গণতন্ত্র থাকলেও সবার গণতন্ত্র ছিল না: নজরুল ইসলাম খান  

বগুড়া প্রতি‌নি‌ধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ২৩ মে ২০২৫, ২১:৪১| আপডেট : ২৩ মে ২০২৫, ২১:৪২
অ- অ+

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, দেশে উন্নয়ন ছিল, কিন্তু সবার জন্য ছিল না। গণতন্ত্র থাকলেও সবার গণতন্ত্র ছিল না। গত ১৫ বছরে দেশের সকল স্তর ভেঙে ফেলা হয়েছিল। এসব স্তর মেরামতের জন্য ৩১ দফা ঘোষণা করা হয়েছে। সবার সহযোগিতা ছাড়া এটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বগুড়া শহরের পাঁচ তারকা হোটেল মম ইন কনভেনশন হলে ‘কৃষি উন্নয়ন, পরিবেশ রক্ষা ও নাগরিক সমস্যা নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, অনেক দল অনেক কথাই বলবে। তাদের অতীত ইতিহাস দেখে তাদের বিশ্বাস করবেন। এক্ষেত্রে দেশের অধিকতর উন্নয়নের স্বার্থে সবার প্রথমে বিএনপিকে সবাই বেছে নিবে।

সেমিনারে এক শিক্ষার্থীর পাটকল বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে নজরুল ইসলাম বলেন, বিএনপি উৎপাদন ও উন্নয়নে বিশ্বাসী। কোন কিছু বন্ধ করা বিএনপির রাজনীতি নয়। তাই সরকার গঠন করলে বন্ধ হয়ে যাওয়া ২৫টি পাটকল আবারও চালু করতে কাজ করবে বিএনপি। একই সাথে শ্রমিকদের সকল বকেয়াও পরিশোধ করবে।

তিনি বলেন, সবার অংশগ্রহণে সবার ন্যায্য আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে সবার জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বৈষম্যহীন গণমুখী উন্নয়ন মুখী, একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তোলার ইচ্ছা নিয়ে কাজ করছে বিএনপি। সেরকম একটি সমাজ ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা স্বপ্ন আছে বিএনপি। সে লক্ষ্যে ১৫ বছর ধরে ভেঙে ফেলা এদেশের সব রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের সাংবিধানিক, প্রতিষ্ঠান ভেঙে ফেলা হয়েছে, সেই ভেঙে ফেলা প্রতিষ্ঠানগুলি মেরামতের লক্ষ্যে বিএনপি ৩১ দফা কর্মসূচি দিয়েছে। তরুণরা দেশের ইতিবাচক পরিবর্তন ও কল্যাণ চান। প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বলতেন সবার জন্য গণতন্ত্র সবার জন্য উন্নয়ন। কিন্তু আমরা দেখলাম এই দেশেই উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু সবার জন্য হয়নি। তারা বলেছে গণতন্ত্র হয়েছে কিন্তু সবাই সেই গণতন্ত্রের অংশ হতে পারেনি। বিএনপি সবার জন্য উন্নয়ন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়। কৃষকদের জন্য বিএনপি প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই বাংলাদেশে প্রথম জাতীয় বীজ অধ্যাদেশ ১৯৭৭ সালে জারি হয়েছে এবং সেটি করেছেন শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। এই আইনের ফলেই এদেশে কৃষক খোলা বাজারে ভেজাল এবং নিম্নমানের বীজ কেনা থেকে রক্ষা পেয়েছে। সরকারি এবং বেসরকারিভাবে বীজ উৎপাদন বীজ সংরক্ষণ এবং বীজ বিতরণের কাজ শুরু করেছিল। বহুমুখী ফসল উৎপাদনের জন্য বিএনপি সরকার বাংলাদেশ এগ্রিকাল রিচার্জ ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করেছিল। যার মাধ্যমে বাংলাদেশ নতুন নতুন রকম শস্য উৎপাদনে সুযোগ সৃষ্টি হয়েছিল। অর্থাৎ বীজ শস্য উৎপাদনে ক্ষেত্রে বিএনপির অবদান আছে। কৃষি সংস্কার বিএনপির হাত ধরে এসেছে কৃষি উপকরণ উৎপাদন আমদানি এবং বিতরণ সরকারি এবং বেসরকারি পর্যায়ে সেজ, শেষ যন্ত্র এইসব আমদানি এবং বিতরণ বিএনপি সরকারের মাধ্যমে হয়েছে।

এ নেতা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড, বিএডিসি এবং কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে পাশাপাশি বেসরকারি খাত সহযোগিতা করেছিল। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য যা কিছু করার সেটা শহীদ জিয়ার হাতেই হয়েছে। এই উৎপাদন বৃদ্ধি করার জন্য যে সার উৎপাদন সেটা করার জন্য স্বাধীন বাংলাদেশে সরকারের অর্থে সার কারখানার স্থাপন করেছেন বিএনপির সরকার শহীদ জিয়ার আমলে আশুগঞ্জ সার কারখানা। খাদ্য নিরাপত্তার জন্য এবং শস্য সংগ্রহ অভিযান এটাও বিএনপির সময় শুরু হয়। বিএনপির সময় নতুন নতুন খাদ্য গুদাম তৈরি হয়েছিল। সরাসরি ধান এবং চাল কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করা এবং সেগুলো সংরক্ষণ করা। সরকারের সহযোগিতায় রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় বাম্পার ফলন হয়েছে এবং বাংলাদেশ চাল রপ্তানি করতে পেরেছিল।

নজরুল ইসলাম আরোও বলেন, ১৯৮০ সালের দিনাজপুরের গম গবেষণা কেন্দ্র করা হয়েছিল। বাংলাদেশের ইতিহাসে গম উৎপাদনের সবচাইতে বড় অংশ।

পরিবেশে কথা বলতে গিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ের পর উপকূলীয় অঞ্চলে সবুজ বিষ্টনি গড়ার যে প্রকল্প দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নিয়েছিল। এত বড় বনায়ন প্রক্রিয়া স্বাধীন বাংলাদেশ আর হয়নি। পটুয়াখালী, বরগুনা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, নোয়াখালী, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরিশাল, ভোলাকেও এখানে যুক্ত করা হয়েছে। ৩০ লাখ হেক্টর জমিতে বনায়ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছিল। ১৪০০ কিলোমিটার বনায়ন হয়েছিল শুধু উপকূলীয় বাধে, এর পাশাপাশি রেলের অধীনে বিশ কিলোমিটার, সরকারি প্রকৌশল বিভাগের অধীনে ২৮০ কিলোমিটার, রোডস এন্ড হাইওয়ে সড়কের পাশে ৪১০ কিলোমিটার এবং গ্রাম অঞ্চলের ছোট ছোট রাস্তার পাশে চার হাজার কিলোমিটার বনায়ন এই প্রকল্পের আওতায় হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা ড. মাহাদী আমিনের সঞ্চালনায় সেমিনারে আলোচক হিসাবে বক্তব্য দেন চেয়ারম্যান জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও শিক্ষক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ববি হাজ্জাজ, স্ট্র্যাটেজিক এনালিস্ট, সিডনি ওয়াটার, অস্ট্রেলিয়া ড. ফ্যাসাল কবীর শুভ, সাংবাদিক ও গণমাধ্যমকর্মী কাজী জেসিন, আইবিএ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ড. রিদওয়ানুল হক প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা সাবেক মেয়র অ্যাডভোকেট একে এম মাহবুবুর রহমান, সাবেক এমপি মো. হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, পল্লী উন্নয়ন সম্পাদক ফরহাদ হোসেন আজাদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক মন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ শাহিন সওকত, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ওবায়দুল রহমান চন্দন প্রমুখ।

(ঢাকা টাইমস/২৩মে/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
অন্যের বাগানের আম চুরি করল ইউনাইটেড গ্রুপের মালিকরা, থানায় মামলা, গ্রেপ্তার ১
প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক শনিবার
বিএনপি শুধু নির্বাচন নিয়ে কথা বললে বাংলাদেশ আশাহত হয়: সারজিস আলম
দেশের প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠান আজ অস্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে: আমিনুল হক
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা