স্বর্ণ এখনই কিনবেন, নাকি আরও কমবে? জেনে নিন বাজারের হালচাল

বিশ্ববাজারে টানা অস্থিরতার পর স্বর্ণের দামে দেখা গেছে সাময়িক স্বস্তি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম বর্তমানে প্রতি গ্রাম ৩৬৯ দিরহামে নেমে এসেছে। কিছুদিন আগেও এই দাম ছিল ৩৭৪ থেকে ৩৭৬ দিরহাম, যা থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, বাজারে একটি মৃদু কমতির ধারা শুরু হয়েছে।
বিশ্ব অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে, যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক উন্নতি ডলারের মান বাড়িয়ে দিয়েছে। আর ইতিহাস বলছে, ডলারের দাম বাড়লে স্বর্ণের দর কিছুটা কমে যায়। বর্তমানে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি আউন্স স্বর্ণের দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩,৩১০ ডলার, যেখানে কিছুদিন আগে তা ছিল ৩,৩৭২ ডলার।
বিশ্লেষকদের মতে, স্বর্ণের দাম এখন ৩,২০০ থেকে ৩,৩০০ ডলারের মধ্যে থাকলে তা স্বাভাবিক ধারা বলেই ধরা হচ্ছে। দুবাইয়ের বাজারে এর মানে প্রতি গ্রাম ২২ ক্যারেট স্বর্ণের দাম ৩৬৯ দিরহামের আশপাশে ঘোরাফেরা করা।
বাজার বিশ্লেষকদের ভবিষ্যদ্বাণী অনুযায়ী, স্বর্ণের দাম সাময়িক স্থির থাকতে পারে। তবে ভবিষ্যতে মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনাই বেশি। এমনকি প্রতি আউন্স ৩,৫০০ ডলার (প্রায় প্রতি গ্রাম ৩৯০ দিরহাম) পর্যন্তও উঠতে পারে। অন্যদিকে, বড় পতন হলেও তা ৩,০০০ ডলার (প্রতি গ্রাম ৩৫৫ দিরহাম)-এর নিচে নামার সম্ভাবনা কম।
গত দুই বছরে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ১২৫ শতাংশ। কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে বিভিন্ন দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর ব্যাপক স্বর্ণ ক্রয় এবং বিনিয়োগকারীদের নিরাপদ সম্পদ হিসেবে স্বর্ণে ঝোঁক।
বিশ্বের শীর্ষ ব্যাংকগুলোর মতে, ২০২৫ সালে গড় দাম হতে পারে ৩,০৬৩ ডলার প্রতি আউন্স। ২০২৬ সালে তা বেড়ে ৩,৩৫০ ডলার পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে দাম তুলনামূলকভাবে স্থিতিশীল এবং অনেকের দৃষ্টিতে এটি একটি "ভালো সুযোগ"। স্বল্পমেয়াদে দামের ওঠানামা থাকলেও, দীর্ঘমেয়াদে স্বর্ণের দাম বাড়ার প্রবণতাই বেশি বলে মনে করা হচ্ছে।
তাই যারা নিরাপদ বিনিয়োগ খুঁজছেন কিংবা ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় করতে চান, তাদের জন্য এখনকার দাম বেশ উপযুক্ত হতে পারে। তবে বাজার বিশ্লেষণ করে সচেতন সিদ্ধান্ত নেওয়াই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
বর্তমান দামে স্বর্ণ কেনা কিছুটা লাভজনক হতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি দীর্ঘমেয়াদে এটি ধরে রাখতে চান। তবে বাজারে চূড়ান্ত ভবিষ্যদ্বাণী করা কঠিন। সুতরাং বিনিয়োগের আগে নিজের আর্থিক লক্ষ্য ও বাজারের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করা জরুরি।
(ঢাকাটাইমস/১১ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন