গ্যাস সংকট

বন্ধের উপক্রম সাভারের অর্ধশত সিএনজি স্টেশন

ইমতিয়াজ উল ইসলাম, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০১৬, ১৪:৫৫ | প্রকাশিত : ০৬ নভেম্বর ২০১৬, ০৮:১২

দীর্ঘ দিন ধরে তীব্র গ্যাস সংকটের কারণে বন্ধ হতে বসেছে ঢাকা-আরিচা ও নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের দুই পাশের প্রায় অর্ধশত সিএনজি স্টেশন। এসব সিএনজি স্টেশনে গ্যাসের চাপ ন্যূনতম ১৫ পিএসআই থাকার বাধ্যবাধকতা থাকলেও তার সিকিভাগও পাওয়া যায় না। ভোর পাঁচটা থেকে সকাল সাতটা পর্যন্ত গ্যাসের চাপ পাওয়া যায় মাত্র ৩-৪ পিএসআই। আর দিনের বাকি সময় পিএসআই থাকে শূন্য।

দীর্ঘদিন ধরে সংকটের সুরাহা না হওয়ায় নিদারুণ ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন পরিবহন ব্যবসায়ী, সিএনজি স্টেশনের মালিক ও শ্রমিকরা। এতে তাদের মধ্যে দানা বাঁধছে ক্ষোভ।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের আমিনবাজার থেকে ধামরাইয়ের বারবাড়িয়া পর্যন্ত প্রায় ৪০ কিলোমিটার সড়ক, নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের নবীনগর থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত প্রায় ১৫ কিলোমিটার এবং টঙ্গী-আশুলিয়া-ইপিজেড মহাসড়কের বাইপাইল থেকে টঙ্গী পর্যন্ত প্রায় ১৮ কিলোমিটার জুড়ে অর্ধশত সিএনজি স্টেশনে তীব্র গ্যাস সংকট চলছে। তিতাসের সরবরাহ পাইপলাইনে গ্যাস না থাকায় দিন-রাতের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রায় ২০ ঘণ্টাই গ্যাস সংকটে ভুগছে সিএনজি স্টেশনগুলো। সকাল নয়টা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত এই দুটি মহাসড়কের আশপাশে প্রায় শতাধিক সিএনজি স্টেশনে একই চিত্র দেখা গেছে।

পরিবহন শ্রমিকরা জানান, কয়েক মাস ধরে গ্যাস সংকটের কারণে ভোর পাঁচটা থেকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সিএনজি স্টেশনে লাইন দিয়ে অপেক্ষায় থাকতে হয় তাদের। শেষে যেটুকু গ্যাস পাওয়া যায়, তাতে তাদের চলে না। যথেষ্ট গ্যাসের চাপ না থাকায় অল্প পরিমাণ গ্যাস নিয়ে বরং বিপাকে পড়েন তারা।

শ্রমিকরা জানান, আগে যেখানে চার-পাঁচবার ট্রিপ দিতেন, এখন চাহিদামতো গ্যাস না পেয়ে সারা দিনে দুবারের বেশি ট্রিপ দিতে পারছেন না তারা। এতে তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানান পরিবহন শ্রমিকরা।

গ্যাস না পেয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বন্ধ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের টাকসুর এলাকার বসুন্ধরা ন্যাচারাল রিসোর্সেস লিমিটেড নামের সিএনজি স্টেশনটি।

স্টেশনটির ম্যানেজার মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, মাসের পর মাস তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে লিখিত ও মৌখিকভাবে জানানোর পরও গ্যাস সংকটের কোনো সুরাহা হচ্ছে না। ফলে সিএনজি স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন, বিদ্যুৎ বিলসহ নানা অর্থনৈতিক টানাপোড়েনে রয়েছেন তারা। ফলে স্টেশন বন্ধ রাখতে বাধ্য হয়েছেন মালিকপক্ষ। স্টেশন বন্ধ থাকায় পুরো দিন অলস সময় পার করছেন কর্মচারীরা।

নবীনগর সিএনজি স্টেশনের ম্যানেজার মোহাম্মদ সাঈদ জানান, ঈদের আগে থেকেই তাদের পাম্পে গ্যাসের সংকট চলছে। তবে বর্তমানে তা তীব্র আকার ধারণ করেছে। তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে বারবার অবগত করা হলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সাভার আঞ্চলিক তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিপণন শাখার ব্যবস্থাপক মো. সিদ্দিকুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, টাঙ্গাইলের পওলি নদীর তলদেশে থাকা ২০ ইঞ্চি ব্যাসের মূল গ্যাস সরবরাহ পাইপলাইনটি এক মাস আগে ট্রলারের ধাক্কায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরে ওই লাইন থেকে ১২ ইঞ্চি পাইপলাইনের মাধ্যমে সাময়িকভাবে গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এ কারণে সাভার ও মানিকগঞ্জ এলাকায় শুধু সিএনজি স্টেশন নয়, আবাসিক ও শিল্পকারখানাতেও গ্যাস সরবরাহ বিঘিœত হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, নদীর তলদেশে হওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত গ্যাস সরবরাহের পাইপটি মেরামত করতে দেরি হচ্ছে। আরো এক থেকে দেড় মাস সময় লাগতে পারে বলে জানান তিনি।

(ঢাকাটাইমস/৬নভেম্বর/মোআ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বিশেষ প্রতিবেদন বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :