সুনামগঞ্জে শীতের প্রকোপে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ

তিনদিন ধরে সুনামগঞ্জের প্রতিটি উপজেলা ও সীমান্ত এলাকায় চলছে শীতের দাপট। দিনভর কুয়াশায় আচ্ছাদিত থাকছে চারপাশ। পাশাপাশি হিমেল হাওয়ার কারণে অনুভূত হচ্ছে তীব্র শীত।
অপরদিকে শীতের প্রকোপের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ। ঠান্ডাজনিত এসব রোগে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা। রোগীদের ভিড় বাড়ছে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে। যার কারণে বাড়তি চাপ সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে সংশ্লিষ্টদের। শুধু সদর হাসপাতালেই নয়, জেলা হাওরাঞ্চলের প্রতিটি হাসপাতাল ও উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে সদর উপজেলার নলুয়া গ্রামের ১৪ মাস বয়সী মাহিদা সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় তার মা কল্পনা বেগম তাকে নিয়ে এসেছেন। সে শিশু ওয়ার্ডে আছে। হাসপাতালে আসার পর ডাক্তার জানিয়েছেন ঠান্ডাজনিত কারণে মাহিদার নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। কল্পনা বেগম বলেন, ‘হঠাৎ করে সর্দি লাগছে বাচ্চাটার, কিছুটা জ্বরও আছে, তারপর হাসপাতালে নিয়ে আসি। আসার পর জানতে পারলাম ঠান্ডায় নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দিয়েছে। এখন চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা নিচ্ছি।’
দেড় বছর বয়সী মাহমুদুল হাসানের মা মোছা. সুজনা বেগম জানান, তার ছেলেশিশুটি সর্দি-জ্বরে আক্রান্ত। তাকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সিরাজপুর (বাগগাঁও) থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে এসেছেন জেলা সদর হাসপাতালে।
সুজনা বেগম বলেন, ‘দুই-তিন দিন ধরে ছেলেটার সর্দি-জ্বর হইছে, কিছুটা শ্বাসকষ্টও আছে। প্রাথমিকভাবে এলাকায় চিকিৎসা করাইছি, সর্দি-জ্বর না কমায় এখন সদর হাসপাতালে নিয়ে আসছি। হাসপাতালে আসার পর চিকিৎসক ভর্তি করার কথা বলছেন। ভর্তি করছি কিন্তু কোনো সিট পাইছি না। রোগীর যে ভিড় তাই বাধ্য হয়ে ফ্লোরে থাকা লাগবো মনে হচ্ছে।‘
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের দেয়া তথ্য মতে, হঠাৎ করে ঠান্ডা বেড়ে যাওয়ায় গত তিন দিন ধরে শিশু ওয়ার্ডে অন্তত ২০ থেকে ৩০টি শিশু ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ শিশুই সর্দি-কাশি, জ্বর, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত।চিকিৎসক জানান, হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগ দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। সঠিকভাবে শিশুদের যত্ন নিলেই এই ধরনের সমস্যা দ্রুত কমবে।
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান বলেন, হঠাৎ করে শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় শিশুদের ঠান্ডাজনিত সমস্যা দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ অনেকটা বেড়েছে। তবে বাড়তি চাপের মধ্যেও হাসপাতালের চিকিৎসকরা সার্বক্ষণিক রোগীদের সেবা দিচ্ছেন।
(ঢাকা টাইমস/২৭জানুয়ারি/এসএ)

মন্তব্য করুন