নওগাঁয় ভুট্টার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা

দেশের উত্তর জনপদের খাদ্যশস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁর আত্রাইয়ে এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টা চাষ করা হয়েছে। ভুট্টার বাম্পার ফলনের আশাবাদী কৃষকরা। বিভিন্ন বিল থেকে বন্যার পানি আগাম নেমে যাওয়া, অনুকূল আবহাওয়া ও আধুনিক কৃষি প্রযুক্তিতে কৃষকদের আগ্রহ সৃষ্টি হওয়ায় স্বল্প খরচে যথাসময়ে কৃষকরা এবার ভুট্টার বাম্পার ফলন পাবে বলে অভিজ্ঞ মহল ধারণা করছেন।
উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবারে উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে চার হাজার ৭২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ভুট্টা চাষে উপজেলার কৃষকরা বেশি ঝুঁকে পড়ছে। খরচ কম অথচ ফলন ও দাম বেশি পাওয়ায় কৃষকদের মধ্যে ভুট্টা চাষের আগ্রহ বেশি পরিলক্ষিত হচ্ছে।
উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের কৃষক আজাদ প্রামাণিক বলেন, ‘এলাকার যেসব জমিতে পূর্বে বোরো চাষ করা হতো সেসব জমিতে আমরা এবার ভুট্টা করছি। বোরো চাষে উৎপাদন খরচ অনেক বেশি অথচ যখন ধান কাটা মাড়াই শুরু হয় তখন ধানের বাজারে ধস নামে। ফলে অনেক ক্ষেত্রে উৎপাদন খরচই উঠে না। কিন্তু ভুট্টার উৎপাদন খরচ যেমন কম দামও তেমন বেশি থাকে। এ জন্য আমরা ভুট্টা চাষে এবার ঝুঁকে পড়েছি।’
উপজেলার চৌড়বাড়ি গ্রামের কৃষক আব্দুল জব্বার বলেন, ‘আমাদের এলাকা আলুচাষের জন্য দীর্ঘদিন থেকে বিখ্যাত। উপজেলার সিংহভাগ আলু আমাদের এলাকায় উৎপন্ন হয়ে থাকে। মৌসুমের শেষদিকে আলুর দাম বাড়লেও এর মুনাফা কৃষকরা পায়নি। মুনাফা পেয়েছে মজুদদাররা। তাই এবার ভুট্টা চাষ করছি। আশা করি ফলনও বাম্পার হবে। তবে ন্যায্য দাম পেলে কষ্ট সার্থক হবে।’
উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের শলিয়া ব্লকের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা কেএম মাহাবুব জানান, এবার গত বছরের তুলনায় আমাদের এলাকায় ভুট্টার আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। আশা করছি ভুট্টার বাম্পার ফলন হবে এবং নিয়মিত কৃষকদের পর্যবেক্ষণ পরামর্শ দিয়ে আসছি।
আত্রাই উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদ হাসান বলেন, এলাকার কৃষকরা যাতে ভুট্টা যথাযথভাবে উৎপাদন করতে পারে এবং স্বল্প খরচে উচ্চ ফলনশীল ভুট্টা উৎপাদন করতে পারে এ জন্য আমরা প্রতিনিয়ত কৃষকদের নিকট গিয়ে পরামর্শ প্রদান করছি। বিভিন্ন রোগবালাই থেকে ভুট্টাকে মুক্ত রাখতেও পরিমিত পরিমাণ ওষুধ প্রয়োগের পরামর্শ দিয়ে থাকি।
এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ প্রসেনজিৎ তালুকদার বলেন, সকল প্রকার ফসল উৎপাদনে আমরা কৃষকদের আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করছি। যাতে করে কৃষকরা সহজভাবে কৃষি উপকরণ পায়। বিশেষকরে বীজ, সার ও তেলের জন্য সার্বক্ষণিক মনিটরিং করছি। এবার ভুট্টার ফলন ভালো হয়েছে এবং বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
(ঢাকা টাইমস/১৯এপ্রিল/এসএ)

মন্তব্য করুন