গা ঢাকা দিয়েছেন মামলাকারী বহিষ্কৃত আ.লীগ নেতা

বরিশাল ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ২১ জুলাই ২০১৭, ২২:৪২ | প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০১৭, ২২:০৩

বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃত করে আমন্ত্রণপত্রে ছাপানোর অভিযোগ এনে ইউএনও গাজী তারিক সালমানের বিরুদ্ধে মামলাকারী আওয়ামী লীগ নেতা সৈয়দ ওবায়েদ উল্লাহ সাজু গা ঢাকা দিয়েছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় দল থেকে বহিষ্কারের খবর শোনার পর তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। বাসায় গিয়েও দেখা মেলেনি তার।

অতি উৎসাহী হয়ে ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলা করায় শুক্রবার সন্ধ্যায় তাকে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক সম্পাদকের পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কারের ঘোষণা দেন দলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এরপর থেকেই তার সঙ্গে আর যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

ইউএনওর বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি আলোচনায় আসার পর থেকে গণমাধ্যমে সরব ছিলেন এই আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি মামলার পক্ষে নিজের সাফাই গেয়েছেন গণমাধ্যমে। ইউএনও বঙ্গবন্ধুকে দেখেননি বলেই ছবি বিকৃতি করার ‘দুঃসাহস’ দেখিয়েছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তবে বহিষ্কারের খবর পাওয়ার পর থেকে গা ঢাকা দেন তিনি। ফোনে তাকে পাওয়া যাচ্ছে না। গণমাধ্যম কর্মীরা তার বাসায় গিয়েও তাকে পাননি।

তার ঘনিষ্ঠ কয়েকজন জানান, বিষয়টি নিয়ে তিনি এতটা বেকায়দার পড়বেন ভাবেননি। মামলা করে আলোচনায় আসতে চেয়েছিলেন। হয়েছে হিতে বিপরীত। এখন বিষয়টি কীভাবে সামাল দেয়া যায় এটা নিয়ে তদবিরের জন্য হয়তো কোথাও ছুটছেন। এ কারণেই তাকে পাওয়া যাচ্ছে না।

এছাড়া সূত্র জানায়, সাংবাদিকদের প্রশ্নে বিব্রত হতে পারেন এমন আশঙ্কা থেকেই তিনি গা ঢাকা দিয়ে আছেন।

বরগুনায় বদলি হওয়ার আগে ইউএনও সালমান দায়িত্ব পালন করেন বরিশালের আগৈলঝাড়ায়। সেখানের একটি ঘটনাতে মামলা হয় তার বিরুদ্ধে। গত বুধবার সকালে এই মামলায় শুরুতে তার জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠান বিচারক। পরে অবশ্য আদেশ পাল্টে জামিন দেয়া হয়।

গত ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন ও জাতীয় শিশু দিবসে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শিরোনামে সেখানে এক চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয় আগৈলঝাড়ার এস এম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে।

এই প্রতিযোগিতার প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী দুটি ছবির জন্য তাদেরকে পুরস্কৃত করা হয়। আর ২৬ মার্চ স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপনে উপজেলা প্রশাসনের আমন্ত্রণপত্রে ছবি দুটি ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে প্রথম স্থান পাওয়া জ্যোতি মন্ডলের ছবিটি আমন্ত্রণপত্রের কভারে এবং দ্বিতীয় স্থান পাওয়া অদ্রিজা করের ছবিটি ব্যবহার করা হয় আমন্ত্রণপত্রের পেছনের পাতায়।

পেছনের পাতায় ছাপা হওয়া ছবিটির জন্যই ইউএনও গাজী তারিক সালমানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ছবি বিকৃতের অভিযোগে মামলা করেন আওয়ামী লীগ নেতা ওবায়দুল্লাহ সাজু।

এই ঘটনা প্রকাশ হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া ছড়িয়ে পড়ে। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যেও অসন্তোষ দানা বাঁধে। খোদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও এই মামলায় বিস্ময় এবং অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন তার উপদেষ্টা এইচটি ইমাম।

এই পরিস্থিতিতে মামলা প্রত্যাহারের চিন্তা শুরু হয়। বিষয়টি নিয়ে সাজু বরিশাল আইনজীবী সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনাও শুরু করেন। তবে তার সুনির্দিষ্ট কোনো ঘোষণা আসার আগেই কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয়।

(ঢাকাটাইমস/২১জুলাই/টিটি/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :