
গ্রুপ পর্বের আর ১০ ম্যাচ বাকি থাকলেও সেরা চার নিশ্চিত হয়েছে কেবল মাত্র একটি দলের। ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংস প্লে-অফের দৌড়ে অনেকটা পথই এগিয়ে গেছে। তবে বাকি একটা জায়গার জন্য বেশ লড়াই হবে অন্য দলগুলোর মাঝে। আসুন দেখে নেয়া যাক, প্লে-অফে ওঠার জন্য প্রতিটি দলের কী করতে হবে।
রংপুর রাইডার্স (৯ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট)
রংপুর রাইডার্স প্রথম ৮ ম্যাচ জিতে প্লে-অফ পর্ব নিশ্চিত করেছে। এখন তাদের লক্ষ্য শীর্ষ দুইয়ে থেকে কোয়ালিফায়ারে খেলা। আর একটি ম্যাচ জিতলেই এই লক্ষ্য পূরণ হবে। যদি আরও দুটি ম্যাচ জিততে পারে, তবে বিপিএল ইতিহাসে এককভাবে সর্বোচ্চ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফে খেলার রেকর্ড গড়বে।
রংপুরের বাকি তিন ম্যাচের প্রতিপক্ষ: রাজশাহী, চিটাগং এবং খুলনা।
ফরচুন বরিশাল (৮ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট)
বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল প্লে-অফে ওঠার জন্য সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তাদের আরও একটি ম্যাচ জিতলেই প্লে-অফ নিশ্চিত হবে। তবে দু’টি ম্যাচ জিতলে কোয়ালিফায়ারে খেলা নিশ্চিত হবে।
বরিশালের বাকি চারটি ম্যাচ: সিলেট, খুলনা, ঢাকা এবং চিটাগংয়ের বিপক্ষে।
চিটাগং কিংস (৯ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট)
চিটাগং কিংস প্লে-অফ নিশ্চিত করতে আরও দুটি ম্যাচ জিততে হবে। একটি ম্যাচ জিতলেও তাদের এলিমিনেটরে যাওয়ার সুযোগ থাকবে, তবে সেক্ষেত্রে নেট রান রেট বিবেচ্য হবে। ইতিমধ্যে তাদের নেট রান রেট (+১.০৪৫) ভালো অবস্থানে রয়েছে।
তাদের বাকি তিনটি ম্যাচ: রংপুর, বরিশাল এবং সিলেটের বিপক্ষে।
খুলনা টাইগার্স (৯ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট)
খুলনা টাইগার্স প্লে-অফে উঠতে হলে বাকি তিনটি ম্যাচই জিততে হবে। যদি দুটি ম্যাচ জিততে পারে, তবে রাজশাহীর কমপক্ষে একটি ম্যাচে হার কামনা করতে হবে।
খুলনার বাকি তিনটি ম্যাচের প্রতিপক্ষ: রংপুর, বরিশাল এবং ঢাকা।
দুর্বার রাজশাহী (১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট)
রাজশাহীকে প্লে-অফে উঠতে হলে বাকি দুটি ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিততে হবে। পাশাপাশি খুলনাকে একাধিক ম্যাচে হারতে হবে।
রাজশাহীর পরবর্তী দুটি ম্যাচের প্রতিপক্ষ: রংপুর এবং সিলেট।
ঢাকা ক্যাপিটালস (১০ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট)
ঢাকা ক্যাপিটালস প্লে-অফের দৌড়ে টিকে আছে, তবে তাদের সম্ভাবনা অনেকটা নির্ভর করছে অন্য দলের ফলাফলের ওপর। নিজেদের শেষ দুটি ম্যাচ বড় ব্যবধানে জিততে হবে এবং খুলনা ও রাজশাহীর পয়েন্ট ১০-এর বেশি না হওয়ার প্রার্থনা করতে হবে।
ঢাকার পরবর্তী ম্যাচ দুটি: বরিশাল এবং খুলনার বিপক্ষে।
সিলেট স্ট্রাইকার্স (৯ ম্যাচে ৪ পয়েন্ট)
সিলেট স্ট্রাইকার্স প্লে-অফে উঠতে হলে অলৌকিক কিছু ঘটতে হবে। তাদের বাকি তিনটি ম্যাচই বড় ব্যবধানে জিততে হবে। পাশাপাশি, অন্যান্য দলের পয়েন্ট যেন ১০-এর বেশি না হয়, সেই প্রার্থনা করতে হবে।
সিলেটের পরবর্তী তিনটি ম্যাচের প্রতিপক্ষ: বরিশাল, রাজশাহী এবং চিটাগং।
প্রসঙ্গত, সাত দলের বিপিএলে ১০ পয়েন্ট পেয়েও প্লে–অফে ওঠার নজির আছে একটিই। ২০১৩ সালের আসরে ১০ পয়েন্ট নিয়েও শেষ চারে জায়গা করে নিয়েছিল দুরন্ত রাজশাহী। সেবার রাজশাহীর সঙ্গে রংপুর রাইডার্স ও বরিশাল বার্নার্সেরও পয়েন্ট ছিল সমান ১০ করে। কিন্তু মুখোমুখি দেখায় রাজশাহীর চেয়ে পিছিয়ে থাকায় রংপুর ও বরিশালকে বিদায় নিতে হয়। এখন প্লে-অফে ওঠার ক্ষেত্রে একাধিক দলের পয়েন্ট সমান হলে নেট রান রেট দেখা হয়।
আগামী রবিবার (২৬ জানুয়ারি) থেকে শুরু হবে ঢাকার দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব। এদিন দিনের প্রথম ম্যাচে মুখোমুখি হবে ফরচুন বরিশাল ও সিলেট স্ট্রাইকার্স। দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে দুর্বার রাজশাহী ও রংপুর রাইডার্স। ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে গ্রুপ পর্ব, এলিমিনেটর, কোয়ালিফায়ার ও ফাইনাল ম্যাচ হবে যথাক্রমে ৩, ৫ ও ৭ মার্চ।
(ঢাকাটাইমস/২৫ জানুয়ারি/এনবিডব্লিউ)

মন্তব্য করুন