ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যে ৫০% ও অ্যাপল আইফোনে ২৫% নতুন শুল্কের হুমকি ট্রাম্পের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৪ মে ২০২৫, ১০:৩৮| আপডেট : ২৪ মে ২০২৫, ১১:৪৩
অ- অ+

হোয়াইট হাউসে দ্বিতীয়বার ফিরে আসার পর থেকেই বিশ্বজুড়ে একাধিক দেশের ওপর শুল্ক আরোপ ও হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার মতে, এই পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের উৎপাদন খাতকে চাঙা করবে এবং বিদেশি প্রতিযোগিতা থেকে দেশীয় কর্মসংস্থানকে রক্ষা করবে। এদিকে বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির বাজারে প্রবেশে শুল্ক বেড়ে যাওয়ায় ইউরোপসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) থেকে যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য আমদানিতে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপের ‘সুপারিশ করতে যাচ্ছেন’।

“তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনায় কিছু হচ্ছে না,” শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেওয়া এক পোস্টে তিনি এমনটাই বলেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি।

ইইউ পণ্যে নতুন এ শুল্ক ১ জুন থেকে কার্যকর হতে যাচ্ছে, বলেছেন ট্রাম্প।

তার এ ঘোষণায় ইইউ’র সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য যুদ্ধ আরও বেড়ে যাওয়ার ইঙ্গিত মিলেছে।

যুক্তরাষ্ট্রে ঢোকা পণ্যের জন্য ২৭ ইউরোপীয় দেশের জোটকে এখন ১০ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়।

মার্কিন এ প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্রে বানানো নয় অ্যাপলের এমন আইফোনে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপেরও হুমকি দিয়েছেন।

“অনেক আগেই আমি অ্যাপলের টিম কুককে জানিয়েছিলাম যে, আমি প্রত্যাশা করি তাদের আইফোন যা যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হবে তা যুক্তরাষ্ট্রেই নির্মিত ও সংযোজিত হবে, ভারত বা অন্য কোথাও নয়,” বলেছেন তিনি।

“আর যদি সেটা না হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপলকে অবশ্যই ন্যূনতম ২৫ শতাংশ শুল্ক দিতে হবে,” হুমকি ট্রাম্পের।

দ্বিতীয় মেয়াদে হোয়াইট হাউজে ফেরার পর থেকে ট্রাম্প এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশের ওপর নানা ধরনের শুল্ক আরোপ করেছেন এবং আরও শুল্ক আরোপ করবেন বলে হুমকিও দিয়ে রেখেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রে পণ্য উৎপাদন বাড়ানো এবং কর্মসংস্থান রক্ষার উপায় হিসেবে তিনি কূটনীতির চেয়ে যে শুল্ক যুদ্ধের ওপরই বেশি ভর করছেন, তা তার এসব পদক্ষেপেই বোঝা যাচ্ছে।

ট্রাম্পের হুমকির কয়েক সপ্তাহ আগেই টেক জায়ান্ট অ্যাপল বলেছিল, তারা যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রির লক্ষ্যে পাঠানো আইফোন ও অন্যান্য পণ্যের উৎপাদন চীন থেকে সরিয়ে নিচ্ছে।

অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী টিম কুক চলতি মাসের শুরুতে বলেছিলেন, আগামী মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারের জন্য তৈরি হওয়া বেশিরভাগ আইফোন ভারতে উৎপাদিত হবে, আর ভিয়েতনাম হবে আইপ্যাড ও অ্যাপল ওয়াচের মতো পণ্যের বড় উৎপাদন হাব।

গত মাসে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চীনের ওপর ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের ফলে সরবরাহ-চেইনে উদ্বেগ দেখা দেয়। এতে আইফোনের দাম বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ফলে ভারতকে নিজেদের বিকল্প উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে বেছে নিয়েছে অ্যাপল।

‘অ্যাপ্‌ল’ একটি আমেরিকার বহুজাতিক সংস্থা হলেও তাদের বেশির ভাগ জিনিসই এত দিন ধরে আমেরিকার বাইরেই তৈরি হয়ে এসেছে। সংবাদমাধ্যম সিএনবিসি-এর সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট অনুসারে, ‘অ্যাপ্‌ল’-এর ৮০ শতাংশেরও বেশি জিনিস চীনে তৈরি হয়। ওই মার্কিন বহুজাতিক সংস্থার প্রায় ৮০ শতাংশ আইপ্যাড তৈরি হয় চীনে। অ্যাপ্‌ল যত কম্পিউটার তৈরি করে, তার অর্ধেকেরও বেশি তৈরি হয় চীনে। অ্যাপ্‌ল-এর যত আইফোন রয়েছে, তার প্রায় ২০ শতাংশ বর্তমানে ভারতে তৈরি হয়। ভারতে তৈরি হওয়া আইফোন বেশির ভাগই বিক্রি হয় আমেরিকার বাজারে। তবে ট্রাম্প অনেক দিন ধরেই চাইছেন, ভারতসহ অন্য দেশে জিনিস তৈরি করা বন্ধ করুক অ্যাপ্‌ল। গত এপ্রিলে সে কথা স্পষ্ট করেছিল হোয়াইট হাউস।

বস্তুত, ভারতে নিজেদের জিনিস তৈরি করলে তা অ্যাপ্‌লের জন্যও লাভজনক। ভারতে জিনিস তৈরি করা অ্যাপ্‌লের জন্য তুলনামূলকভাবে কম খরচসাপেক্ষ। সেই কারণে অনেক দিন ধরেই উৎপাদনক্ষেত্রে ভারতমুখী হতে শুরু করেছে অ্যাপ্‌ল। বর্তমান ফক্সকন, টাটা ইলেকট্রনিক্স এবং পেগাট্রন ইন্ডিয়া— এই তিন সংস্থা ভারতে আইফোন উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি তেলেঙ্গানায় এয়ারপড তৈরির জন্যও একটি উৎপাদনকেন্দ্র তৈরি করেছে ফক্সকন।

(ঢাকাটাইমস/২৪ মে/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
আদালত অবমাননার অভিযোগ: নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার জন্য সারজিসকে আইনি নোটিশ
প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করছেন না, রুদ্ধদ্বার বৈঠক শেষে জানালেন পরিকল্পনা উপদেষ্টা
সংস্কার, বিচার, নির্বাচন– এ তিন কঠিন দায়িত্ব নিয়ে কাজ করছি: রিজওয়ানা হাসান
একনেক বৈঠক শেষে রুদ্ধদ্বার বৈঠকে উপদেষ্টারা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা