পুরোনো পদ্ধতিতেই আটকে আছে জবি, রেজাল্ট জানতে ভরসা নোটিশ বোর্ড

রাজধানীর অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) এখনো পরীক্ষার ফলাফল জানার জন্য শিক্ষার্থীদের নির্ভর করতে হয় নোটিশ বোর্ড কিংবা বিভাগীয় অফিসের ওপর। দেশের অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় যখন অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশের সুবিধা চালু করেছে, তখন জবি পুরোনো পদ্ধতিতেই আটকে আছে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রেজাল্ট প্রকাশের পর তা কেবল নোটিশ বোর্ডে টানানো হয় কিংবা সরাসরি বিভাগ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। এতে শুধু সময়ের অপচয়ই হয় না, বরং অনেক ক্ষেত্রে ফলাফল পেতে বিলম্ব ঘটে যা উচ্চশিক্ষা কিংবা চাকরির আবেদনের ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়।
দেশের প্রায় সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে অনলাইন রেজাল্ট সিস্টেম চালু রয়েছে, সেখানে একই সরকারি অর্থায়নে পরিচালিত জবিতে তা না থাকা প্রশ্ন তুলছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। তারা মনে করছেন, এটি শুধুমাত্র অব্যবস্থাপনার চিত্র নয়, বরং শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রশাসনের দায়হীনতারও বহিঃপ্রকাশ। শিক্ষার্থীরা অবিলম্বে এই ন্যায্য দাবি পূরণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োক্যামিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি বিভাগের ১৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী নওশীন নাওয়ার জয়া বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নানামুখী সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে অন্যতম হলো—এখনো আমাদের রেজাল্ট সিস্টেম সম্পূর্ণ ম্যানুয়াল। একজন শিক্ষার্থী হিসেবে আমি মনে করি এটি অত্যন্ত হতাশাজনক। আমরা চাই, অনতিবিলম্বে একটি আধুনিক, ডিজিটাল রেজাল্ট সিস্টেম চালু হোক।”
ব্যবস্থাপনা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফেরদৌস শেখ বলেন, “বর্তমানে দেশের প্রায় সব বিশ্ববিদ্যালয়ই তাদের একাডেমিক কার্যক্রম ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে পরিচালনা করছে। অথচ জবিতে এখনো রেজাল্ট অনলাইনে প্রকাশিত হয় না। এতে আমাদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়।”
ইসলামি স্টাডিজ বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী সিয়াম আন নুফাইস বলেন, “ফলাফল জানতে আমাদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয়। কখনো কখনো একাডেমিক অফিসের বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে শুধু সময় নয়, মানসিক চাপও বেড়ে যায়। এটা শুধু প্রযুক্তিগত দুর্বলতা নয়, বরং শিক্ষার্থীদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার প্রতিচ্ছবি।”
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. মোস্তফা হাসান বলেন, “শিক্ষার্থীদের এই প্রস্তাব যথেষ্ট যৌক্তিক। যদিও এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, তবে তাদের সুবিধার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে পারে। কিছু বিভাগ ইতোমধ্যেই নিজস্বভাবে অনলাইনে রেজাল্ট দিচ্ছে। পরবর্তী সিন্ডিকেট সভায় এ বিষয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করা হবে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মো. শেখ গিয়াস উদ্দিন বলেন, “শিক্ষার্থীরা এখনো নিজ নিজ বিভাগ থেকে রেজাল্ট জেনে নিচ্ছে। অনলাইনে রেজাল্ট প্রকাশের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।”
(ঢাকাটাইমস/১২এপ্রিল/এফএ)

মন্তব্য করুন