শুক্রাণু বৃদ্ধি থেকে ওজন কমানো, কুমড়ার বীজ যেন ম্যাজিক

সহজলভ্য সবজি কুমড়া যতটা পুষ্টিগুণ সম্পন্ন ঠিক ততটাই উপকারী কুমড়ার বীজ। ড্রাই ফুড হিসেবে দারুণ একটি খাবার হতে পারে কুমড়ার বীজ।
পুষ্টিবিদরা বলছেন, ‘পাওয়ার হাউস’ মিষ্টি কুমড়ার বিচিতে আছে ভিটামিন বি, ম্যাগনেশিয়াম, প্রোটিন ও আয়রনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সব খাদ্য উপাদান।
সহজলভ্য কুমড়ার বীজ অবশ্যই রাখুন আপনার ডায়েটে। কারণ, এর রয়েছে একাধিক গুণাগুণ। ওজন বাড়ানো থেকে পুরুষদের স্পার্ম বৃদ্ধি, এটি ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
কুমড়োর বীজে রয়েছে ভিটামিন ই এবং জিঙ্ক। যা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফ্রি র্যাডিকেল দ্বারা সৃষ্ট ক্ষতির থেকে শরীরকে রক্ষা করে। জিঙ্ক আমাদের শরীরকে প্রদাহ, অ্যালার্জি থেকে রক্ষা করে।
ডায়াবেটিসের সমস্যাতেও খুব উপকারী কুমড়ার বীজ। এটি ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ। ম্যাগনেসিয়াম রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে সাহায্য করে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভীষণ কার্যকরী।
বিশেষ করে পুরুষরা কুমড়ার বীজ রাখুন ডায়েটে। এই বীজে ভালো পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। যা পুরুষের উর্বরতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি টেস্টোস্টেরনের মাত্রা এবং শুক্রাণুর গুণমান ও পরিমাণও বাড়ায়।
তাই যারা বাবা হওয়ার পরিকল্পনা করছেন, তারা এখন থেকেই কুমড়ার বীজ খাওয়া শুরু করে দিন।
প্রতি ১০০ গ্রাম কুমড়ার বিচিতে প্রায় ৫৬০ ক্যালোরি পাওয়া যায়। নিয়মিত কুমড়ার বিচি খেলে হৃদযন্ত্র ভালো থাকে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে, ওজন কমায়, চুল ও ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
কুমড়ার বীজে রয়েছে আয়রন, ক্যালশিয়াম, বি২, বিটা ক্যারোটিন, ফোলেট থেকে শুরু করে নানা উপকারী উপাদান। এই সব উপাদান থাকায় ওজন দ্রুত কমে। পাশাপাশি শরীর সুস্থ রাখতেও একাধিক ভূমিকা রয়েছে এই সব বীজের। আর তাই রোজ নিয়ম করে কুমড়া বীজ খেতে পারলে খুবই ভাল।
যদি ঘুমের সমস্যায় দীর্ঘদিন ভোগেন তবে কুমড়ার বিচিকে কাজে লাগাতে পারেন। কারণ কুমড়ার বিচিতে আছে সেরোটোনিন। এ উপাদান মানসিক চাপ কমিয়ে ঘুম এনে দিতে পারে নিমিষেই।
ওজন কমাতে দারুণ একটি সবজি হল কুমড়া। রোজ কুমড়া সেদ্ধ করে খেতে পারলে যেমন ভাল তেমনই কুমড়ার বীজও কিন্তু খুব উপকারী। পুষ্টিবিদদরা বলছেন রোজকার ভাতে খান একফালি কুমড়া সিদ্ধ। সেই সঙ্গে নিয়ম করে ব্রেকফাস্টে অতি অবশ্যই খান কুমড়ার বীজ।
কুমড়ার বীজ যেমন ওজন কমায় তেমনই ডায়াবেটিসের রোগীদের জন্যও খুব ভাল। রোজ খেলে সুগার থাকে নিয়ন্ত্রণে। ইনসুলিন রেজিস্ট্যান্সও ঠিক থাকে। সম্প্রতি ৩৪৫ জনের উপর একটি গবেষণা চালানো হয়। তাদের রোজ নিয়ম করে কুমড়ার বীজ দেওয়া হয়। এরপর দেখা যায় প্রত্যেকেরই ওজন কমেছে। সেই সঙ্গে নিয়ন্ত্রণে আছে সুগারও।
ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি অ্যালার্জির সমস্যাও দূর করতে পারে এ বীজ। এ বীজে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় কোষ্ঠকাঠিন্য ও হজমের সমস্যাতে ভালো কাজ করতে পারে এই খাবার।
এতে থাকা ম্যাগনেসিয়াম এবং ফসফরাস হাড়ের গঠন মজবুত রাখতে সাহায্য করে। ভিটামিন ই এবং অন্যান্য অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং বার্ধক্যজনিত সমস্যা কমায়।
নিয়মিত ভাবে চুল পড়ে যাচ্ছে? চুল খসখসে হয়ে যাচ্ছে? এক্ষেত্রেও কিন্তু কাজে লাগানো যেতে পারে এই কুমড়ার বীজকে। কুমড়ার বীজে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি। যা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। এছাড়াও কুমড়ার বীজ গুঁড়ো করে তেলের সঙ্গে মিশিয়ে মাখুন। কাজে আসবে।
বীজে থাকা দস্তা বা জিঙ্ক ইমিউন সিস্টেম মজবুত করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। এর ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং ম্যাগনেসিয়াম রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে যা হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
মিষ্টি কুমড়ার বীজ বা বিচিতে রয়েছে স্বাস্থ্যকর ফ্যাট। এটি শরীরে কোলেস্টেরলের মাত্রা ঠিক রাখে এবং ওজন কমাতে সাহায্য করে।
কুমড়ার বীজকে ড্রাই ফুড করার উপায়
বীজ বা বিচি খেতে কুমড়া থেকে তা আলাদা করে একটি প্লেটে ছিটিয়ে রাখুন। নিয়মিত রোদে শুকাতে দিন। কিংবা চুলার নিচে রাখুন। ঝরঝরে হলে ফ্রাইপ্যানে তেল ব্রাশ করে হালকা ভিজে নিতে পারেন। সকাল এবং বিকালের নাস্তায় কুমড়ার বীজ ড্রাই ফুড হিসেবে দারুণ উপকারী।
(ঢাকাটাইমস/১০ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন