‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’: জামায়াত নেতা আজহারকে ফের আপিলের অনুমতি

একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে ফের আপিলের অনুমতি দিয়েছেন সর্বোচ্চ আদালত। ২২ এপ্রিল এ বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
বুধবার প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ রিভিউ আবেদন গ্রহণ করে এ আদেশ দেন।
এদিন আজহারের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এহসান আবদুল্লাহ সিদ্দিকী। তাকে সহযোগিতা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, ব্যারিস্টার নাজিব মোমেন।
এর আগে মঙ্গলবার আজহারুল ইসলামের রিভিউ আবেদনের প্রথম দিনের শুনানি শেষ হয়।
২০১৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর আজহারকে মৃত্যুদণ্ড দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
মামলায় আনীত দুই নম্বর, তিন নম্বর এবং চার নম্বর অভিযোগে ফাঁসির দণ্ড দেওয়া হয় তাকে। পাঁচ নম্বর অভিযোগে অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণসহ অমানবিক অপরাধের দায়ে ২৫ বছর ও ছয় নম্বর অভিযোগে নির্যাতনের দায়ে পাঁচ বছর কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এটিএম আজহারুল ইসলামের ফাঁসির দণ্ড বহাল রেখে রায় দেন।
আপিল বিভাগের রায়ে ২, ৩, ৪ (সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে) ও ৬ নম্বর অভিযোগের দণ্ড বহাল রাখা হয়। আর ৫ নম্বর অভিযোগ থেকে তাকে খালাস দেওয়া হয়। পরে এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন এই জামায়াত নেতা।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে হত্যা-গণহত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শত শত বাড়িঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ছয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। ২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন আজহার।
১৯৬৮ সালে রংপুর জিলা স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করে পরের বছর আজহারুল ইসলাম ভর্তি হন রংপুর কারামাইকেল কলেজে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় আজহার জামায়াতে ইসলামীর ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্রসংঘের জেলা কমিটির সভাপতি ও আলবদর বাহিনীর রংপুর শাখার কমান্ডার ছিলেন।
১৯৯১ সালে তিনি ঢাকা মহানগর জামায়াতের আমিরের দায়িত্ব পান এবং ২০০৫ সালে কেন্দ্রীয় কমিটির সেক্রেটারি জেনারেল হন।
২০১২ সালের ১৫ এপ্রিল আজহারের যুদ্ধাপরাধের তদন্ত শুরু করেন তদন্ত কর্মকর্তা এস এম ইদ্রিস আলী। ওই বছরের ২২ আগস্ট মগবাজারের বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর থেকে তিনি কারাগারেই আছেন।
(ঢাকাটাইমস/২৬ফেব্রুয়ারি/এফএ)

মন্তব্য করুন